Mowgli

বাস্তবের ‘মোগলি’! নেকড়ে ‘মা’-এর কাছে মানুষ হন উত্তরপ্রদেশের দিনা, হাঁটতেন চার হাত-পায়ে

বাস্তবের ‘মোগলি’র নাম দিনা। উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের জঙ্গলে তাঁর খোঁজ মিলেছিল ১৮৭৩ সালে। এক দল নেকড়ের সঙ্গে ওই জঙ্গলে দিনাকে দেখতে পেয়েছিলেন শিকারিরা। দিনার বয়স তখন মাত্র ছয়।

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
বরেলী শেষ আপডেট: ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২২ ১৮:২৯
০১ ১৪
ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক রুডইয়ার্ড কিপলিঙের বিখ্যাত উপন্যাস ‘মোগলি’র কথা কে না জানে। কিপলিঙের উপন্যাসের সেই চরিত্রকে নিয়ে সিনেমা, কার্টুনও হয়েছে। বন্যপশুদের মাঝে এক মানবসন্তানের বেড়ে ওঠার কাহিনি। পশুদের মতোই আচার-আচরণ, ঝাঁকরা ঝাঁকরা চুলের সেই মানবশিশুই কিপলিঙের উপন্যাসের দৌলতে যেন জীবন্ত চরিত্র হয়ে উঠেছে।

ব্রিটিশ ঔপন্যাসিক রুডইয়ার্ড কিপলিঙের বিখ্যাত উপন্যাস ‘মোগলি’র কথা কে না জানে। কিপলিঙের উপন্যাসের সেই চরিত্রকে নিয়ে সিনেমা, কার্টুনও হয়েছে। বন্যপশুদের মাঝে এক মানবসন্তানের বেড়ে ওঠার কাহিনি। পশুদের মতোই আচার-আচরণ, ঝাঁকরা ঝাঁকরা চুলের সেই মানবশিশুই কিপলিঙের উপন্যাসের দৌলতে যেন জীবন্ত চরিত্র হয়ে উঠেছে।

০২ ১৪
কিন্তু জানেন কি, বাস্তবেও এক ‘মোগলি’র খোঁজ মিলেছিল। আর সেই ‘মোগলি’কে পাওয়া গিয়েছিল ভারতেই। তা-ও আবার উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার অনেক আগেই।

কিন্তু জানেন কি, বাস্তবেও এক ‘মোগলি’র খোঁজ মিলেছিল। আর সেই ‘মোগলি’কে পাওয়া গিয়েছিল ভারতেই। তা-ও আবার উপন্যাস প্রকাশিত হওয়ার অনেক আগেই।

০৩ ১৪
বাস্তবের ‘মোগলি’র নাম দিনা সানিচর। উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের জঙ্গলে তাঁর খোঁজ মিলেছিল ১৮৭৩ সালে।

বাস্তবের ‘মোগলি’র নাম দিনা সানিচর। উত্তরপ্রদেশের বুলন্দশহরের জঙ্গলে তাঁর খোঁজ মিলেছিল ১৮৭৩ সালে।

Advertisement
০৪ ১৪
এক দল নেকড়ের সঙ্গে ওই জঙ্গলে দিনাকে দেখতে পেয়েছিলেন শিকারিরা। দিনার বয়স তখন মাত্র ছয়।

এক দল নেকড়ের সঙ্গে ওই জঙ্গলে দিনাকে দেখতে পেয়েছিলেন শিকারিরা। দিনার বয়স তখন মাত্র ছয়।

০৫ ১৪
ওই সময়ে দেশের নানা প্রান্তে চার জন এমন ‘মোগলি’র কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে একমাত্র খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল দিনার।

ওই সময়ে দেশের নানা প্রান্তে চার জন এমন ‘মোগলি’র কথা প্রকাশ্যে এসেছিল। তবে একমাত্র খোঁজ পাওয়া গিয়েছিল দিনার।

Advertisement
০৬ ১৪
শিকারিরা দাবি করেছিলেন, এক দল নেকড়ের মাঝে ওই মানবশিশুকে দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা। চার হাত-পায়ে নেকড়ের মতোই হাঁটছিল সে। নেকড়েদের মাঝে মানবশিশুকে দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা।

শিকারিরা দাবি করেছিলেন, এক দল নেকড়ের মাঝে ওই মানবশিশুকে দেখতে পেয়েছিলেন তাঁরা। চার হাত-পায়ে নেকড়ের মতোই হাঁটছিল সে। নেকড়েদের মাঝে মানবশিশুকে দেখে হতবাক হয়ে গিয়েছিলেন তাঁরা।

০৭ ১৪
শিকারিদের দাবি, নেকড়েদের সঙ্গেই মানবশিশুটি গুহার মধ্যে ঢুকে যায়। তখন তাঁরা স্থির করেন, শিশুটিকে নেকড়ের দলের হাত থেকে উদ্ধার করবেন।

শিকারিদের দাবি, নেকড়েদের সঙ্গেই মানবশিশুটি গুহার মধ্যে ঢুকে যায়। তখন তাঁরা স্থির করেন, শিশুটিকে নেকড়ের দলের হাত থেকে উদ্ধার করবেন।

Advertisement
০৮ ১৪
কিন্তু উদ্ধারকাজ অত সহজ ছিল না বলে দাবি করেছেন শিকারিরা। ওই দলে যে মেয়ে নেকড়েটি ছিল, সেটিকে হত্যা করার পরই শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হত।

