ডিসেম্বর মাসে মুক্তি পাচ্ছে নায়িকার নতুন ছবি। সম্প্রতি তাঁর প্রেমজীবন নিয়েও চর্চা তুঙ্গে। দক্ষিণী তারকা বিজয় দেবেরাকোন্ডার সঙ্গে লাঞ্চ ডেটে যেতে দেখা গিয়েছে রশ্মিকা মন্দনাকে। খুব তাড়াতাড়ি দুই তারকা বিয়ে করবেন বলেও শোনা যাচ্ছে। চর্চা থেকে বাদ যাচ্ছেন না রশ্মিকার প্রাক্তনও, আংটিবদল হওয়ার পর যাঁর সঙ্গে বিয়ে ভেঙে গিয়েছিল নায়িকার।
২০১৫ সালে সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজয়ী হওয়ার পর রশ্মিকাকে অভিনয়ের প্রস্তাব দিয়েছিলেন দক্ষিণী অভিনেতা ঋষভ শেট্টি। ঋষভের পরিচালনায় রোম্যান্টিক কমেডি ঘরানার কন্নড় ছবি ‘কিরিক পার্টি’তে প্রথম অভিনয়ের সুযোগ পান রশ্মিকা।
‘কিরিক পার্টি’ ছবির প্রযোজনার দায়িত্বে ছিলেন ঋষভের ঘনিষ্ঠ বন্ধু রক্ষিত শেট্টি। ছবিতে প্রযোজনার পাশাপাশি অভিনয়ও করেন রক্ষিত। এই ছবিতে রক্ষিতের সঙ্গেই জুটি বাঁধতে দেখা যায় রশ্মিকাকে।
২০১৬ সালে মুক্তি পাওয়া ‘কিরিক পার্টি’ ছবিতে জুটি বাঁধতে না বাঁধতেই ক্যামেরার পিছনে সেই সম্পর্ক দানা বাঁধতে শুরু করে। কানাঘুষো শোনা যায়, শুটিং চলাকালীন রক্ষিতের সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন রশ্মিকা।
২০১৭ সালের জুলাই মাসে রক্ষিতের সঙ্গে আংটিবদল হয় রশ্মিকার। সেই সময় রশ্মিকার বয়স ছিল ২১ বছর এবং রক্ষিতের ৩৪ বছর। দু’জনের মধ্যে বয়সের তফাত ১৩ বছরের হলেও সেই পার্থক্যকে বিশেষ আমল দেননি তাঁরা।
আংটিবদলের অনুষ্ঠানে আত্মীয়স্বজন এবং ঘনিষ্ঠ বন্ধুবান্ধবকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন রশ্মিকা এবং রক্ষিত। আংটিবদলের পাশাপাশি কেকও কাটেন তাঁরা। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন আড়াই হাজারের বেশি অতিথি।
২০১৭ সালে ‘অঞ্জনি পুত্র’ এবং ‘চমক’ নামের দু’টি কন্নড় ছবিতে অভিনয় করেন রশ্মিকা। এক বছর পর তেলুগু ফিল্মজগতে পা রাখেন রশ্মিকা। দক্ষিণী তারকা নাগা শৌর্যের সঙ্গে ‘চলো’ নামের একটি তেলুগু ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। তবে রশ্মিকার ভাগ্য পরিবর্তন হয় বিজয় দেবেরাকোন্ডার হাত ধরার পর।
২০১৮ সালে মুক্তি পাওয়া ‘গীত গোবিন্দম’ ছবিতে বিজয়ের বিপরীতে জুটি বেঁধে অভিনয় করেন রশ্মিকা। ছবি মুক্তি পাওয়ার পর বিজয় এবং রশ্মিকার সম্পর্কের রসায়ন মনে ধরে যায় দর্শকের।
কানাঘুষো শোনা যায়, ‘গীত গোবিন্দম’ মুক্তি পাওয়ার পর রশ্মিকা একাধিক ছবিতে অভিনয়ের প্রস্তাব পেতে শুরু করেন। তরতর করে কেরিয়ারের সাফল্যের সিঁড়ি বেয়ে উঠতে থাকেন রশ্মিকা। তার পরেই আসে দুঃসংবাদ।
২০১৮ সালের সেপ্টেম্বর মাসে বিয়ে ভেঙে যায় রশ্মিকা এবং রক্ষিতের। শোনা যায়, দুই তারকার বাড়ি থেকে আংটিও ফিরিয়ে দেওয়া হয়। তার পর থেকেই নানা ভাবে কটাক্ষের শিকার হতে থাকেন রশ্মিকা।
ফিল্মজগতের একাংশের দাবি, ‘গীত গোবিন্দম’ মুক্তি পাওয়ার পর রাতারাতি সাফল্য পেয়ে যান রশ্মিকা। সেই সময় কেরিয়ার নিয়েই এগিয়ে যেতে চাইছিলেন তিনি। মতের অমিল হওয়ায় নাকি রক্ষিতের সঙ্গে বিয়ে ভেঙে যায় রশ্মিকার।
আবার অধিকাংশের দাবি, বিজয়ের সঙ্গে সম্পর্ক গাঢ় হয়ে যাওয়ার কারণেই নাকি বিয়ে ভেঙে দেন রশ্মিকা। তবে সম্পর্ক নিয়ে রশ্মিকা এবং রক্ষিত কেউই মুখ খোলেননি। বহু দিন ধরে কটাক্ষের শিকার হয়ে সমাজমাধ্যমে একটি পোস্ট করেন অভিনেত্রী।
পোস্ট করে রশ্মিকা লিখেছিলেন, ‘‘বহু দিন ধরে আমি নীরব ছিলাম। এত ধরনের গুজব রটছে যে আমি বিরক্ত হয়ে যাচ্ছি। আমি কাউকে দোষ দিচ্ছি না। আপনারা যা বিশ্বাস করছেন তা নিয়েই আলোচনা করছেন। আমি ঠিক-ভুল কিছুই বলব না। শুধু এতটুকুই বলার যে, আমাদের শান্ত মনে কাজ করতে দিন। রক্ষিত, আমি বা অন্য কেউ এমন আচরণ প্রত্যাশা করি না। আমি এটুকুই জানাতে চাই যে, আমি এখনও বহু দিন অভিনয় করব।’’
এক পুরনো সাক্ষাৎকারে রক্ষিত জানিয়েছিলেন যে, বিয়ে ভাঙার পরেও রশ্মিকার সঙ্গে যোগাযোগ রয়েছে তাঁর। এমনকি, রশ্মিকার কোনও ছবি সফল হলে রক্ষিত তাঁকে শুভেচ্ছাও জানান। রক্ষিত বলেছিলেন, ‘‘রশ্মিকা অনেক বড় স্বপ্ন দেখে। ওর স্বপ্নপূরণ হচ্ছে। আমার তা দেখে ভালই লাগে।’’
‘ডিয়ার কমরেড’, ‘গীত গোবিন্দম’-এর মতো প্রেমের ছবিতে একসঙ্গে কাজ করেছেন বিজয় এবং রশ্মিকা। একসঙ্গে জিমে যাওয়া থেকে শুরু করে চুপিচুপি শহর ছাড়া— বিজয়-রশ্মিকার কীর্তিকলাপ নিয়ে চর্চার শেষ নেই। একসঙ্গে নানা জায়গায় যেতে দেখা গিয়েছে নায়ক-নায়িকাকে।
সব ছবি: সংগৃহীত।