Israel-Hamas Conflict

হামাসের পক্ষে কোন কোন দেশ, ইজ়রায়েলের পক্ষে কারা? এখানেও কি কূটনীতির জটিল অঙ্ক?

পশ্চিম এশিয়ার অনেক দেশই পরবর্তী সময়ে ইজ়রায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় মনোনিবেশ করেছে। চরম ইজ়রায়েল-বিরোধিতা ছেড়ে অনেকেই তেল আভিভের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ১৩ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৫৫
০১ ২০
Which country in which side in ongoing Israel-Hamas conflict

ইজ়রায়েল-হামাস চলতি সংঘাতের আবহে আবারও আড়াআড়ি দু’ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়েছে গোটা বিশ্ব। কূটনৈতিক ধারাবাহিকতা বজায় রেখেই ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে আমেরিকা-সহ পশ্চিমের দেশগুলি।

০২ ২০
Which country in which side in ongoing Israel-Hamas conflict

অন্য দিকে, পশ্চিম এশিয়া তো বটেই, বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা বেশ কিছু দেশ প্যালেস্তিনীয় সশস্ত্র সংগঠন হামাসের পক্ষে দাঁড়ানোর কথা জানিয়েছে।

০৩ ২০
Which country in which side in ongoing Israel-Hamas conflict

দেশগুলির এই ‘পাশে দাঁড়ানো’র নেপথ্যেও রয়েছে ভূরাজনীতির জটিল অঙ্ক। ভিন্ন ভিন্ন কূটনৈতিক স্বার্থ থেকেই এই সংঘাতে অবস্থান নিচ্ছে বিশ্বের তাবড় তাবড় দেশগুলি।

Advertisement
০৪ ২০
Which country in which side in ongoing Israel-Hamas conflict

আমেরিকার পাশাপাশি ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ব্রিটেন এবং জার্মানি ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ানোর পাশাপাশি হামাস বাহিনীর ‘সন্ত্রাসবাদী’ কার্যকলাপের নিন্দা করেছে।

০৫ ২০
Which country in which side in ongoing Israel-Hamas conflict

আমেরিকা সরাসরি অস্ত্র দিয়ে সাহায্য করছে ইজ়রায়েলকে। ব্রিটেন, জার্মানিও কূটনৈতিক সহায়তা দেওয়ার কথা জানিয়েছে। ফরাসি প্রশাসন ফ্রান্সে প্যালেস্তাইনপন্থীদের অবস্থান, মিছিল কিংবা বিক্ষোভে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে।

Advertisement
০৬ ২০
জার্মান রাষ্ট্রপ্রধান আবার হামাসের ‘সন্ত্রাসবাদী’ হামলার জন্য পরোক্ষে ইরানকেই দায়ী করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, ইরানের সহায়তা ছাড়া হামাস ইজ়রায়েলের উপর অতর্কিতে হামলা চালাতে পারত না।

জার্মান রাষ্ট্রপ্রধান আবার হামাসের ‘সন্ত্রাসবাদী’ হামলার জন্য পরোক্ষে ইরানকেই দায়ী করেছেন এবং দাবি করেছেন যে, ইরানের সহায়তা ছাড়া হামাস ইজ়রায়েলের উপর অতর্কিতে হামলা চালাতে পারত না।

০৭ ২০
ইউরোপীয় দেশগুলির সংগঠন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যেমন প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, হামাস অধিকৃত গাজ়ায় সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেবে তারা। পরে যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সিদ্ধান্ত বদল করা হয়।

ইউরোপীয় দেশগুলির সংগঠন ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন যেমন প্রাথমিক ভাবে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল যে, হামাস অধিকৃত গাজ়ায় সাহায্য পাঠানো বন্ধ করে দেবে তারা। পরে যদিও আন্তর্জাতিক চাপের মুখে সিদ্ধান্ত বদল করা হয়।

Advertisement
০৮ ২০
আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি হামাস-হামলার নিন্দা করে জানিয়েছে, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে’র নিন্দা করবে তারা।

আমেরিকা এবং ইউরোপের দেশগুলি হামাস-হামলার নিন্দা করে জানিয়েছে, বিশ্বের যে কোনও প্রান্তে ‘সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে’র নিন্দা করবে তারা।

০৯ ২০
তবে ইজ়রায়েল এবং হামাস— এই দুই পক্ষের যে কোনও একটির পাশে দেশগুলির দাঁড়ানোর অঙ্কটি খুব সহজ বিষয় নয়। এর মধ্যেও অনেকগুলি পরত আছে।

