নতুন স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করতে চলেছে ইসরো। —ফাইল চিত্র।
২০২৩-এর সাফল্যের রেশ ২০২৪ সালেও ধরে রাখতে বদ্ধপরিকর ভারতের মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো। নতুন বছরের প্রথম থেকেই তারা তাই সোজা ব্যাটে চালিয়ে খেলতে চায়। প্রথম দিনেই গুরুত্বপূর্ণ স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠাচ্ছেন ইসরোর বিজ্ঞানীরা। ১ জানুয়ারি সকাল ৯টা ১০ মিনিটে অন্ধ্রপ্রদেশের শ্রীহরিকোটার সতীশ ধাওয়ান স্পেস রিসার্চ সেন্টার থেকে মহাকাশে পাড়ি দিতে চলেছে এক্সপোস্যাট।
এক্সপোস্যাট হল দেশের প্রথম ‘এক্স-রে পোলারিমিটার স্যাটেলাইট’। নতুন বছরের প্রথম সকালে পোলার স্যাটেলাইট লঞ্চ ভেহিক্ল বা পিএসএলভি-র পিঠে চেপে যাত্রা শুরু করবে এক্সপোস্যাট। ভারতের মহাকাশ গবেষণায় যা মাইলফলক হতে চলেছে। কারণ, এই ধরনের কৃত্রিম উপগ্রহ এর আগে এক বারই মহাকাশে পাড়ি দিয়েছে। ২০২১ সালে তা উৎক্ষেপণ করেছে নাসা। আমেরিকার পর এ ক্ষেত্রে তাই ভারতই দ্বিতীয় দেশ যে এই স্যাটেলাইটের উৎক্ষেপণ করছে।
কী করবে এক্সপোস্যাট?
এই স্যাটেলাইটের মাধ্যমে মহাকাশে এক্স-রে উৎস সন্ধান করা হবে। ব্ল্যাক হোল বা কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে গবেষণায় নতুন দিশা পেতে চলেছে ইসরো। কারণ, মহাকাশে কৃষ্ণগহ্বরের উপস্থিতি, সন্ধান, উৎস প্রভৃতি নানা তথ্য জোগাড় করার চেষ্টা করবে এক্সপোস্যাট। এর মাধ্যমে কোথায় কোথায় কৃষ্ণগহ্বর রয়েছে, তার সন্ধান মিলতে পারে। মিলতে পারে নতুন ব্ল্যাক হোলের ঠিকানা।
এ ছাড়া মহাকাশে ৫০টিরও বেশি উজ্জ্বলতম শক্তির উৎসকে পর্যবেক্ষণ করার কথা এক্সপোস্যাটের। সুপারনোভা, নিউট্রন স্টার সেই তালিকায় রয়েছে। নিউট্রন স্টার হল অনেকগুলি নিউট্রন কণা গাঢ় ঘনত্বে একত্রিত হয়ে তৈরি তারা। এই ধরনের নক্ষত্র অত্যন্ত ক্ষুদ্র আকারের হয়। সর্বসাকুল্যে নিউট্রন স্টারের ব্যাসার্ধ ৩০ কিলোমিটারের বেশি নয়।
পৃথিবীর মাটি ছেড়ে ৫০০ থেকে ৭০০ কিলোমিটার উঁচুতে উঠবে এক্সপোস্যাট। তার পর নির্দিষ্ট কক্ষপথে পৃথিবীকে প্রদক্ষিণ করবে। মহাকাশে তার আয়ু পাঁচ বছর। ২০২১ সালে নাসা যে কৃত্রিম উপগ্রহ মহাকাশে পাঠিয়েছে, তার নাম ইমেজিং এক্স-রে পোলরিমেট্রি এক্সপ্লোরার (আইএক্সপিই)। ভারতে এমন প্রচেষ্টা এই প্রথম। এক্সপোস্যাটে রয়েছে দু’টি পেলোড— পোলিক্স (পোলারিমিটার ইনস্ট্রুমেন্ট ইন এক্স-রে) এবং এক্সস্পেক্ট (এক্স-রে স্পেকট্রোস্কোপি অ্যান্ড টাইমিং)। রমন রিসার্চ ইনস্টিটিউট এবং ইউআর রাও স্যাটেলাইট সেন্টার যৌথ ভাবে এই পেলোড তৈরি করেছে।