Global Warming

Earth Dimming: দ্রুত উজ্জ্বলতা হারাচ্ছে পৃথিবী, কেন নিষ্প্রভ হচ্ছে নীলাভ গ্রহ

১৯৯৮ থেকে ২০১৭, এই ২০ বছরে পৃথিবীর ঔজ্জ্বল্য প্রতি বর্গ মিটারে আগের বছরগুলির চেয়ে অর্ধেক ওয়াট করে কমে গিয়েছে।

Advertisement
নিজস্ব সংবাদদাতা
কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ নভেম্বর ২০২১ ১৪:০১
কেন ঔজ্জ্বল্য হারাচ্ছে পৃথিবী? -ফাইল ছবি।

কেন ঔজ্জ্বল্য হারাচ্ছে পৃথিবী? -ফাইল ছবি।

ঔজ্জ্বল্য হারিয়ে ফেলছে পৃথিবী। খুব দ্রুত। আর সেটাই আরও বেশি অভিশাপ হয়ে উঠছে। পৃথিবীর ‘জ্বর’ আরও বেড়ে যাচ্ছে। উষ্ণতর হয়ে উঠছে। গ্রিনহাউস গ্যাসের নির্গমন লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার দরুন জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য।

সাম্প্রতিক একটি গবেষণা এই খবর দিয়েছে। গবেষণাপত্রটি প্রকাশিত হয়েছে আন্তর্জাতিক বিজ্ঞান গবেষণা পত্রিকা ‘জিওফিজিক্যাল রিসার্চ লেটার্স’-এ।

Advertisement

গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, ১৯৯৮ থেকে ২৯১৭, এই ২০ বছরে পৃথিবীর ঔজ্জ্বল্য প্রতি বর্গ মিটারে আগের বছরগুলির চেয়ে অর্ধেক ওয়াট করে কমে গিয়েছে। শতাংশের হিসাবে আগের বছরগুলির চেয়ে পৃথিবীর ঔজ্জ্বল্য কমেছে ০.৫ শতাংশ। যার অর্থ, সূর্যালোক আগের চেয়ে নীলাভ এই গ্রহ কম পরিমাণে প্রতিফলিত করছে।

কেন এমন হচ্ছে, তার কারণও খুঁজে বার করেছেন গবেষকরা। তাঁরা দেখেছেন, এই ২০ বছরে পৃথিবীর মহাসাগরগুলির তাপমাত্রা আগের চেয়ে অনেকটাই বেড়েছে। তার ফলে, সেই মহাসাগরগুলির উপরের মেঘ আগের চেয়ে অনুজ্জ্বল হয়ে পড়েছে। মেঘের ঔজ্জ্বল্য হারানোর জন্যই পৃথিবী সূর্যালোক আগের চেয়ে কম পরিমাণে প্রতিফলিত করছে মহাকাশে। তাই সেই সূর্যালোক পৃথিবীর তাপমাত্রা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে।

পৃথিবী কতটা সূর্যালোক প্রতিফলিত করছে, তা বুঝতে গবেষকরা খতিয়ে দেখেছেন পৃথিবী তার উপগ্রহ চাঁদকে কী পরিমাণে আলোকিত করছে।

সূর্যালোকের ৩০ শতাংশ পৃথিবী প্রতিফলিত করে ফিরিয়ে দেয় মহাকাশে। গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, এই পরিমাণ ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ০.৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। ছবি সৌজন্যে- নাসা।

সূর্যালোকের ৩০ শতাংশ পৃথিবী প্রতিফলিত করে ফিরিয়ে দেয় মহাকাশে। গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, এই পরিমাণ ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ০.৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। ছবি সৌজন্যে- নাসা।

সাধারণত, সূর্যালোকের ৩০ শতাংশ পৃথিবী প্রতিফলিত করে ফিরিয়ে দেয় মহাকাশে। গবেষণাপত্রটি জানিয়েছে, এই পরিমাণ ১৯৯৮ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে ০.৫ শতাংশ কমে গিয়েছে। আর সেটা কমেছে মূলত ২০১৫, ২০১৬ এবং ২০১৭ সালে।

মূল গবেষক নিউ জার্সি ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির অধ্যাপক তাত্ত্বিক পদার্থবিদ ফিলিপ গুডে বলেছেন, ‘‘প্রতিফলনের পরিমাণ কমে যাওয়ার তিন বছরের খতিয়ান দেখে আমরা অবাক হয়ে গিয়েছি। এত দিন বিজ্ঞানীদের ধারণা ছিল, উষ্ণায়নের জন্য পৃথিবী হয়তো আরও বেশি পরিমাণে সূর্যালোক প্রতিফলিত করছে মহাকাশে। কিন্তু আমাদের গবেষণার ফলাফল উল্টো কথাই বলেছে।’’

গবেষকরা যে উপগ্রহ চিত্র ও তথ্যাদি বিশ্লেষণ করেছেন তাতে দেখা গিয়েছে, পূর্ব প্রশান্ত মহাসাগরের উপরে একেবারে নীচের স্তরে থাকা মেঘ ঔজ্জ্বল্য হারিয়েছে বেশি পরিমাণে। ফলে সেই মেঘ থেকে সূর্যালোকের প্রতিফলনও আগের চেয়ে কমে গিয়েছে। এই অঞ্চলটিই পৃথিবীর ঔজ্জ্বল্য কমার মূল কারণ হয়ে উঠেছে। এও দেখা গিয়েছে প্রশান্ত মহাসাগরের উপরের যে সব এলাকায় উজ্জ্বল মেঘের স্তর আগের চেয়ে পাতলা হয়ে গিয়েছে, সেই সব জায়গায় মহাসাগরের তাপমাত্রাও আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গিয়েছে। এমন হয়েছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য।

শুধুই তো মেঘ নয়, জল, বরফ, বনাঞ্চল, মরুভূমি সব কিছুই সূর্যালোক প্রতিফলিত করে পাঠায় মহাকাশে। কারও ক্ষেত্রে তার পরিমাণ কম, কারও ক্ষেত্রে বেশি। গবেষকরা দেখেছেন, পৃথিবীর ঔজ্জ্বল্য কমে যাওয়ার পিছনে রয়েছে সভ্যতার সৃষ্টি করা দূষণও।

আরও পড়ুন
Advertisement