একে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় প্রজন্মের এমআরএনএ টিকা। বা, ‘স্যামআরএনএ’ টিকা। -ফাইল ছবি।
অ্যান্টিবডি তৈরি হবে। সঙ্গে তৈরি হবে আরও একটি মারণাস্ত্র। মানবদেহে ঢুকে পড়া করোনাভাইরাসের সংক্রমণ রুখতে এ বার জোড়া ফলায় আক্রমণ শানানো হবে। যাতে ডেল্টা, ওমিক্রন বা করোনাভাইরাসের পরবর্তী কোনও রূপ অ্যান্টিবডিকে ধোঁকা দিলেও অন্য মারণাস্ত্রে ঘায়েল হয়।
প্রাথমিক পর্যায়ের ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে সফল হল এই নতুন ধরনের কোভিড বুস্টার টিকা। ফাইজার, মডার্না ও জনসন অ্যান্ড জনসনের এমআরএনএ টিকাগুলি যে পরিমাণে দেওয়া হয় তার দশ ভাগের এক ভাগ দিলেই এই নতুন ধরনের বুস্টার টিকায় কাজ হবে। তাই একে বলা হচ্ছে দ্বিতীয় প্রজন্মের এমআরএনএ টিকা। বা, ‘স্যামআরএনএ’ টিকা।
নতুন এই বুস্টার টিকা সংক্রান্ত গবেষণা ও তা নিয়ে ট্রায়ালের ফলাফল প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক চিকিৎসাবিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘দ্য ল্যান্সেট’-এ।
ব্রিটেনের ম্যাঞ্চেস্টার বিশ্ববিদ্যালয় ও আমেরিকার বায়োটেকনোলজি সংস্থা ‘গ্রিটস্টোন বায়ো’ যৌথ ভাবে এই বুস্টার টিকা বানিয়েছে।
চিকিৎসাবিজ্ঞানের পরিভাষায় এই ধরনের টিকার নাম— মাল্টিভেরিয়্যান্ট কোভিড বুস্টার টিকা। নামেই মালুম, করোনাভাইরাস পরিবারের সব প্রজাতি (‘স্ট্রেন’) ও রূপ (‘ভেরিয়্যান্ট’)-কে ঘায়েল করার জন্যই বানানো হয়েছে এই বুস্টার টিকা, যা মানবদেহে ঢোকার পর ভাইরাসের দ্রুত সংক্রমণে বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
গবেষকদের দাবি, আগামী দিনে যদি করোনাভাইরাসের আরও নতুন রূপের বহিঃপ্রকাশ ঘটে তা হলেও এই বুস্টার টিকা কার্যকরী হবে। কারণ, এই টিকা শুধুই অ্যান্টিবডি তৈরি করবে না, তৈরি করবে আরও এক ধরনের মারণাস্ত্র— টি সেল।
এর ফলে, অন্যান্য কোভিড টিকা নেওয়ার পর মানবদেহে তৈরি হওয়া অ্যান্টিবডিগুলিকে ডেল্টা, ওমিক্রন বা আগামী দিনে করোনার অন্য কোনও নতুন রূপ যদি ধোঁকা দেয় তা হলে টি সেল দিয়ে তাদের ঘায়েল করা সম্ভব হবে।
এই বুস্টার টিকা হবে একটি পর্বের। টিকার পরিমাণ হবে ১০ মাইক্রোগ্রাম। অক্সফোর্ড-অ্যাস্ট্রাজেনেকার বানানো কোভিড টিকার দু’টি পর্বের ২২ সপ্তাহ পর এই বুস্টার টিকা দেওয়া হয়েছিল ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালে।
ট্রায়ালের পরবর্তী পর্যায়ে আরও বেশি সংখ্যক মানুষের উপর এই দ্বিতীয় প্রজন্মের এমআরএনএ টিকা দেওয়া হবে বলে ম্যাঞ্চেস্টার বিশ্ববিদ্যালের তরফে একটি বিবৃতিতে জানানো হয়েছে।