তবে ইজ়রায়েল এবং হামাস— এই দুই পক্ষের যে কোনও একটির পাশে দেশগুলির দাঁড়ানোর অঙ্কটি খুব সহজ বিষয় নয়। এর মধ্যেও অনেকগুলি পরত আছে।

১০ ২০
ইরান যেমন খোলাখুলি ভাবেই হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে সশস্ত্র ওই গোষ্ঠীকে সাহায্য করার যে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই ইজ়রায়েলের নিন্দা করে বলেছেন, “প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের জন্য যে কোনও প্রতিরোধে আমাদের সমর্থন থাকবে।”

ইরান যেমন খোলাখুলি ভাবেই হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে। তবে সশস্ত্র ওই গোষ্ঠীকে সাহায্য করার যে অভিযোগ তাদের বিরুদ্ধে উঠেছে, তা উড়িয়ে দিয়েছে তেহরান। ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতোল্লা আলি খামেনেই ইজ়রায়েলের নিন্দা করে বলেছেন, “প্যালেস্তাইন রাষ্ট্রের জন্য যে কোনও প্রতিরোধে আমাদের সমর্থন থাকবে।”

১১ ২০
হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে ইয়েমেন, কাতার, আফগানিস্তান, লেবাননও। এর মধ্যে শেষোক্ত দেশটির জঙ্গি সংগঠন হেজ়বুল্লা সরাসরি হামাসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। সিরিয়াও পাশে দাঁড়িয়েছে হামাসের। উল্লেখ্য যে, ইজ়রায়েলকে সিরিয়া, হামাস এবং হেজ়বুল্লা— এই তিন বাহিনীর সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে।

হামাসের পাশে দাঁড়িয়েছে ইয়েমেন, কাতার, আফগানিস্তান, লেবাননও। এর মধ্যে শেষোক্ত দেশটির জঙ্গি সংগঠন হেজ়বুল্লা সরাসরি হামাসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে ইজ়রায়েলের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে নেমেছে। সিরিয়াও পাশে দাঁড়িয়েছে হামাসের। উল্লেখ্য যে, ইজ়রায়েলকে সিরিয়া, হামাস এবং হেজ়বুল্লা— এই তিন বাহিনীর সঙ্গেই লড়তে হচ্ছে।

১২ ২০
কাতার যেমন চলতি সংঘাতের জন্য একক ভাবে দায়ী করেছে ইজ়রায়েলকে। গৃহযুদ্ধে দীর্ণ ইরাকের সশস্ত্র বাহিনী পিএমএফ আবার আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, যদি ওয়াশিংটন ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ায়, তবে তারাও প্রত্যাঘাত করবে।

কাতার যেমন চলতি সংঘাতের জন্য একক ভাবে দায়ী করেছে ইজ়রায়েলকে। গৃহযুদ্ধে দীর্ণ ইরাকের সশস্ত্র বাহিনী পিএমএফ আবার আমেরিকাকে হুঁশিয়ারি দিয়ে জানিয়েছে, যদি ওয়াশিংটন ইজ়রায়েলের পাশে দাঁড়ায়, তবে তারাও প্রত্যাঘাত করবে।

১৩ ২০
আরব দেশগুলির এই অবস্থানের মধ্যে বিশেষ কোনও চমক কিংবা অভিনবত্ব নেই। কারণ, আরব-প্যালেস্তাইন সংঘাতের গোড়ার দিন থেকেই অখণ্ড আরব জাতীয়তাবাদে ভর করে ইজ়রায়েলি ‘আগ্রাসনে’র বিরোধিতা করে এসেছে উপরিউক্ত দেশগুলি।

আরব দেশগুলির এই অবস্থানের মধ্যে বিশেষ কোনও চমক কিংবা অভিনবত্ব নেই। কারণ, আরব-প্যালেস্তাইন সংঘাতের গোড়ার দিন থেকেই অখণ্ড আরব জাতীয়তাবাদে ভর করে ইজ়রায়েলি ‘আগ্রাসনে’র বিরোধিতা করে এসেছে উপরিউক্ত দেশগুলি।

১৪ ২০
তবে অতীতের আরব জাতীয়তাবাদও আর নিশ্ছিদ্র নয়। কারণ, পশ্চিম এশিয়ার অনেক দেশই পরবর্তী সময়ে ইজ়রায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় মনোনিবেশ করেছে। চরম ইজ়রায়েল-বিরোধিতা ছেড়ে অনেকেই তেল আভিভের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে।

