শাহরুখ খান কে, ‘পাঠান’ ছবিতে অভিনয়ের আগে তা জানতেই না! এমনটাই দাবি করেছেন, ছবিতে রুশ গুপ্তচরের ভূমিকায় অভিনয় করা র্যাচেল অ্যান মুলিন্স।
শাহরুখের নতুন ছবি ‘পাঠান’ দিয়ে বলিউডে আত্মপ্রকাশ করেছেন হলিউড অভিনেত্রী র্যাচেল। তবে শাহরুখ আদপে কে, তা নিয়ে তাঁর বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না বলেও অভিনেত্রী জানিয়েছেন।
সংবাদমাধ্যম ‘হিন্দুস্তান টাইমস’-এর সঙ্গে সাক্ষাত্কারে র্যাচেল তাঁর ভারত এবং বলিউডে যাত্রা করার বিষয়ে এবং পাঠান-এ কাজ করার অভিজ্ঞতা নিয়ে কথা বলেছেন।
‘হ্যাপি এন্ডিংস’ এবং ‘দ্য লিগ’-এর মতো সিরিজ়ে অভিনয় করে পরিচিতি পেয়েছেন র্যাচেল। একাধিক হলিউড ছবিতেও কাজ করেছেন। যার মধ্যে রয়েছে ‘নেবারস্’ এবং ‘এনটোরেজ’ ছবি। এর পরই সোজা বলিউডে এসে ভাগ্য পরীক্ষা করতে শুরু করেছেন র্যাচেল।
পাঠান ছবিতে র্যাচেল এক রাশিয়ান গুপ্তচর অ্যালিসের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন।
র্যাচেল জানিয়েছেন, তিনি যখন ভারতে পা দেন, তখন তিনি বলিউডে কী ধরনের ছবি হয়, সে সম্পর্কে কিছুই জানতেন না। কিন্তু পাঠান-এ কাজ করতে এসে তিনি ধীরে ধীরে বলিউডের স্তর বুঝতে পারেন বলে দাবি করেছেন।
র্যাচেলের দাবি, দীপিকা পাড়ুকোন পাঠানে অভিনয় করছেন দেখে তাঁর মনে হয়েছিল যে, এটি একটি বড় মাপের সিনেমা হতে চলেছে।
র্যাচেলের কথায়, “অভিনয় করার সুযোগ পাওয়ার পরও আমি পাঠান সম্পর্কে কিছুই জানতাম না। কেন সিনেমার নাম ‘পাঠান’ রাখা হল, তা নিয়েও অবগত ছিলাম না। তবে যখন আমি মুম্বইয়ের যশ রাজ স্টুডিওতে শুটিংয়ের সেটে রাখা একটি জামাকাপড়ের বাক্সে দীপিকা পাড়ুকোনের নাম দেখি, তখন বুঝতে পারি যে এটি খুব বড় ছবি হতে চলেছে।’’
শাহরুখ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে, র্যাচেল যোগ করেন, ‘‘একসঙ্গে কাজ করার আগে পর্যন্ত আমি ওঁর (শাহরুখ) ব্যাপারে জানতাম না। আমি এর জন্য লজ্জিত।’’
র্যাচেল জানিয়েছেন, শাহরুখ কে, তা তাঁকে বুঝতে সাহায্য করেন এক জন সহকারী পরিচালক। ওই সহকারী পরিচালক তাঁকে জানান যে, শাহরুখ এক জন বড় মাপের অভিনেতা। এর পর সিনেমায় কাজ করতে করতে তিনি শাহরুখের খ্যাতির বিষয়ে জানতে পারেন।
অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেওয়ার সময় র্যাচেল বলেন, ‘‘শুটিংয়ের সময় আমি শাহরুখের সঙ্গে সুন্দর দিন কাটিয়েছি। আমাদের দু’জনেরই জন্মদিন একই দিনে।’’
