maharaja the saviour of polish refugee

পোল্যান্ডের ‘দেবদূত’! ব্রিটিশদের চোখে চোখ রেখে হাজার হাজার ইউরোপীয়কে আশ্রয় দেন পরাধীন ভারতের মহারাজা

৬৪০ জন পোলিশ নাগরিকের জীবনে ‘ঈশ্বরের দূত’ হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন পরাধীন ভারতের নওয়ানগরের তৎকালীন মহারাজা, জামসাহেব দিগ্বিজয় সিংহজি রঞ্জিৎ সিংহজি জাডেজা।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ২৬ অগস্ট ২০২৪ ০৮:১৬
০১ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

সম্প্রতি দু’দিনের পোল্যান্ড সফরে গিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। পোল্যান্ডের রাজধানী ওয়ারশ পৌঁছে সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন মোদী। পোল্যান্ড সফরের প্রথম দিনে বুধবার নওয়ানগরের মহারাজা দিগ্বিজয় সিংহজি রঞ্জিত সিংহজি জাডেজার স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধা অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী।

০২ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

কে এই নওয়ানগরের মহারাজা দিগ্বিজয় সিংহজি? কেন পোল্যান্ডের মতো দেশে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে তৈরি হয়েছে সৌধ? কী কারণে জামসাহেবকে আজও ভোলেনি পোল্যান্ড?

০৩ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

নওয়ানগরের মহারাজা দিগ্বিজয় সিংহজি, যিনি মূলত জামসাহেব নামে পরিচিত, ছিলেন প্রখ্যাত ক্রিকেটার রঞ্জিত সিংহজির ভাইপো। নিজের কোনও সন্তান না থাকায় দিগ্বিজয় সিংহজিকে দত্তক নিয়েছিলেন রঞ্জিত সিংহজি।

Advertisement
০৪ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে রাশিয়ার সাইবেরিয়ার ক্যাম্প থেকে পালিয়ে আসা ৭০০ জন, মতান্তরে ৬৪০ জন পোলিশ নাগরিকের জীবনে ‘ঈশ্বরের দূত’ হয়ে এগিয়ে এসেছিলেন পরাধীন ভারতের নওয়ানগরের তৎকালীন মহারাজা, জামসাহেব দিগ্বিজয় সিংহজি রঞ্জিৎ সিংহজি জাডেজা।

০৫ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

১৮৯৫ সালের ১৮ সেপ্টেম্বর সারোদরে জন্মগ্রহণ করেন দিগ্বিজয়। প্রথমে ম্যালভার্ন কলেজ থেকে স্নাতক এবং পরবর্তী কালে লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চশিক্ষা শেষ করেন মহারাজা।

Advertisement
০৬ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

তিনি ১৯১৯ সালে তাঁর সামরিক কর্মজীবন শুরু করেন এবং ১৯৪৭ সালে লেফ্‌টেন্যান্ট জেনারেল পদে অবসর নেন।

০৭ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

তিনি যে হেতু তাঁর কাকা রঞ্জিত সিংহজির উত্তরাধিকারী ছিলেন, তাই ১৯৩৩ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত নওয়ানগরের (অধুনা জামনগর) মহারাজা হিসাবেই পরিচিত ছিলেন তিনি। ১৯৩৫ সালে তিনি নাইট উপাধি লাভ করেন।

Advertisement
০৮ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

১৯৩৯ সালের ১ সেপ্টেম্বর পোল্যান্ড আক্রমণ করেছিল হিটলারের জার্মানি। ১৭ সেপ্টেম্বর, পোল্যান্ড আক্রমণ করেছিল সোভিয়েত রাশিয়াও। যৌথ আক্রমণের ফলে লক্ষ লক্ষ পোলিশ পুরুষ, মহিলা, শিশু বন্দি হয় রাশিয়া ও জার্মানির হাতে।

০৯ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

তাদের হাতে বন্দি পোল্যান্ডবাসীদের রাশিয়া পাঠিয়েছিল সাইবেরিয়ায়। বন্দি পোলিশদের দিয়ে সাইবেরিয়ায় শ্রমিকের কাজ করাত রাশিয়া।

১০ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

সবল পুরুষদের বেছে নিয়ে একটি বাহিনী তৈরি করে হিটলারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের পরিকল্পনা নেয় রাশিয়া। এঁদের মধ্যে ছিলেন ডাক্তার, অধ্যাপক, শিক্ষক, কেউ বা কারখানার শ্রমিক। এঁদের বেশির ভাগ যুদ্ধ করা তো দূরে থাক, জীবনে বন্দুকও ছুঁয়ে দেখেননি।

১১ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

কিন্তু ১৯৪১ সালে জার্মানির হামলায় সোভিয়েত ইউনিয়ন খানিক বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে পোল্যান্ডের কিছু বাসিন্দাকে রাশিয়া ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।

১২ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

সাইবেরিয়ার কড়া ঠান্ডা থেকে বাঁচার তাগিদে এই বাসিন্দারা অনেক ইউরোপীয় এবং এশীয় দেশে বাসস্থানের খোঁজ করলেও বেশির ভাগ দেশই তাঁদের গ্রহণ করতে অস্বীকার করে।

১৩ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

বহু দেশের দ্বারস্থ হয়ে ১৯৪১ সালে তাঁদের জাহাজ অবশেষে বম্বে (বর্তমানে মুম্বই)-র একটি বন্দরে পৌঁছয়। কিন্তু শাসক ব্রিটিশ তাঁদের ভারতে ঢুকতে বাধা দেয়।

১৪ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

ঠিক এই সময়েই পোলিশ শরণার্থী ও ব্রিটিশদের মাঝখানে ঢাল হয়ে দাঁড়ান জামসাহেব দিগ্বিজয় সিংহজি। ব্রিটিশ সরকারের চোখে চোখ রেখে তিনি সহায় সম্বলহীন পোলিশ নারী, শিশুদের জন্য লড়াই চালিয়ে যান।

১৫ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

নিজের মালিকানায় থাকা রোজ়ি বন্দরে শরণার্থীদের জাহাজ নোঙরের আদেশ দেন এই সিংহহৃদয় মহারাজা। নির্দিষ্ট সময়ে রোজ়ি বন্দরে নোঙর ফেলেছিল পোলিশ শরণার্থীদের জাহাজ।

১৬ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

রোজ়ি বন্দরের মাটিতে পা দেওয়ার পরই পোলিশ শরণার্থীরা পেয়েছিলেন খাদ্য-বস্ত্র-বাসস্থানের ব্যবস্থা। বালাচাদি, ভালিভাদে (কোলাপুর), বান্দ্রা (মুম্বই) ও পঞ্চগনিতে প্রচুর শরণার্থী শিবির তৈরি করেছিলেন জামসাহেব।

১৭ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

মহারাজা ব্যক্তিগত ভাবে ক্যাম্পের তত্ত্বাবধান করতেন। তাঁর এই পদক্ষেপ সেই সময় অনেককে অনুপ্রাণিত করেছিল। এর ফলে, হাজার হাজার পোলিশ শিশু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ভয়াবহতা থেকে রক্ষা পেয়েছিল।

১৮ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

১৯৪২ থেকে ১৯৪৮ সাল পর্যন্ত ভারতে আশ্রয় নিয়েছিলেন প্রায় ২০ হাজার পোলিশ শরণার্থী। তার মধ্যে ছিল হাজার পাঁচেক অনাথ শিশু।

১৯ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

১৯৪২ সালে জামনগর-বালাচাদীতে পোলিশ শিশুদের জন্য একটি ক্যাম্প তৈরি করেছিলেন। সেখানে ছিল স্কুল, হাসপাতাল, লাইব্রেরি এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা।

২০ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

উদারহৃদয় এই মহারাজার ছিল গয়নার নেশা। এই নেশা তাঁর কাকার রঞ্জিত সিংহজির থেকে পাওয়া। দিগ্বিজয় সিংহজি কাকার উত্তরাধিকার সূত্রে একটি বহুমূল্য নেকলেস পেয়েছিলেন।

২১ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

নেকলেসটির মাঝখানে বসানো ছিল কুইন অফ হল্যান্ডের বিখ্যাত একটি হিরে, যা ১০৫ ক্যারাটেরও বড় ছিল। গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে ওই নেকলেস পরতেন তিনি। একাধিক ছবিতেও ওই নেকলেস পরে তাঁকে দেখা গিয়েছে।

২২ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

দিল্লিতে হোটেল, বস্ত্র ব্যবসা, সিমেন্ট এবং উড়ান পরিষেবার ব্যবসা থেকে যা আয় হত, তার অনেকটাই গয়না কিনতে খরচ করতেন তিনি।

২৩ ২৩
How Digvijaysinhji Maharaja Jam Sahib became the saviour of polish refugee

দিগ্বিজয় সিংহজির পরিবারের সংগ্রহে বিরল প্রকৃতির কৃষ্ণবর্ণ মুক্তা, খোদাই করা পান্না এবং চুনিখচিত একাধিক নেকলেস ছিল। হলুদ রঙের একটি বিশেষ হিরের তৈরি গয়নাও ছিল তাঁদের সংগ্রহে, সেটিকে ‘টাইগার্স আই’ বলা হত।

—সব ছবি সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি