Brij Bhushan Sharan Singh

বজরং, বিনেশদের জন্যই নিলম্বিত হয়েছে ভারতীয় কুস্তি, ক্ষোভ অপসারিত সভাপতি ব্রিজভূষণের

ভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে নিলম্বিত করেছে বিশ্ব কুস্তি সংস্থা। এর শাস্তির দায় বজরং পুনিয়া, বিনেশ ফোগট, সাক্ষী মালিকদের উপর চাপিয়েছেন কুস্তি সংস্থার অপসারিত সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২৭ অগস্ট ২০২৩ ১৬:৫৮
Brij Bhushan Sharan Singh

ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। —ফাইল চিত্র

সময়ের মধ্যে নির্বাচন না হওয়ায় ভারতীয় কুস্তি সংস্থাকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য নিলম্বিত করেছে বিশ্ব কুস্তি সংস্থা। ফলে বিশ্ব কুস্তি সংস্থা আয়োজিত কোনও প্রতিযোগিতায় ভারতের পতাকা নিয়ে নামতে পারবেন না কুস্তিগিরেরা। এশিয়ান গেমসের আগে এই শাস্তির দায় বজরং পুনিয়া, বিনেশ ফোগট, সাক্ষী মালিকদের উপর চাপিয়েছেন কুস্তি সংস্থার অপসারিত সভাপতি ব্রিজভূষণ শরণ সিংহ। এই কুস্তিগিরেরা যৌন হেনস্থায় অভিযুক্ত ব্রিজভূষণের গ্রেফতারির দাবিতে আন্দোলন করছিলেন। তাঁদের আন্দোলনের জন্যই সময়ে নির্বাচন করা যায়নি বলে দাবি ব্রিজভূষণের।

Advertisement

একটি সাংবাদিক বৈঠকে ব্রিজভূষণ বলেন, ‘‘কুস্তি সংস্থার নির্বাচন সময়ে না হওয়ায় নিলম্বিত হতে হয়েছে। আমি চেষ্টা করেছিলাম ঠিক সময়ে যাতে নির্বাচন হয়। কিন্তু বজরং, বিনেশ, সাক্ষীদের মতো কুস্তিগিরের অভিযোগে কেন্দ্র আমাকে সরে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। আমি সেটাই করেছি। কিন্তু তার পরেও নির্বাচন হয়নি।’’

ব্রিজভূষণের দাবি, কুস্তিগিরদের সব দাবিদাওয়া মেনে নেওয়ার পরেও সময়ে নির্বাচন করা যায়নি। তিনি বলেন, ‘‘কয়েক জন কুস্তিগির চায়নি আমাদের পরিবার থেকে কেউ কুস্তি সংস্থার নির্বাচনে দাঁড়াক। সেই দাবিও মেনে নিয়েছি। তার পরেও নির্বাচন হয়নি। গত আট মাস ধরে সব বন্ধ হয়ে আছে। এশিয়ান গেমসের জন্য কোনও শিবির করা যায়নি। সামনে বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ ও অলিম্পিক্স আসছে। তারও শিবির হয়নি। এই সব কিছুর জন্য দাবি বজরং, বিনেশ ও সাক্ষী।’’

গত ২৭ এপ্রিল ভারতীয় অলিম্পিক্স সংস্থা (আইওএ) জাতীয় কুস্তির নির্বাচনের লক্ষ্যে একটি অ্যাড-হক প্যানেল তৈরি করে দিয়েছিল। গঠন হওয়ার ৪৫ দিনের মধ্যে নির্বাচন করতে হত। বিশ্ব কুস্তি সংস্থার তরফেও হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়েছিল যে নির্বাচন না হলে ভারতের কুস্তি সংস্থাকে নির্বাসিত করা হবে। সেটাই হল। বুধবার রাতেই নাকি অ্যাড-হক প্যানেলকে নির্বাসনের ব্যাপারে জানিয়ে দেওয়া হয়।

ভারতীয় কুস্তি সংস্থা এই মুহূর্তে ভেঙে দেওয়া হয়েছে। তার দায়িত্বে রয়েছে অ্যাড-হক প্যানেল। অপসারিত সভাপতি ব্রিজভূষণ কুস্তিগিরদের শারীরিক নির্যাতনে অভিযুক্ত হওয়ার পরেই আগের কমিটি ভেঙে দেওয়া হয়। একাধিক বার নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হলেও কোনও না কোনও আদালতের নির্দেশে বার বার নির্বাচন পিছিয়ে গিয়েছে। ১২ অগস্ট নির্বাচন হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু সেটিও পিছিয়ে যায় পঞ্জাব এবং হরিয়ানা হাইকোর্টের নির্দেশে।

সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের নির্বাচনের রিটার্নিং অফিসারের একটি সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে হাই কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিলেন হরিয়ানা কুস্তি অ্যাসোসিয়েশনের সচিব ইন্দ্রজিৎ সিংহ। তাঁর দাবি ছিল, তাঁদের আপত্তি অগ্রাহ্য করে রিটার্নিং অফিসার হরিয়ানা অ্যামেচার কুস্তি অ্যাসোসিয়েশনকে ইলেক্টোরাল কলেজে অন্তর্ভুক্ত করেছেন। এ ভাবে কোনও সংস্থাকে সদস্যপদ বা ভোটাধিকার দেওয়া যায় না। কোনও ক্রীড়া সংস্থা সদস্যপদ পাবে কি না, তা ঠিক হতে পারে শুধু সর্বভারতীয় সংস্থার সাধারণ সভায়। তা ছাড়া হরিয়ানা অ্যামেচার কুস্তি অ্যাসোসিয়েশন কখনও হরিয়ানা অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যও নয়। সর্বভারতীয় অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের নিয়ম অনুযায়ী, রাজ্য অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের স্বীকৃত নয় এমন কোনও ক্রীড়া সংস্থা সেই খেলার সর্বভারতীয় সংস্থার সদস্য পদ পেতে পারে না। সেই নিয়মে হরিয়ানা অ্যামেচার কুস্তি অ্যাসোসিয়েশন সর্বভারতীয় কুস্তি সংস্থার সদস্য হতে পারে না। পেতে পারে না ভোটাধিকারও। এই মামলার ফয়সালা না হওয়া পর্যন্ত নির্বাচন করা যাবে না বলে জানিয়েছিলেন পঞ্জাব ও হরিয়ানা হাই কোর্টের বিচারপতি বিনোদ এস ভরদ্বাজ।

ব্রিজভূষণ নির্বাচন নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ উঠেছিল। বিভিন্ন পদের জন্য তাঁর ১৮ জন ঘনিষ্ঠ প্রার্থী হয়েছেন বলে অভিযোগ। ১২ বছর ধরে সর্বভারতীয় কুস্তি ফেডারেশনের সভাপতি পদে রয়েছেন ব্রিজভূষণ। জাতীয় ক্রীড়া নীতি অনুযায়ী তিনি নিজে এ বার প্রার্থী হতে পারেননি। তবে সভাপতি পদে সঞ্জয় কুমার সিংহ-সহ একাধিক ঘনিষ্ঠ কর্তাকে প্রার্থী করেছেন।

আরও পড়ুন
Advertisement