এই সিনেমায় কী ভাবে অভিনয়ের সুযোগ পেলেন বিদেশিনী র্যাচেল? বলিউডে যাত্রা শুরুর কথা স্মরণ করে র্যাচেল বলেন, “আমার এজেন্ট রবি আহুজা আমাকে পাঠানের অডিশনের কথা জানিয়েছিল। আমি তখন মলদ্বীপে ছিলাম। রবির ফোন পাওয়ার পরই আমি মুম্বই আসার তোড়জোড় শুরু করি। নির্দিষ্ট দিনে অডিশনও দিয়েছিলাম। এর কিছু দিন পর আমাকে ফোন করে জানানো হয় যে আমি সুযোগ পেয়েছি।”
পাঠান মুক্তির পর থেকে তিনি কী রকম প্রতিক্রিয়া পেয়েছেন সে সম্পর্কেও কথা বলেছেন র্যাচেল। তিনি বলেন, “এই ছবি মুক্তি পেতেই আমি অনেক ভালবাসা পেয়েছি। বিশ্বজুড়ে অনুরাগীদের প্রতিক্রিয়া দেখে আমি স্তম্ভিত হয়ে গিয়েছি।”
হলিউড এবং বলিউডের পার্থক্য নিয়েও মন্তব্য করেছেন র্যাচেল। তিনি জানান বেশ কয়েকটি জিনিসে সাদৃশ্য থাকলেও বাজেট এবং প্রতিভার স্তর হলিউড এবং বলিউডের মধ্যে মূল পার্থক্য।
র্যাচেল বলেন, ‘‘বলিউডে সবাই সমান ভাবে নাচ-গান-অভিনয় করতে পারেন। হলিউডে এটি বিরল। হলিউডের কাজ করার অনেক কঠোর নিয়ম রয়েছে। বলিউডে এমনটা নেই।’’
র্যাচেল বলেছেন, ‘‘আমি খুব খুশি যে হলিউড কাজ বন্ধ করে আমি বলিউডে যাত্রা শুরু করেছি। এখানে মানুষের সঙ্গে ভাল ব্যবহার করা হয় এবং আমি ভাগ্যবান যে বলিউড আমাকে গ্রহণ করছে।”
এর আগেও ভারতে এসে কাজ করেছেন র্যাচেল। তবে তখন তিনি ছিলেন পরিচালকের ভূমিকায়। তাঁর কথায়, “২০১৬ সালে আমি অ্যাসিড হামলা নিয়ে তথ্যচিত্রের কিছু দৃশ্য শুট করতে ভারতে এসেছিলাম। এই তথ্যচিত্রের পরিচালক এবং প্রযোজক উভয়ই আমি ছিলাম। তখনই কিছু মানুষের সঙ্গে আমার পরিচয় হয়।’’
এর পর বেশ কয়েক বছর তিনি হলিউডের কাজে ব্যস্ত হয়ে যান বলে জানিয়েছিলেন র্যাচেল। তবে করোনা আবহে লকডাউনের সময় লস অ্যাঞ্জেলেসের বিনোদন ব্যবসা বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে তিনি বিকল্পের কথা ভাবতে শুরু করেন। সিদ্ধান্ত নেন বলি ছবিতে কাজ করবেন।
টেক্সাসের ম্যাককিনেলিতে ‘ফ্যাশন মার্চেন্ডাইজিং’ নিয়ে পড়াশোনা করেছেন র্যাচেল। মাত্র ১২ বছর বয়সে তিনি মডেল হিসাবে কাজ করা শুরু করেন।
পাঠান ছাড়াও, সম্প্রতি ‘আই অ্যাম ডাইং আপ হিয়ার’-এর সিজন-২ এবং ভারতীয় ওয়েব সিরিজ ‘চুৎজ়পা’-তে কাজ করেছেন র্যাচেল। তাঁর অভিনীত ‘এম্পায়ার কুইন’ নামে একটি ছবিও মুক্তির অপেক্ষায় আছে।