তিন রঙের ছোঁয়া থাক রকমারি পদে। ছবি: ফ্রিপিক।
সাধারণতন্ত্র দিবস মানেই একটা অন্য রকম দিন। অনেকেরই কাছে বাড়তি ছুটির দিন। তবে ২৬ জানুয়ারি চারপাশের আবহ বদলে যায়। নানা রকম সাজে স্কুলপড়ুয়াদের প্রভাত ফেরি, পতাকা উত্তোলন, দিকে দিকে দেশাত্ববোধক গান অনেকের মনেও রেখাপাত করে। এই দিনে অনেকের সাজেও থাকে পতাকার তিন রঙ গেরুয়া, সাদা, সবুজের উপস্থিতি। তা হলে খাবারেই বা বাদ যাবে কেন?
২৬ জানুয়ারি পিকনিক, ঘোরা কোনওটাই হয়নি বলে খুদের মনখারাপ? তাকে ভোলাতে পাতে রাখুন তিন রঙের ভাত থেকে মুখরোচক পদ। খুদের জন্য থাক গেরুয়া, সাদা, সবুজের মিশেলে তৈরি ম্যুজ়ও।
তিন রঙের পনির টিক্কা
তিন রঙের জন্য আলাদা রঙের মিশ্রণ বানাতে হবে। পনির প্রথমে চার চৌকো করে কেটে নিন। এ বার টিক্কার মশলা প্রস্তুত করতে হবে।
লাল বা গেরুয়া রঙের জন্য লাগবে কাশ্মীরি লাল লঙ্কাগুঁড়ো, জলঝরানো টক দই, টিক্কা মশলা, স্বাদমতো নুন, গোলমরিচ, সর্ষের তেল। সাদার জন্য উপকরণ এক, তবে কাশ্মীরি লঙ্কার গুঁড়ো না দিয়ে মিশিয়ে নিতে হবে কাজু বাটা। আর সবুজের জন্য ব্যবহার করা যাবে ধনেপাতা বা পালং শাকের রসের মিশ্রণ।
পনির টুকরো তিন রঙের মশলায় অন্তত আধ ঘণ্টা মাখিয়ে নিন। তার পর ননস্টিক কড়ায় তেল বা মাখন দিয়ে উল্টেপাল্টে সেঁকে টিক্কা বানিয়ে নিন। তার পর তিন রঙের পনির টিক্কা থালায় সাজিয়ে দিলেই তৈরি সাধারণতন্ত্র দিবসের মুখরোচক স্ন্যাক্স।
তেরঙ্গা মশলা ভাত: ভাতেও থাক রঙের ছোঁয়া। ভাতে কমলা এবং সবুজ রং আনতে ব্যবহার করতে হবে গাজর এবং পালং শাক। প্রথমে বাসমতী চাল বা পছন্দের চাল সেদ্ধ করে নিন।
কড়াইয়ে ঘি গরম হলে জিরে, গোটা ধনে ফোড়ন দিন। পেঁয়াজ কুচি, রসুন কুচি দিয়ে সাঁতলে তাতে যোগ করুন ভাপিয়ে নেওয়া গাজর বাটা। ভাল করে নেড়েচেড়ে নিয়ে যোগ করুন সাদা ভাত। ভাতে কমলা রং ধরলে দিয়ে দিতে হবে গুলে রাখা কেশর। এতে রং আরও সুন্দর হবে। দিতে পারেন সামান্য গরমমশলা এবং ক্রিমও। তৈরি হয়ে যাবে কমলা ভাত।
সবুজ ভাত তৈরির জন্য কড়াইয়ে ঘি নিয়ে সর্ষে এবং জিরে ফোড়ন দিন। চাইলে কারিপাতা যোগ করতে পারেন। এ বার পেঁয়াজ কুচি দিয়ে ভেজে নিন। পেঁয়াজ হালকা রং দিতে হবে। রসুন বাটা, স্বাদমতো নুন, সমস্ত উপকরণ আঁচ কমিয়ে খানিক ভেজে যোগ করুন পালং শাক বাটা। ধনে এবং জিরে গুঁড়ো দিয়ে ভাল করে কষিয়ে নিন যাতে পালংয়ের কাঁচা গন্ধ চলে যায়। তার পর যোগ করুন ভাত। কিছু ক্ষণ নাড়াচাড়া করলেই সবুজ ভাত প্রস্তুত হয়ে যাবে। চাইলে সামান্য ক্রিম তাতে মিশিয়ে দিতে পারেন।
সাদা ভাতের জন্য দই ব্যবহার করতে পারেন। কড়ায় ঘি দিয়ে সর্ষে, কারিপাতা ফোড়ন দিন। ভাত মিশিয়ে নিন। স্বাদমতো নুন এবং চিনি যোগ করুন। তা হলেই তৈরি সাদা দই ভাত।
এ বার পালা সাজানোর। একটি কানা উঁচু বাটিতে মাখন মাখিয়ে প্রথমে কমলা ভাতের স্তর তৈরি করুন। তার পর দিন সাদা ভাত, সব শেষে সবুজ ভাত। উপর থেকে কোন থালা চাপ দিয়ে রাখুন কিছু ক্ষণ তার পর সাবধানে বাটিটি যে থালায় খাবার পরিবেশন করবেন তার উপর উপুড় করে দিন। উপর থেকে ফেটানো ভাজা মশলা, নুন দেওয়া ফেটানো টক দই এবং রোল করা পাঁপড় দিয়ে পরিবেশন করুন।
তিন রঙের ম্যুজ়
শেষ পাতে মিষ্টিমুখ না হলে চলে। তা ছাড়া কেক, ম্যুজ বেশির ভাগ খুদেরই বেশ পছন্দের হয়। ম্যুজ় তৈরির জন্য প্রথমে ফুটন্ত গরম জলের উপর একটি পাত্র রেখে তার মধ্যে সাদা চকোলেট গলিয়ে নিন। এ বার ফ্রেশ ক্রিম বৈদ্যুতিক হুইস্কারের সাহায্যে ঘন ফেনার মতো করে ফেলুন। তার সঙ্গে মিশিয়ে দিন চকোলেট। মিশ্রণটি তিনটি আলাদা বাটিতে ভাগ করে নিন। সবুজ রঙের জন্য মিশিয়ে নিন কিউয়ির শাঁস বাটা, কমলার জন্য কমলালেবুর রস বা কোয়া বাটা। এ বার স্বচ্ছ কাচের গ্লাসে বা ম্যুজ রাখার গ্লাসে প্রথমে কমলা রং, তার পর সাদা ও সবুজ ম্যুজ় দিয়ে সাজিয়ে নিন।