তবে অতীতের আরব জাতীয়তাবাদও আর নিশ্ছিদ্র নয়। কারণ, পশ্চিম এশিয়ার অনেক দেশই পরবর্তী সময়ে ইজ়রায়েলের সঙ্গে সম্পর্ক রক্ষায় মনোনিবেশ করেছে। চরম ইজ়রায়েল-বিরোধিতা ছেড়ে অনেকেই তেল আভিভের সঙ্গে বৈঠকে বসেছে।

১৫ ২০
আমেরিকার মধ্যস্থতায় ২০২০ সালে ‘আব্রাহাম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়, তাতে সই করেছিল বাহরিন, সৌদি আরব আমিরশাহি, সুদান, মরক্কোর মতো আরবের দেশগুলি।

আমেরিকার মধ্যস্থতায় ২০২০ সালে ‘আব্রাহাম চুক্তি’ স্বাক্ষরিত হয়, তাতে সই করেছিল বাহরিন, সৌদি আরব আমিরশাহি, সুদান, মরক্কোর মতো আরবের দেশগুলি।

১৬ ২০
এই দেশগুলি আপাতত ভারসাম্যের নীতি নিচ্ছে। ইজ়রায়েলের প্রতি কোনও চরম বার্তা শোনা যায়নি তাদের তরফে।

এই দেশগুলি আপাতত ভারসাম্যের নীতি নিচ্ছে। ইজ়রায়েলের প্রতি কোনও চরম বার্তা শোনা যায়নি তাদের তরফে।

১৭ ২০
আমেরিকার মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে সম্প্রতি আলোচনার টেবিলে বসার কথা ইজ়রায়েলের। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

আমেরিকার মধ্যস্থতায় সৌদি আরবের সঙ্গে সম্প্রতি আলোচনার টেবিলে বসার কথা ইজ়রায়েলের। তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে এই আলোচনা শুরুর প্রক্রিয়া ধাক্কা খেতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।

১৮ ২০
অনেকে মনে করছেন, ওই আলোচনা ভেস্তে দিতেই পরিকল্পিত ভাবে ইজ়রায়েলের উপর হামলা চালিয়েছে হামাস। কারণ, তারা ইজ়রায়েলের অস্তিত্ব তো স্বীকারই করে না, বরং ইহুদি-প্রধান রাষ্ট্রটির উচ্ছেদসাধনকে একমাত্র লক্ষ্য বলে মনে করে।

অনেকে মনে করছেন, ওই আলোচনা ভেস্তে দিতেই পরিকল্পিত ভাবে ইজ়রায়েলের উপর হামলা চালিয়েছে হামাস। কারণ, তারা ইজ়রায়েলের অস্তিত্ব তো স্বীকারই করে না, বরং ইহুদি-প্রধান রাষ্ট্রটির উচ্ছেদসাধনকে একমাত্র লক্ষ্য বলে মনে করে।

১৯ ২০
সৌদি আরব ইজ়রায়েলকে মৃদু ভর্ৎসনা করে জানিয়েছে, প্যালেস্তাইনবাসীর বৈধ অধিকার এবং জবরদখল নীতির জন্যই বর্তমান এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। একদা আরব যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া মিশরের অবস্থান অবশ্য এখনও পুরো স্পষ্ট নয়।

সৌদি আরব ইজ়রায়েলকে মৃদু ভর্ৎসনা করে জানিয়েছে, প্যালেস্তাইনবাসীর বৈধ অধিকার এবং জবরদখল নীতির জন্যই বর্তমান এই পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে। একদা আরব যুদ্ধে জড়িয়ে পড়া মিশরের অবস্থান অবশ্য এখনও পুরো স্পষ্ট নয়।

২০ ২০
রাশিয়া আবার দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার ইঙ্গিত দিয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে ঢুকতে চাওয়া চিনের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। বোঝাই যাচ্ছে যে, কূটনীতির জটিল অঙ্কেই পশ্চিম এশিয়ার এই লড়াইয়ে অবস্থান নিচ্ছে দেশগুলি।

রাশিয়া আবার দুই পক্ষের মধ্যে মধ্যস্থতা করার ইঙ্গিত দিয়েছে। পশ্চিম এশিয়ার রাজনীতিতে ঢুকতে চাওয়া চিনের অবস্থান এখনও স্পষ্ট নয়। বোঝাই যাচ্ছে যে, কূটনীতির জটিল অঙ্কেই পশ্চিম এশিয়ার এই লড়াইয়ে অবস্থান নিচ্ছে দেশগুলি।

সব ছবি: রয়টার্স।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি