Chinese Air Defence

নেটোর দরজায় ভয়ঙ্কর মারণাস্ত্র মোতায়েন! আমেরিকার ঘাড়ে পড়ল ড্রাগনের গরম নিঃশ্বাস

নেটোর দরজায় চিনা হাতিয়ার মোতায়েনে ঘুম উড়েছে আমেরিকার। একসঙ্গে ১২টি ক্ষেপণাস্ত্র এবং ছ’টি যুদ্ধবিমানকে ওড়াতে সক্ষম ড্রাগনের এই মারণাস্ত্র।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:০৪
০১ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

হাতিয়ারের বাজারে নতুন খেলোয়াড়ের আবির্ভাব। যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া বা ফ্রান্সের পাশাপাশি সেখানে এ বার পা জমাতে শুরু করেছে ড্রাগন। আমেরিকার শক্তিজোট নেটোর নাকের ডগায় অস্ত্র সরবরাহ করছে লালফৌজ। শুধু তা-ই নয়, তাঁদের দেওয়া হাতিয়ারের ভূয়সী প্রশংসা করেছে সেখানকার সরকার। ফলে অস্বস্তি বেড়েছে ওয়াশিংটন-সহ পশ্চিমি বিশ্বের।

০২ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

দক্ষিণ ইউরোপের বলকান রাষ্ট্র সার্বিয়া। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সূচনায় যার নাম ওতপ্রোত ভাবে জড়িয়ে রয়েছে। ২১ শতকে সেখানেই মোতায়েন হয়েছে চিনা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা (এয়ার ডিফেন্স সিস্টেম)। পোশাকি নাম ‘এফকে-৩’। এই হাতিয়ারটিকে নিয়েই বড় ঘোষণা করেছে বেলগ্রেড। বলা বাহুল্য, এর পরই আমেরিকা-সহ পশ্চিমি বিশ্বের রক্তচাপ বাড়তে শুরু করেছে।

০৩ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

বিগত বছরের ৩০ ডিসেম্বর সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জারি করা প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চিনের তৈরি ‘এফকে-৩’ এয়ার ডিফেন্স দেশের আকাশকে ভাল ভাবেই সুরক্ষা প্রদান করছে। এর সাহায্যে বিমানবাহিনীকে আরও শক্তিশালী এবং উন্নত করা গিয়েছে। উল্লেখ্য, বেজিংয়ের ‘পিপলস্ লিবারেশন আর্মি’র (পিএলএ) হাতে রয়েছে ‘এইচকিউ-২২’ ভূমি থেকে আকাশ ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা। ‘এফকে-৩’ এর রফতানিযোগ্য সংস্করণ বলে জানা গিয়েছে।

Advertisement
০৪ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

সূত্রের খবর, সার্বিয়ায় রফতানি করা চিনা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটিতে রয়েছে কম্যান্ড সেন্টার, মিসাইল লঞ্চার, রাডার এবং লজিস্টিক সাপোর্ট ভেহিকল। শত্রুর ছোড়া ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝ আকাশে ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে এই এয়ার ডিফেন্সের। এটি দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে সক্ষম। প্রতিরক্ষা বিশ্লেষকদের একাংশের দাবি, এর সঙ্গে রুশ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ‘এস ৩০০’-এর বেশ মিল রয়েছে।

০৫ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

২০১৯ সালে ‘এফকে-৩’ সিস্টেম কিনতে বেজিংয়ের সঙ্গে প্রতিরক্ষা চুক্তি করে বেলগ্রেড। ঠিক তার পরের বছর (পড়ুন ২০২০) এই ইস্যুতে সার্বিয়াকে সতর্ক করে আমেরিকা। ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সদস্যপদ পেতে হলে এই সিদ্ধান্ত থেকে বেলগ্রেডকে সরে আসতে বলে ওয়াশিংটন। পাশাপাশি, হাতিয়ারের নাম নেটোভুক্ত দেশগুলির সমকক্ষ করতে বলা হয়। যদিও যুক্তরাষ্ট্রের এই হুমকিকে একেবারেই আমল দেয়নি বেলগ্রেড।

Advertisement
০৬ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

২০২২ সালে ‘ওয়াই-২০’ পরিবহণ বিমানে ‘এফকে-৩’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা সার্বিয়াকে সরবরাহ করে চিন। সাম্প্রতিক অতীতে ইউরোপে এত বড় আকারের হাতিয়ারের রফতানি আর করেনি বেজিং। সার্বিয়াই মহাদেশটির প্রথম রাষ্ট্র, যারা ড্রাগনের এয়ার ডিফেন্স সিস্টেমের উপর ভরসা রাখল।

০৭ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

প্রতিরক্ষা বিশেষজ্ঞদের কেউ কেউ আবার ‘এফকে-৩’-কে আমেরিকার ‘প্যাট্রিয়ট’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করেছেন। অনেকে একে রুশ ‘এস-৪০০’-এর ছোট সংস্করণ বলে মনে করেন। হাতিয়ারটি কত দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম, তা নিয়ে অবশ্য মতপার্থক্য রয়েছে। প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে এই সংক্রান্ত একটি শব্দও খরচ করেনি বেলগ্রেড।

Advertisement
০৮ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

সার্বিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রক জানিয়েছে, ‘এফকে-৩’-এর সঙ্গে একাত্ম হতে প্রতি দিনই চলছে অনুশীলন। এয়ার ডিফেন্স মিসাইল ব্রিগেডের ২৫০তম ব্যাটালিয়নের হাতে রয়েছে এর মোতায়েন এবং ব্যবহারের ক্ষমতা। এর সর্বোচ্চ অপারেশনাল কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে ক্রমাগত পর্যবেক্ষণ এবং কর্মক্ষমতা মূল্যায়নের কাজ চলছে।

০৯ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

সার্বিয়া বিমানবাহিনীর পদস্থ কর্তা স্টেফান মানিচ ‘এফকে-৩’ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে একটি মাইলফলক বলে উল্লেখ করেছেন। এর কার্যকারিতা সম্পর্কে তিনি বলেছেন, ‘‘চিনা এয়ার ডিফেন্সে অ্যান্টি জ্যামিং প্রযুক্তি রয়েছে। এটি ক্ষেপণাস্ত্রের আক্রমণ থেকে রাডারকে আলাদা করে একটা সুরক্ষা দিয়ে থাকে। এক সঙ্গে ১২টি ক্ষেপণাস্ত্রে এবং ছ’টি যুদ্ধবিমানকে মাঝ আকাশে ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে এফকে ৩-এর। এই ধরনের অন্য ব্যবস্থাগুলির চেয়ে এর ফায়ার পাওয়ার অনেকটাই বেশি।’’

১০ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

স্টেফান জানিয়েছেন, ‘এফকে-৩’ সরবরাহের আগে সার্বিয়ার বায়ুসেনার একটি দল ড্রাগনল্যান্ডে গিয়েছিল। সেখানে এই হাতিয়ার চালানো এবং এর রক্ষণাবেক্ষণের প্রশিক্ষণ পান তাঁরা। প্রযুক্তিগত দিক থেকে চিনা আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাটিকে যথেষ্ট জটিল বলে উল্লেখ করেছেন তিনি।

১১ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

বেলগ্রেডের দাবি, সরকারি ভবন এবং গুরুত্বপূর্ণ সেনাছাউনির নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে ‘কেএফ-৩’ এয়ার ডিফেন্সকে মোতায়েন করা হয়েছে। চিনের সরকারি সংবাদ সংস্থা ‘গ্লোবাল টাইমস্’-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, ১০০ কিলোমিটারের মধ্যে শত্রুবিমান, কপ্টার বা ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রকে ধ্বংস করতে সক্ষম এই হাতিয়ার। ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রকে এটি আটকাতে পারবে কি না, তার উল্লেখ সেখানে করা হয়নি।

১২ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

আমেরিকার প্রতিরক্ষা গবেষকদের দাবি, ‘এফকে-৩’র ক্ষেপণাস্ত্রগুলি শব্দের ছ’গুণ গতিতে ছুটতে সক্ষম। অর্থাৎ এর গতিবেগ ছয় ম্যাক। ‘এফকে-৩’ এবং ‘এইচকিউ-২২’, দু’টিতেই একটি রাডার এবং তিনটি করে ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চার রয়েছে। প্রতিটি লঞ্চারে রয়েছে চারটি করে ইন্টারসেপ্টার ক্ষেপণাস্ত্র।

১৩ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

দ্বিতীয়ত, এই আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার পুরোটাই গাড়ির উপর বসানো। ফলে একে এক জায়গা থেকে অপর জায়গায় প্রয়োজন মতো সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুবিধা রয়েছে। ক্ষেপণাস্ত্র লঞ্চারগুলিকে কৌণিক ভাবে তৈরি করে ড্রাগনের প্রতিরক্ষা সংস্থা। এতে শত্রুর ছোড়া ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রকে মাঝ আকাশে ধ্বংস করা অনেক বেশি সহজ হবে বলে স্পষ্ট করেছে বেজিং।

১৪ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

চিনের যুক্তি, বর্তমানে ক্রুজ় ক্ষেপণাস্ত্রগুলি দিয়ে প্রয়োজন মতো নিশানা বদল করে হামলা চালানো যায়। কৌণিক অবস্থায় না-থাকলে ক্ষেপণাস্ত্র ইন্টারসেপ্টার দিয়ে সেগুলিকে চিহ্নিত করে ধ্বংস করা সম্ভব নয়। তা ছাড়া এর জ্যামিং ব্যবস্থা অনায়াসেই শত্রুর যুদ্ধবিমান বা কপ্টারকে বিপদে ফেলবে বলে দাবি করেছে বেজিং।

১৫ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

সার্বিয়ার বিমানবাহিনী ‘এফকে-৩’ ব্যবহার করায় আমেরিকার নেতৃত্বাধীন নেটোভুক্ত দেশগুলির কপালে পড়েছে চিন্তার ভাঁজ। তাদের আশঙ্কা, এতে যে রাডার সিস্টেম রয়েছে, তা ব্যবহার করে বেলগ্রেড আনায়াসেই নেটোর লড়াকু বিমানের গতিবিধির উপর নজর রাখতে পারছে। যুদ্ধের সময়ে এটি বিপদের কারণ হতে পারে বলে মনে করছে তারা।

১৬ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

সম্প্রতি বর্ষশেষের ভাষণে তাইওয়ান নিয়ে ফের হুমকি দিয়েছেন চিনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং। ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর তিনি বলেন, ‘‘তাইওয়ান প্রণালীর দু’পারের চিনা নাগরিকেরা একই পরিবারের অংশ। কেউ আমাদের রক্তের বন্ধন ছিন্ন করতে পারবে না। মাতৃভূমির পুনর্মিলনের ঐতিহাসিক ধারাও কারও পক্ষে রুখে দেওয়া সম্ভব নয়।’’

১৭ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

নতুন বছরের (পড়ুন ২০২৫) ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয় বারের জন্য আমেরিকার প্রেসিডেন্ট হিসাবে শপথ নেবেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইতিমধ্যেই নেটো ত্যাগের ইঙ্গিত দিয়েছেন তিনি। ট্রাম্পের অভিযোগ, এই শক্তিজোটের দেশগুলি প্রতিরক্ষা খাতে খরচ করছে যৎসামান্য। ফলে তাদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে সামরিক খাতে বিপুল অর্থ খরচ হচ্ছে যুক্তরাষ্ট্রের। এই পরিস্থিতিতে সার্বিয়ায় চিনা হাতিয়ারের প্রবেশ পশ্চিম ইউরোপের দেশগুলির, বিশেষত ব্রিটেন, ফ্রান্স এবং জার্মানির আতঙ্ক বাড়িয়েছে।

১৮ ১৮
Chinese Air Defence System FK3 deployed at NATO doorstep a big tension for US

গত বছরের (পড়ুন ২০২৪) ১৮ ডিসেম্বর ‘মিলিটারি অ্যান্ড সিকিউরিটি ডেভেলপমেন্টস ইনভলভিং দ্য পিপল্‌স রিপাবলিক অফ চায়না’ শীর্ষক রিপোর্ট প্রকাশ করে আমেরিকার প্রতিরক্ষা সদর দফতর পেন্টাগন। সেখানে বলা হয়েছে, সামরিক আধুনিকীকরণের নিরিখে অন্য দেশগুলির তুলনায় অনেকটাই এগিয়ে রয়েছে ড্রাগন। চিনের বেশ কিছু অস্ত্রের ক্ষমতা আমেরিকার সমতুল্য বলেও উল্লেখ করেছে পেন্টাগন। ফলে সার্বিয়ায় বেজিংয়ের হাতিয়ার সরবরাহ ওয়াশিংটনের কপালেও ফেলেছে চিন্তার ভাঁজ।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি