মঙ্গলপৃষ্ঠের এই ছবিই পাঠিয়েছে নাসার ‘পারসিভের্যান্স’। ছবি: রয়টার্স।
প্রায় ৭ মাস ধরে মহাকাশে চক্কর কাটার পর মঙ্গলের মাটি ছুঁল আমেরিকার মহাকাশ গবেষণা সংস্থা নাসার সর্বাধুনিক ল্যান্ডার ও রোভার ‘পারসিভের্যান্স’। ভারতীয় সময় অনুযায়ী বৃহস্পতিবার রাত আড়াইটে নাগাদ মঙ্গলের মাটিতে নামে মহাকাশযানটি। কোনও কালে লাল গ্রহে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কি না, তা খুঁজে বার করাই কাজ সেটির। তার জন্য আগামী কয়েক বছর লাল গ্রহের মাটি খুঁড়ে পাথর, জীবাশ্ম, মাটি ইত্যাদির নমুনা সংগ্রহ করে ফিরে আসবে। ২০৩০ নাগাদ সেগুলি পৃথিবীতে গবেষণার জন্য এসে পৌঁছবে বলে আশাবাদী নাসার বিজ্ঞানীরা। ইতিমধ্যেই মঙ্গলপৃষ্ঠের ছবি পাঠিয়েছে রোভার।
নাসার এই অভিযানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় ছিলেন ভারতীয় স্বাতী মোহন। ‘পারসিভের্যান্স’-এর গাইডেন্স, নেভিগেশন ও কন্ট্রোলস অপারেশন্স (জিএনঅ্যান্ডসি)-এর প্রধান তিনি। স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে ‘পারসিভের্যান্স’ নিরাপদে মঙ্গলের মাটি ছুঁয়েছে, তা প্যাসাডেনায় নাসার জেট প্রপালসন ল্যাবরেটরি থেকে তিনিই নিশ্চিত করেন। সঙ্গে সঙ্গে করতালিতে একে অপরকে অভিনন্দন জানান সেখানে কর্মরত সকলে।
যদিও নাসার ঘোষণার প্রায় ১১ মিনিট আগেই মঙ্গলে অবতরণ ঘটে মহাকাশযানটির। কারণ মঙ্গল থেকে পৃথিবীতে রেডিয়ো সিগন্যাল এসে পৌঁছতে ১১ মিনিট সময় লাগে। পরে নেটমাধ্যমে অ্যানিমেশন ভিডিয়োর মাধ্যমে অবতরণের প্রক্রিয়া সামনে আনে নাসা। এ ছাড়াও মঙ্গলের জেজেরো গহ্বর থেকে ‘পারসিভের্যান্স’-এর তোলা একটি প্রথম সাদা-কালো ছবিও প্রকাশ করেন নাসার অ্যাসোসিয়েট অ্যাডমিনিস্ট্রেটর টমাস জুরবুচেন।
Here goes! Lighting the engines on my “jetpack” for final descent. Wheels down in less than a minute.#CountdownToMars pic.twitter.com/AQKPEBGr0o
— NASA's Perseverance Mars Rover (@NASAPersevere) February 18, 2021
Radar locked and cameras on. Looking for a safe spot for touchdown. About to cut free from a perfectly good parachute. I’m all in.#CountdownToMars pic.twitter.com/Eilc5Zq3ZW
— NASA's Perseverance Mars Rover (@NASAPersevere) February 18, 2021
মঙ্গলের মাটিতে ‘পারসিভের্যান্স’-এর এই ঐতিহাসিক অবতরণের পর নাসাকে অভিনন্দন জানান আমেরিকার প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘নাসা এবং সেই সমস্ত মানুষ যাঁরা পারসিভের্যান্স-এর এই ঐতিহাসিক অভিযানকে সফল করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করে গিয়েছেন, তাঁদের সকলকে অভিনন্দন। আজ ফের এক বার প্রমাণ হয়ে গেল যে বিজ্ঞান এবং আমেরিকার উদ্ভাবনী শক্তিকে কাজে লাগাতে পারলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়’।
Congratulations to NASA and everyone whose hard work made Perseverance’s historic landing possible. Today proved once again that with the power of science and American ingenuity, nothing is beyond the realm of possibility. pic.twitter.com/NzSxW6nw4k
— President Biden (@POTUS) February 18, 2021
১৯৬৫ থেকে এখনও পর্যন্ত মঙ্গলের উদ্দেশে যতগুলি অভিযান করেছেন তাঁরা, তার মধ্যে ‘পারসিভের্যান্স’ সবচেয়ে উচ্চাভিলাষী পদক্ষেপ বলে জানিয়েছেন নাসার এক বিজ্ঞানী। যদিও ‘পারসিভের্যান্স’-এর হাত ধরে এই নিয়ে গত এক সপ্তাহে তৃতীয় বার মঙ্গল অভিযান ঘটল। গত সপ্তাহে সংযুক্ত আরব আমিরশাহি এবং চিন থেকে দু’টি মহাকাশযান মঙ্গলের কক্ষপথে ঢুকে কাজ শুরু করেছে।