এশিয়া কাপ জিতে উচ্ছ্বাস শ্রীলঙ্কার ক্রিকেটারদের। ছবি: পিটিআই
আবার এশিয়ার ক্রিকেটের মসনদে শ্রীলঙ্কা। দুবাইয়ে ফাইনালে পাকিস্তানকে ২৩ রানে হারিয়ে ষষ্ঠ বারের জন্য এশিয়া কাপ জিতল তারা। প্রথমে ব্যাট করতে নেমে পাকিস্তানের পেসারদের সামনে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা। টপ অর্ডার ব্যর্থ হলেও মাঝের ওভারে ভানুকা রাজাপক্ষ ও ওয়ানিন্দু হাসরঙ্গ ইনিংসের হাল ধরেন। রাজাপক্ষের অর্ধশতরানে ১৭০ রান করে শ্রীলঙ্কা। পরে প্রমোদ মদুশন ও হাসরঙ্গের দাপটে পাকিস্তানকে ১৪৭ রানে আটকে রাখে তারা। মদুশন এক ওভারে দুই ও হাসরঙ্গ এক ওভারে তিন উইকেট নেন।
ফাইনালের গুরুত্বপূর্ণ টসে জেতেন বাবর। চোখ বন্ধ করে প্রথমে বল করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর সিদ্ধান্ত যে ঠিক সেটা প্রথম ওভারেই প্রমাণ করে দেন নাসিম শাহ। উইকেটে পড়ে তাঁর ভিতরের দিকে ঢুকে আসা বলে শূন্য রানে আউট হন কুশল মেন্ডিস। রান পাননি পাথুম নিসঙ্ক, দানুষ্ক গুণতিলকাও। দু’জনকেই আউট করেন হ্যারিস রউফ। তার মধ্যে গুণতিলকাকে তিনি যে বলে বোল্ড করেন তাকে এ বারের এশিয়া কাপের সেরা বল বলা যেতে পারে। পাওয়ার প্লে-র মধ্যে তিন উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় শ্রীলঙ্কা।
রানের গতি বাড়ানোর জন্য ধনঞ্জয় ডি’সিলভাকে তিন নম্বরে ব্যাট করতে পাঠানো হয়। শুরু থেকেই আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করেন তিনি। কিন্তু অন্য দিকে উইকেট পড়ছিল। ২৮ রান করে আউট হয়ে যান ডি’সিলভা। দলের ৫৮ রানের মাথায় অধিনায়ক দাসুন শনাকা আউট হয়ে গেলে ম্যাচের রাশ পুরো চলে যায় পাকিস্তানের হাতে। দেখে মনে হচ্ছিল, ১০০ রানও করতে সমস্যা হবে শ্রীলঙ্কার।
কিন্তু তখনও খেলার অনেক বাকি ছিল। হাসরঙ্গের সঙ্গে জুটি বাঁধেন রাজাপক্ষ। দু’জনে মিলে দলের রানকে এগিয়ে নিয়ে যেতে থাকেন। প্রায় প্রতি ওভারে বড় শট খেলছিলেন তাঁরা। মাঠের চার দিকে রান আসছিল। দু’জনের মধ্যে ৫৮ রানের জুটি হয়। হারসঙ্গ ৩৬ রান করে আউট হয়ে গেলেও রাজাপক্ষ টিকে থাকেন। ৩৫ বলে অর্ধশতরান করেন তিনি। শেষ পর্যন্ত ৪৫ বলে ৭১ রান করে অপরাজিত থাকেন রাজাপক্ষ। শ্রীলঙ্কার ইনিংস শেষ হয় ১৭০ রানে।
জবাবে পাকিস্তানের ইনিংসের প্রথমেই নাটক। কোনও বল না করেই ৯ রান দিয়ে দেন মদুশঙ্ক। একের পর এক বল ওয়াইড এবং নো করেন তিনি। প্রথম ওভারে ওঠে ১২ রান। কিন্তু তৃতীয় ওভারে ম্যাচে ফেরে শ্রীলঙ্কা। পর পর দু’বলে বাবর আজম ও ফখর জামানকে আউট করেন প্রমোদ মদুশন। বাবর পাঁচ রান করেন। এ বারের এশিয়া কাপে রান পেলেন না পাকিস্তানের অধিনায়ক। ফখর করেন শূন্য রান। দু’উইকেট পড়ে যাওয়ায় রানের গতি কমে যায় পাকিস্তানের।
দু’উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে জুটি বাঁধেন মহম্মদ রিজওয়ান ও ইফতিকার আহমেদ। রানের গতি কম হলেও উইকেট দিয়ে আসেননি তাঁরা। ধীরে ধীরে হাত খোলা শুরু করেন ইফতিকার। রিজওয়ান খুচরো রানে ভর করে খেললেও বড় শট মারছিলেন ইফতিকার। হাসরঙ্গকে এক ওভারে একটি ছক্কা ও দু’টি চার মারেন তিনি। প্রতি ওভারে জরুরি রানরেট বাড়ছিল। বড় শট খেলা ছাড়া উপায় ছিল না পাকিস্তানের। মদুশনের বলে ছক্কা মারতে গিয়ে ৩২ রানের মাথায় আউট হন ইফতিকার।
এক দিকে টিকে ছিলেন রিজওয়ান। আরও একটি অর্ধশতরান করেন তিনি। তাঁর কাঁধেই ছিল দলকে টেনে নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব। কিন্তু ৫৫ রানের মাথায় হাসরঙ্গকে ছক্কা মারতে গিয়ে আউট হন তিনি। ওই একই ওভারে আসিফ আলিকে শূন্য রানে বোল্ড করেন হাসরঙ্গ। সেখানেই শেষ হয়নি। ওই ওভারেই আউট হন খুশদিলও।
সাত উইকেট পড়ে যাওয়ার পরে আর ম্যাচে ফিরতে পারেনি পাকিস্তান। শেষ পর্যন্ত ১৪৭ রানে শেষ হয় তাদের ইনিংস। শ্রীলঙ্কার হয়ে মদুশন চার ও হাসরঙ্গ তিন উইকেট নেন।