কিন্তু উদ্ধারকাজ অত সহজ ছিল না বলে দাবি করেছেন শিকারিরা। ওই দলে যে মেয়ে নেকড়েটি ছিল, সেটিকে হত্যা করার পরই শিশুটিকে উদ্ধার করা সম্ভব হত।

০৯ ১৪
শিকারিরা প্রথমে নেকড়েদের গুহায় আগুন ধরিয়ে দেন। তাতে ভয় পেয়ে গুহা ছেড়ে পালায় নেকড়ের দল। তার পরই মানবশিশুটিকে উদ্ধার করেন তাঁরা।

শিকারিরা প্রথমে নেকড়েদের গুহায় আগুন ধরিয়ে দেন। তাতে ভয় পেয়ে গুহা ছেড়ে পালায় নেকড়ের দল। তার পরই মানবশিশুটিকে উদ্ধার করেন তাঁরা।

১০ ১৪
কিন্তু বন্যজনগৎ থেকে ওই মানবশিশুকে উদ্ধার সভ্যতার আলোয় নিয়ে এসে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হল। আগরার কাছে একটি অনাথ আশ্রমে পাঠানো হয়েছিল মানুষের আদবকায়দা শেখানোর জন্য।

কিন্তু বন্যজনগৎ থেকে ওই মানবশিশুকে উদ্ধার সভ্যতার আলোয় নিয়ে এসে আরও চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হল। আগরার কাছে একটি অনাথ আশ্রমে পাঠানো হয়েছিল মানুষের আদবকায়দা শেখানোর জন্য।

১১ ১৪
সেই অনাথ আশ্রমেই ওই মানবশিশুর নামকরণ হয় দিনা সানিচর। কিন্তু সানিচরকে মানুষের আদবকায়দা শেখানো বড় কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পোশাক পরতে চাইত না। ভাষা বোঝা দূর অস্ত্‌, হাড়ে ঘষে দাঁত ধার করত সে। আর খাবারের মধ্যে শুধু মাংসই খেত।

সেই অনাথ আশ্রমেই ওই মানবশিশুর নামকরণ হয় দিনা সানিচর। কিন্তু সানিচরকে মানুষের আদবকায়দা শেখানো বড় কঠিন কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছিল। পোশাক পরতে চাইত না। ভাষা বোঝা দূর অস্ত্‌, হাড়ে ঘষে দাঁত ধার করত সে। আর খাবারের মধ্যে শুধু মাংসই খেত।

১২ ১৪
ওয়েন ডেনিস নামে এক শিশু মনোবিদ দিনাকে নিয়ে গবেষণা করেন। ১৯৪১ সালে আমেরিকান জার্নাল অব সাইকোলজি-তে তিনি লিখেছিলেন যে, মানুষের সংস্পর্শে কোনও দিনই আসেনি দিনা। শুধু তাই-ই নয়, শীত, গ্রীষ্ম কোনও কিছুই তাঁর শরীরে প্রভাব পড়ত না।

ওয়েন ডেনিস নামে এক শিশু মনোবিদ দিনাকে নিয়ে গবেষণা করেন। ১৯৪১ সালে আমেরিকান জার্নাল অব সাইকোলজি-তে তিনি লিখেছিলেন যে, মানুষের সংস্পর্শে কোনও দিনই আসেনি দিনা। শুধু তাই-ই নয়, শীত, গ্রীষ্ম কোনও কিছুই তাঁর শরীরে প্রভাব পড়ত না।

১৩ ১৪
ডেনিসের দাবি, অনাথ আশ্রমে থাকাকালীন আশ্রমের অন্য শিশুদের সঙ্গে মেলামেশা করত না দিনা। তার মতোই আরও একটি মানবশিশুকে উদ্ধার করে ওই অনাথ আশ্রমে নিয়ে আসা হয়। দু’জনকে এক সঙ্গে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একটা অদ্ভুত বন্ধন তৈরি হয়।

ডেনিসের দাবি, অনাথ আশ্রমে থাকাকালীন আশ্রমের অন্য শিশুদের সঙ্গে মেলামেশা করত না দিনা। তার মতোই আরও একটি মানবশিশুকে উদ্ধার করে ওই অনাথ আশ্রমে নিয়ে আসা হয়। দু’জনকে এক সঙ্গে রাখা হয়েছিল। তাদের মধ্যে একটা অদ্ভুত বন্ধন তৈরি হয়।

১৪ ১৪
তবে বেশি দিন বাঁচেননি দিনা। ৩৪ বছর বয়সে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৮৯৫ সালে। তবে মৃত্যু আগে তিনি মানুষের অনেক আদবকায়দা শিখে গিয়েছিলেন। পোশাক পরা শিখেছিলেন, কী ভাবে খেতে হয়, তা-ও শিখেছিলেন। ঘটনাচক্রে, ১৮৯৪ সালে অর্থাৎ দানি মৃত্যুর এক বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল রুডইয়ার্ড কিপলিঙের উপন্যাস ‘দ্য জাঙ্গল বুক’।

তবে বেশি দিন বাঁচেননি দিনা। ৩৪ বছর বয়সে যক্ষ্মায় আক্রান্ত হয়ে মৃত্যু হয় ১৮৯৫ সালে। তবে মৃত্যু আগে তিনি মানুষের অনেক আদবকায়দা শিখে গিয়েছিলেন। পোশাক পরা শিখেছিলেন, কী ভাবে খেতে হয়, তা-ও শিখেছিলেন। ঘটনাচক্রে, ১৮৯৪ সালে অর্থাৎ দানি মৃত্যুর এক বছর আগে প্রকাশিত হয়েছিল রুডইয়ার্ড কিপলিঙের উপন্যাস ‘দ্য জাঙ্গল বুক’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি