শতরানের পর খোয়াজা। ছবি রয়টার্স
ট্রাভিস হেডের করোনা না হলে এই টেস্টে তাঁর খেলার কথাই ছিল না। কিন্তু সুযোগ পেয়েই সেটাকে দুর্দান্ত ভাবে কাজে লাগালেন উসমান খোয়াজা। দু’বছর পর জাতীয় দলে ফিরে সিডনিতে ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধে শতরান করে মুখের উপর জবাব দিলেন সমালোচকদের। টেস্ট দলে জায়গা পাওয়ার আগেই বলেছিলেন, সুযোগ পেলে শতরান করে নিজেকে প্রমাণ করতে চান। সেটাই করলেন পাকিস্তানের ইসলামাবাদে জন্ম হওয়া এই ব্যাটার। ২৬০ বলে ১৩৭ রান করলেন তিনি।
১১ বছর আগে এই সিডনিতেই জীবনের প্রথম টেস্ট খেলতে নেমেছিলেন খোয়াজা। সে বারও প্রেক্ষাপট ছিল অনেকটা এখনকার মতোই। রিকি পন্টিং চোট পেয়ে ছিটকে গিয়েছিলেন। তাঁর জায়গায় সুযোগ দেওয়া হয়েছিল খোয়াজাকে। তবে একই সঙ্গে ইতিহাসের পাতায় নামও লিখিয়ে ফেলেছিলেন। পাকিস্তান বংশোদ্ভূত প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ব্যাগি গ্রিন পরে খেলতে নেমেছিলেন তিনি।
এরপর দলে ঢোকা এবং বাদ যাওয়ার পর্ব চলেছে বেশ কয়েক বার। মাঝে এক বার ইংল্যান্ডের বিরুদ্ধেই ২০১৮ সালে এই সিডনিতেই অপরাজিত ১৭১ রানের ইনিংস খেলেন। কিন্তু সে বারের অ্যাশেজের পর থেকে আর জাতীয় দলে জায়গা পাচ্ছিলেন না। ধরেই নেওয়া হয়েছিল তাঁর ক্রিকেটজীবন শেষ। মাঝে ‘দ্য টেস্ট’ নামে তথ্যচিত্র মুক্তি পাওয়ার পর আরওই ক্রিকেটজীবন অনিশ্চিত হয়ে যায়। সেখানে খোলাখুলি কোচ জাস্টিন ল্যাঙ্গারের কোচিং পদ্ধতির বিরোধিতা করেছিলেন তিনি। সরাসরি বলেছিলেন, ল্যাঙ্গারকে দেখে দলের ক্রিকেটাররা ভয় পান।
Khawaja brings up the ton with a flick through the leg side!
— cricket.com.au (@cricketcomau) January 6, 2022
And a little nod to LeBron with the celebration! #Ashes pic.twitter.com/7oisT1vAWj
ল্যাঙ্গার অবশ্য কিছু মনে করেননি। বরং খোয়াজার সাহসীকতার প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু দলে ডাকেননি। অনেক দিন পর গত বছর নিজের ইউটিউব চ্যানেলে ল্যাঙ্গারের কোচিংয়ের প্রশংসা করেন খোয়াজা। তাতেও ফল মেলেনি। এ বারও অ্যাশেজের আগে দলে মার্কাস হ্যারিস এবং হেডের জায়গা নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় মনে করা হয়েছিল, খোয়াজার ৪৪ টেস্টের ক্রিকেটজীবনের এখানেই ইতি পড়তে চলেছে।
তা হয়নি। ঘরোয়া ক্রিকেটে দুরন্ত খেলেই অ্যাশেজের দলে জায়গা করে নিয়েছেন খোয়াজা। অক্টোবরে শেফিল্ড শিল্ডে পাঁচটি ম্যাচে ৪৬০ রান করেছিলেন। টানা দু’টি ম্যাচে শতরান করেন। ব্রিসবেনে প্রথম টেস্টেও তাঁর নাম বিবেচিত হয়েছিল। কিন্তু নির্বাচকরা হেডের খেলার পক্ষেই রায় দেন। সেই টেস্টে শতরান করে নিজের জায়গাও পাকা করে নেন হেড। কিন্তু আচমকা করোনা সংক্রমণ খোয়াজার সামনে নতুন দরজা খুলে দেয়। সেই সুযোগ নিয়েই নিজেকে আবারও প্রতিষ্ঠা করলেন খোয়াজা। সেই সিডনিতেই।