Ration Scam

রেশনের ৬৯ হাজার কোটির চাল-গম গায়েব! দেশ জুড়ে হওয়া সমীক্ষার রিপোর্টে বড় কেলেঙ্কারি ফাঁস

রেশন দোকানে বিলি করা ভর্তুকি যুক্ত বা বিনামূল্যের খাদ্যশস্যের ২৮ শতাংশেরই নেই কোনও হদিস। উপভোক্তাদের বদলে খোলা বাজারে চড়া দামে তা বিক্রি করা হচ্ছে। সমীক্ষক সংস্থার এ হেন রিপোর্ট ঘিরে দেশ জুড়ে পড়ে গিয়েছে শোরগোল।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ নভেম্বর ২০২৪ ১৬:৩৬
০১ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

নামমাত্র মূল্যে খাদ্যশস্য আমজনতার ঘরে পৌঁছে দিতে দেশ জুড়ে চালু রয়েছে রেশনিং ব্যবস্থা। কিন্তু সেই ভর্তুকি যুক্ত বা বিনামূল্যের খাদ্যশস্যের সিংহভাগই পৌঁছচ্ছে না দরিদ্র নাগরিকদের রান্নাঘরে। সম্প্রতি এক সমীক্ষার রিপোর্টে উঠে এসেছে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য, যা সরকারের শীর্ষ আধিকারিকদের কপালে চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে।

০২ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

চলতি বছরের নভেম্বরে এ দেশের রেশনিং ব্যবস্থা নিয়ে করা সমীক্ষার রিপোর্ট প্রকাশ করে ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর রিসার্চ অন ইন্টারন্যাশনাল ইকোনমিক রিলেশনস্’ (আইসিআরআইএআর)। কেন্দ্রের বিভিন্ন মন্ত্রকের বিবিধ কাজের সমীক্ষা করে ১৯৮১ সালে প্রতিষ্ঠিত এই অলাভজনক সংস্থা। রিপোর্টে জনবণ্টন ব্যবস্থার মাধ্যমে দেওয়া খাদ্যশস্যের ২৮ শতাংশ উপভোক্তাদের কাছে পৌঁছচ্ছে না বলে উল্লেখ করা হয়েছে।

০৩ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, গায়েব হয়ে যাওয়া ভর্তুকিযুক্ত ওই খাদ্যশস্য ঘুরপথে খোলা বাজারে বিক্রি করা হচ্ছে। ফলে বছরে আনুমানিক ৬৯ হাজার কোটি টাকা লোকসানের মুখ দেখছে সরকার। খোলা বাজারে বিক্রি হওয়া খাদ্যশস্যের মধ্যে মূলত রয়েছে চাল ও গম। এর পরিমাণ দু’কোটি টন বলে জানিয়েছেন সমীক্ষকেরা।

Advertisement
০৪ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

নিয়ম অনুযায়ী, জনবণ্টন ব্যবস্থার (পড়ুন রেশনিং) মাধ্যমে এই চাল ও গম ৮১ কোটি ৪০ লক্ষ উপভোক্তার কাছে পৌঁছনোর কথা। তার বদলে বিপুল পরিমাণ ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হওয়ায় সরকারি নজরদারি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন অনেকেই। ভর্তুকির নামে করের টাকা নষ্ট করার প্রয়োজনীয়তা নিয়েও সমালোচনা শুরু হয়েছে।

০৫ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

আইসিআরআইএআর এই সমীক্ষা রিপোর্ট নিয়ে বলতে গিয়ে বিস্ফোরক তথ্য দিয়েছেন সংস্থাটির ‘ইনফোসিস’ চেয়ার প্রফেসার অশোক গুলাটি। তাঁর কথায়, ‘‘সবচেয়ে আশ্চর্যের ব্যাপার হল ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য যে কোথায় হারিয়ে যাচ্ছে, তা বোঝা দুষ্কর। সেগুলিকে সম্ভবত খোলা বাজারে বা বিদেশে রফতানির জন্য পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে।’’

Advertisement
০৬ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

রিপোর্টে খাদ্যশস্যের জন্য গৃহস্থালির খরচ এবং ২০২২ সালের অগস্ট থেকে গত বছরের (পড়ুন ২০২৩) জুলাই পর্যন্ত ফুড কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়ার (এফসিআই) প্রতি মাসের খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার পরিসংখ্যানও রয়েছে।

০৭ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

উল্লেখ্য, এফসিআইয়ের গুদাম থেকে জনবণ্টন ব্যবস্থা, অর্থাৎ রেশন দোকান পর্যন্ত খাদ্যশস্য নিয়ে যাওয়ার সময়ে নানা কারণে তার কিছুটা অংশ নষ্ট হয়। এর জন্য চাল-গমের বস্তায় ফুটো থাকা, আনুষঙ্গিক বিভিন্ন সামগ্রীর অভাব এবং খারাপ পরিবহণ ব্যবস্থাকে দায়ী করা হয়েছে রিপোর্টে।

Advertisement
০৮ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

তবে সমীক্ষকদের দাবি, গত কয়েক বছরে এই ক্ষেত্রে বেশ কিছুটা উন্নতি হয়েছে। ২০১১-’১২ আর্থিক বছরে ভর্তুকি যুক্ত খাদ্যশস্য নষ্ট হওয়ার পরিমাণ ছিল ৪৬ শতাংশ। বর্তমানে সেই সূচক অনেকটা নামলেও তা পুরোপুরি নির্মূল করা যায়নি। সরকারি স্তরে এ ব্যাপারে আরও চিন্তাভাবনার প্রয়োজন রয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁরা।

০৯ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

আইসিআরআইএ-র রিপোর্টে বার বার জনবণ্টন ব্যবস্থায় ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য ‘চুরি’র কথা বলা হয়েছে। জালিয়াতি বন্ধ করতে ২০১৬ সালে রেশন দোকানগুলিতে কম্পিউটার চালিত ‘পয়েন্ট অফ সেল’ মেশিন চালু করে প্রশাসন। তাতে সূচক নামলেও চুরি যে পুরোপুরি বন্ধ হয়নি, তা বলাই বাহুল্য।

১০ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

জনবণ্টন ব্যবস্থা থেকে ভর্তুকি যুক্ত খাদ্যশস্য গায়েবের ক্ষেত্রে শীর্ষে নাম রয়েছে অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড এবং গুজরাতের। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলিতে এখনও ব্যাপক ভাবে ডিজিটাল রেশন কার্ড ব্যবস্থা চালু করতে পারেনি প্রশাসন। ফলে সেখানে জালিয়াতির সূচক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এটি অনুঘটকের কাজ করছে বলে মনে করা হচ্ছে।

১১ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

অন্য দিকে, এ ব্যাপারে চোখে পড়ার মতো উন্নতি করেছে বিহার ও পশ্চিমবঙ্গের মতো রাজ্য। ২০১১-১২ আর্থিক বছরে বিহারে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য গায়েব হওয়ার পরিমাণ ছিল ৬৮.৭ শতাংশ। ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে তা ১৯ শতাংশের নেমে এসেছে। বাংলার ক্ষেত্রে ৬৯.৪ শতাংশ থেকে সূচক নেমেছে ৯ শতাংশে।

১২ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

এই তালিকায় প্রথম নাম বিজেপি-শাসিত রাজ্য উত্তরপ্রদেশের। সেখানে রেশন থেকে ৩৩ শতাংশ খাদ্যশস্য চুরি যাচ্ছে বলে সমীক্ষায় উল্লেখ করা হয়েছে। হিমাচল প্রদেশ, উত্তরাখণ্ড এবং মহারাষ্ট্রেও এর অঙ্ক যথেষ্ট বেশি বলে জানা গিয়েছে। সব জায়গাতেই খোলা বাজারে বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ভর্তুকিযুক্ত খাদ্যশস্য।

১৩ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

এ ব্যাপারে সমীক্ষকেরা বলেছেন, ‘‘সরকার রেশন কার্ডের সঙ্গে আধার সংযুক্ত করে দুর্নীতি আটকাতে চাইছে। এটা ভাল উদ্যোগ। কিন্তু শুধুমাত্র এই পদক্ষেপে কাজ হবে, এমনটা নয়। এর জন্য চাই কড়া নজরদারি।’’ জনবণ্টন ব্যবস্থার কাঠামোগত সংস্কারের কথাও রিপোর্টে বলা হয়েছে।

১৪ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

দুনিয়ার সর্ববৃহৎ জনবণ্টন ব্যবস্থা রয়েছে ভারতে। এর মাধ্যমে ৮০ কোটি দেশবাসীকে ভর্তুকি যুক্ত খাদ্যশস্য সরবরাহ করে থাকে সরকার। কেন্দ্র এবং রাজ্য একসঙ্গে মিলিত ভাবে এই কাজ করে থাকে।

১৫ ১৫
Ration fraud 28 percent of food grains never reached to beneficiaries government loss annually Rs 69000 crores

জনবণ্টন ব্যবস্থার দুর্নীতি নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে যে কোনও তথ্যই নেই, তা ঠিক নয়। জাতিয়াতি বন্ধ করতে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু করেছে সিবিআই। জালিয়াতির চক্র ভাঙতে দেশের বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশি অভিযানও চালিয়েছে এই কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি