Terror Attack

চাপ চাপ রক্ত আর লাশের স্তূপ, জঙ্গি হামলায় ৬০০ জনকে হারিয়ে প্রত্যন্ত দেশ যেন মৃত্যুপুরী!

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ বুরফিনা ফাসোতে ভয়ঙ্কর জঙ্গি হামলা। নির্বিচারে গুলি করে প্রায় ৬০০ জনকে খুন করল আল-কায়দা অনুমোদিত জেএনআইএম নামের সন্ত্রাসী সংগঠন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০৫ অক্টোবর ২০২৪ ১৩:৩৯
০১ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

ফের নারকীয় হত্যাকাণ্ড চালাল কুখ্যাত জঙ্গি সংগঠন ‘আল-কায়দা’ অনুমোদিত ‘জামা’ত নুসরাত আল-ইসলাম ওয়াল-মুসলিমিন’ বা জেএনআইএম । কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অন্তত ৬০০ জনকে খুন করল আমেরিকার পয়লা নম্বর শত্রু সন্ত্রাসীদের শাখা সংগঠন।

০২ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

জেএনআইএমের আচমকা এই হামলায় রক্তে ভিজেছে বুরফিনা ফাসোর মাটি। পশ্চিম আফ্রিকার দেশটির সাম্প্রতিক ইতিহাসে এতো বড় ‘জিহাদি’ হামলা আর হয়নি।

০৩ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলির প্রতিবেদন অনুযায়ী, চলতি বছরের ২৪ অগাস্ট বুরফিনা ফাসোর বারসালোঘো এলাকায় অতর্কিতে হামলা চালায় জেএনআইএমের জঙ্গিরা। সন্ত্রাসবাদীদের গুলিতে ঝাঁঝরা হয়ে যাওয়া নিরীহ বাসিন্দাদের অধিকাংশই শিশু ও মহিলা বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement
০৪ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

পশ্চিম আফ্রিকার বিস্তীর্ণ এলাকায় রীতিমতো দাপিয়ে বেড়ায় দু’টি সন্ত্রাসবাদী সংগঠন। আল কায়দা ছাড়াও এখানে শক্ত ঘাঁটি গড়ে তুলেছে ইসলামিক স্টেট। স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে হত্যালীলা চালায় তারা।

০৫ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

সূত্রের খবর, জঙ্গি হামলা থেকে বাঁচতে বারসালোঘোর বাসিন্দারা পরিখা খুঁড়ছিলেন। তখনই বাইকে করে এসে গোটা এলাকা ঘিরে ফেলে জেএনআইএমের জঙ্গিরা। তার পর স্বয়ংক্রিয় আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে চলে নির্বিচারে গুলি।

Advertisement
০৬ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

বুরফিনা ফাসোয় হওয়া ভয়ঙ্কর এই জঙ্গি হামলায় মৃতের সংখ্যা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের অনুমান, এতে প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০০ জন। অন্য দিকে জঙ্গিরা বলেছে, ৩০০ জন ‘যোদ্ধা’র ভবলীলা সাঙ্গ করেছে তারা।

০৭ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

আমেরিকার জনপ্রিয় সংবাদসংস্থা ‘সিএনএন’-র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই হামলায় মোট ৬০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। ফরাসি সরকারের নিরাপত্তা মূল্যায়ন সংক্রান্ত একটি রিপোর্টকে উদ্ধৃত করে এই পরিসংখ্যান দিয়েছে সিএনএন।

Advertisement
০৮ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

জঙ্গি হামলার পর ঘটনাস্থলে গেলে আমেরিকার সংবাদমাধ্যমকে এর বিবরণ দিয়েছেন বারসালোঘোর এক বাসিন্দা। তাঁর দাবি, সেনাবাহিনীর তত্ত্বাবধানে পরিখা খননের জন্য ১২ জনের এক একটি দল তৈরি করা হয়েছিল। তেমনই একটি দলে তিনিও ছিলেন।

০৯ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

সিএনএনকে ওই ব্যক্তি জানিয়েছেন, সকাল ১১টা নাগাদ শহর থেকে প্রায় ৪ কিলোমিটার দূরে একটি পরিখার মধ্যে ছিলেন তিনি। তখনই প্রথম গুলির শব্দ শোনা গিয়েছিল।

১০ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

‘‘আমি পালানোর জন্য পরিখার মধ্যে হামাগুড়ি দিতে শুরু করলাম। কিন্তু মনে হচ্ছিল, জঙ্গিরা পরিখায় নেমে আমাকে অনুসরণ করছে। কোন মতে হামাগুড়ি দিয়ে সেখান থেকে বেরিয়ে আসি। পরিখার যে মুখটা দিয়ে বেরিয়েছিলাম, সেখানেই রক্তাক্ত দেহ পড়েছিল। মাটির উপর সর্বত্রই চাপ চাপ রক্ত! সে এক ভয়ঙ্কর দৃশ্য।’’ সিএনএনকে বলেছেন বারসালোঘোর ওই বাসিন্দা।

১১ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

স্থানীয়দের দাবি, জঙ্গিরা নির্বিচারে গুলি চালাতে থাকলে পরিখার মধ্যে হুড়োহুড়ি আর চিৎকার শুরু হয়েছিল। সেখান থেকে হাতে গোনা কয়েকজন পাশের ঝোপে লুকোতে পেরেছিলেন। একমাত্র তাঁরাই প্রাণ বাঁচাতে সক্ষম হন।

১২ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

বারসালোঘোর আরেক বাসিন্দা জানিয়েছেন, জঙ্গিরা সারা দিন ধরে হত্যালীলা চালিয়েছিল। তাতে পরিবারের দুই সদস্যকে হারিয়েছেন তিনি। সন্ত্রাসীরা চলে গেলে এদিক-ওদিকে পড়ে থাকা মৃতদেহগুলিকে শেষকৃত্যের জন্য এক জায়গায় জড়ো করতে এলাকাবাসীদের তিন দিন সময় লেগেছিল বলে জানা গিয়েছে।

১৩ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

ঘটনার বিবরণ দিতে গিয়ে চোখের জল ধরে রাখতে পারেননি স্থানীয় এক মহিলা। তাঁর কথায়, ‘‘তিন দিন ধরে টেন টেনে প্রিয়জনদের মৃতদেহ এক জায়গায় নিয়ে আসা যে কতটা যন্ত্রণাদায়ক ছিল, তা বলে বোঝাতে পারব না। ভয়ে আর কান্না বুকে চেপে দেহগুলিকে সমাধিস্থ করি। মাটিতে লাশের সারি। আর আপনি প্রিয়জনকে কোনমতে কবর দিচ্ছেন। এর চেয়ে খারাপ আর কি হতে পারে!’’

১৪ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

সূত্রের খবর, জঙ্গিদের থেকে বাঁচতে এলাকাবাসীদের একটা লম্বা পরিখা খোঁড়ার নির্দেশ দিয়েছিল বুরফিনা ফাসোর ফৌজ। যা নিয়ে হুঁশিয়ারি দিয়েছিল সন্ত্রাসীরা। কিন্তু সেনার আশ্বাস থাকায় পরিখা খোঁড়ার সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হটেননি এলাকাবাসীরা। যার মূল্য প্রাণের বিনিময়ে দিতে হল তাঁদের।

১৫ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

প্রতিবেশী দেশ মালি থেকে সন্ত্রাসবাদের ক্যানসার ঢুকেছে বুরফিনা ফাসোতে। ২০১৫ সালে আল-কায়দা ও ইসলামিক স্টেট পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটিতে পা রাখে। পরবর্তী সময়ে স্থানীয় বিদ্রোহীদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সংগঠন মজবুত করেছে বিশ্ব ত্রাস দুই জঙ্গি গোষ্ঠী।

১৬ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

বুরফিনা ফাসোতে সংগঠনকে জালের মতো ছড়িয়ে দিতে জেএনআইএম তৈরি করে আল-কায়দা। ২০১৫ সাল থেকেই যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে নেমেছে বুরফিনা ফাসোর ফৌজ। ওই বছর থেকে শুরু করে এখনও পর্যন্ত জঙ্গি হামলায় পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে প্রাণ হারিয়েছেন ২০ হাজারের বেশি নিরীহ মানুষ।

১৭ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

বুরফিনা ফাসোর আর্থিক অবস্থা মোটেই ভাল নয়। এটি বিশ্বের অন্যতম গরীব দেশ। ঘন ঘন জঙ্গি হামলায় গৃহযুদ্ধের মতো পরিস্থিতি তৈরি হওয়ায় এতে রাজনৈতিক অস্থিরতা রয়েছে।

১৮ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

আল-কায়দার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন ওসামা বিন লাদেন। তার নেতৃত্বেই ২০০১ সালের ১১ সেপ্টেম্বর আমেরিকার টুইন টাওয়ার গুঁড়িয়ে দেয় এই জঙ্গি গোষ্ঠীর সন্ত্রাসীরা। হামলা হয় সেনা সদর দফতর পেন্টাগন-সহ একাধিক জায়গাতেও।

১৯ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

ওই ঘটনার পর আল-কায়দার বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিল ওয়াশিংটন। ২০১১ সালে লাদেনকে পাকিস্তানের অ্যাবটাবাদে নিকেশ করে আমেরিকার ‘নেভি সিল’ কমান্ডো বাহিনী। সফল সেই অভিযানের নাম ছিল ‘অপারেশন নেপচুন স্ফিয়ার’।

২০ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

লাদেনের মৃত্যুর পর আল-কায়দার কোমর ভেঙে গিয়েছে বলে মনে করা হয়েছিল। কিন্তু, সেটা যে একেবারেই হয়নি বুরফিনা ফাসোর হামলাই তার প্রমাণ।

২১ ২১
Terror Attack 600 people were killed by Al-Qaeda affiliated Militant Group in West African country

আল-কায়দার মতোই পশ্চিম এশিয়ার আরেক জঙ্গি সংগঠন ইসলামিক গ্রুপ আমেরিকার দুশমন নম্বর টু। গোয়েন্দাদের দাবি, চলতি বছরে আল-কায়দা অনুমোদিত ও ইসলামিক গ্রুপের সন্ত্রাসীরা মিলিয়ে এখনও পর্যন্ত ৩ হাজার ৮০০ জন নিরীহ মানুষকে হত্যা করেছে।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি