লক্ষ্য: এশিয়ান গেমস স্মরণীয় করতে চান (বাঁ দিক থেকে) শ্রীকান্ত, সবিতা ও দীপিকা (ডান দিকে)। ছবি: ফাইল চিত্র এবং টুইটার।
এশিয়ান গেমসে এখনও সাফল্য ধরা দেয়নি তাঁর হাতে। ২০১৪ এবং ২০১৮ সালের প্রতিযোগিতায় যথাক্রমে প্রি-কোয়ার্টার ফাইনাল এবং প্রথম রাউন্ড থেকেই বিদায় নিতে হয়েছিল। বিশ্বের প্রাক্তন এক নম্বর ব্যাডমিন্টন তারকা কিদম্বি শ্রীকান্ত আসন্ন এশিয়ান গেমসে সাফল্য পাওয়ার ব্যাপারে মরিয়া।
নির্বাচনী ট্রায়ালে শীর্ষ স্থানে শেষ করা ৩০ বছরের শ্রীকান্ত তাঁর সুযোগ কাজে লাগানোর ব্যাপারে মরিয়া। শুক্রবার তিনি সংবাদ সংস্থা পিটিআইকে বলেছেন, “এশিয়ান গেমসে আমার স্মরণীয় স্মৃতি নেই। শেষ দু’বছর ব্যক্তিগত বিভাগে আমি উল্লেখযোগ্য কিছু করতে পারিনি। এ বছর যদি ভাল খেলতে পারি, তবে পদকের আশা করতেই পারি।”
কমনওয়েলথ গেমস এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে পদক পেলেও এশিয়ান গেমস এবং অলিম্পিক্স তাঁকে ফিরিয়েছে খালি হাতে। সেই প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, “আমি অলিম্পিক্স এবং এশিয়ান গেমস বাদে অন্যান্য বড় প্রতিযোগিতায় পদক পেয়েছি। এই দুটি প্রতিযোগিতা চার বছর অন্তর হয়। তাই এটা আমার কাছে সেরা সুযোগ, সময়কে সঠিক ভাবে কাজে লাগিয়ে নিজের সেরাটা দেওয়া।” নিজের উপরে কি চাপ অনুভব করছেন? শ্রীকান্তের জবাব, “আমি নিজের প্রস্তুতির উপরে বেশি জোর দিচ্ছি। আমার লক্ষ্য সুযোগের সদ্ব্যবহার করে ভাল
ফলাফল করা।”
তবে এশিয়ান গেমসে ভাল ফল করতে মরিয়া শ্রীকান্ত, এ কথা বারবার প্রতিফলিত হয়েছে। তাঁর কথায়, “প্রত্যেক বছর আমরা ১০-১৫ টি প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করি। কিন্তু এশিয়ান গেমস চার বছর অন্তর হয়, আপনাকে যোগ্যতা অর্জন করে দলে প্রবেশ করতে হয়। এটা ব্যাডমিন্টনের অন্যতম কঠিন প্রতিযোগিতা। পদক পেতে হলে আপনাকে নিজের সেরা ছন্দে থাকতে হবে।”
গত বছরে টমাস কাপ জেতা ভারতীয় দলের সদস্য ছিলেন গুন্টুরের তারকা। তার পরে থেকে সেরকম ছন্দে পাওয়া যায়নি তাঁকে। সেই প্রসঙ্গে বলেছেন, “আমি ধারাবাহিকতার অভাবে ভুগেছি। হয়ত সব প্রতিযোগিতায় আমি ভাল খেলতে পারিনি, কিন্তু যে গুলিতে ভাল পারফরম্যান্স করেছি, যদি ধারাবাহিকতা রাখতে পারতাম, সেগুলিতে জিতেও যেতাম।”
তবে তাঁর লক্ষ্য কী? শ্রীকান্ত বলছেন, “আমি ভালভাবে প্রস্তুতি নিচ্ছি। শারীরিক ভাবে ফিট থাকার পাশাপাশি মানসিক ভাবেও নিজেকে শক্তিশালী রাখছি। প্রতি দিনের অনুশীলনে নিজের ভুলগুলো শুধরে নিচ্ছি, যাতে প্রতিযোগিতায় তা প্রতিফলিত না হয়।”
অবশ্য এশিয়ান গেমসের আগে পুল্লেলা গোপীচন্দের থেকেও পরামর্শ নিচ্ছেন তিনি। “আমি গোপী ভাইয়ের থেকেও প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিচ্ছি। সে গুলি ম্যাচে কাজেও লাগাচ্ছি।”
অন্য দিকে ভারতীয় হকি দলের গোলরক্ষক সবিতা পুনিয়া জানাচ্ছেন আসন্ন এশিয়ান গেমস এবং প্যারিস অলিম্পিক্সের পরেই তিনি মধুচন্দ্রিমায় যাবেন। তাঁর কথায়, “বিয়ের পাঁচ দিন পরেই আমি জাতীয় শিবিরে যোগ দিয়েছি। পরের বছর অলিম্পিক্সের পরেই আমরা মধুচন্দ্রিমার সফর ঠিক করব।”
তবে তাঁর স্বামী অঙ্কিত বলহারা থাকেন কানাডায়। দুই দেশের সময়ের অনেকখানি পার্থক্য থাকায় সবিতা তাঁর স্বামীর সঙ্গে অনেক কথাই আদান প্রদান পরতে পারেন না। সেই প্রসঙ্গে বলেন, “অনুশীলনের জন্য আমাকে ভোরে উঠতে হয়। আমার স্বামী কানাডায় থাকেন বলে সময়ের পার্থক্য অনেকটাই। ফলে নিজের বক্তব্যগুলি আদান প্রদান করতে পারি না।”
তবে বর্তমানে এশিয়ান গেমস এবং অলিম্পিক্স ছাড়া তিনি কিছুই ভাবছেন না। তাঁর কথায়, “টোকিয়ো অলিম্পিক্সে চতুর্থ স্থানে শেষ করার পরে আমাদের ঘিরে অনেক প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে। আমরা অলিম্পিক্স এবং এশিয়ান গেমসে পদক জয় ছাড়া কিছুই ভাবছি না।”
এর আগে সবিতা একটি ব্রোঞ্জ এবং একটি রুপোর স্বাদ পেয়েছেন। কিন্তু এ বছরে সোনা ছাড়া কিছুই ভাবছেন না তিনি। তিনি বলেছেন, “আমি এখনও খেলা উপভোগ করছি। যতক্ষণ পর্যন্ত দলকে একশো শতাংশ দিতে পারছি, আমি খেলা চালিয়ে যাব। ব্রোঞ্জ এবং রুপো পেলেও আমি চলতি বছরে আমার ঝুলিতে সোনার পদক দেখতে চাই।”
স্কোয়াশে ভারতের প্রতিনিধি হিসেবে দেখা যাবে দীপিকা পাল্লিকলকে। তিনি জানাচ্ছেন প্রাক্তন শীর্ষ স্থানাধিকারী জেমস উইলস্ট্রপ এবং প্রাক্তন বিশ্বচ্যাম্পিয়ন গ্রেগোরি গলতিয়ারের সঙ্গে অনুশীলন তাঁদের দলকে অনেকটাই সুবিধা দেবে। ৩১ বছরের দীপিকা তিন বার ব্রোঞ্জ এবং এক বার রুপো জিতলেও সোনা জেতার স্বাদ পেতে মরিয়া। তাঁর কথায়, “কোনও চাপ অনুভব করছি না। আমার কেরিয়ারের দীর্ঘ যাত্রাপথ অতিক্রম করে এসেছি।”
প্রস্তুতি কীরকম চলছে? তাঁর বক্তব্য, “প্রতিযোগিতার আগে এখনও পর্যাপ্ত সময় রয়েছে। সুতরাং আমরা প্রস্তুতি চালিয়ে যাচ্ছি। কঠিন অনুশীলন করছি যাতে সাফল্য পেতে পারি।”