ফাওয়াদ খান থেকে মাহিরা খান, সজল আলি, হামসা আলি আব্বাসি— পাকিস্তানের এমন বহু জনপ্রিয় তারকা রয়েছেন যাঁরা বলিপাড়ায় নিজেদের পরিচিতি গড়ে তুলেছেন। ‘এ দিল হ্যায় মুশকিল’ ছবিতে ফাওয়াদ এবং ‘রইস’ ছবিতে মাহিরার অভিনয়ে মুগ্ধ হয়েছেন দর্শক।
তবে শুধুমাত্র পাকিস্তানি তারকারাই নন, হিন্দি ফিল্মজগতের বহু অভিনেতা এবং অভিনেত্রীকে পাকিস্তানি ছবি বা ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে। এই তালিকায় রয়েছেন বিনোদ খন্না, জনি লিভার, নেহা ধুপিয়া এবং শ্বেতা তিওয়ারির মতো তারকারা।
ষাটের দশকের শেষ দিকে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশ বিনোদ খন্নার। ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’, ‘দ্য বার্নিং ট্রেন’, ‘কুদরত’, ‘কুরবানি’, ‘চাঁদনি’ এবং ‘জুর্ম’-এর মতো একাধিক হিট ছবি দর্শককে উপহার দিয়েছেন বিনোদ।
‘গডফাদার: দ্য লেজেন্ড কন্টিনিউস’ নামের একটি উর্দু ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় বিনোদকে। ২০০৭ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় এই ছবি।
১৯৯৬ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘দরার’ ছবিতে প্রথম অভিনয় করেন আরবাজ খান। তার পর কেরিয়ারের ঝুলিতে ‘প্যার কিয়া তো ডরনা কয়া’, ‘মালামাল উইকলি’, ‘দবাং’-এর মতো হিন্দি সিনেমা ভরেছেন অভিনেতা।
পাকিস্তানি ছবি ‘গডফাদার: দ্য লেজেন্ড কন্টিনিউস’-এ বিনোদের পাশাপাশি অভিনয় করতে দেখা যায় আরবাজকেও।
২০০২ সালে ‘কিতনে দূর কিতনে পাস’ ছবিতে অভিনয় করে বলিপাড়ায় নিজের কেরিয়ার শুরু করেন অমৃতা অরোরা। বর্তমানে আর অভিনয় করতে দেখা না গেলেও ‘আওয়ারা পাগল দিওয়ানা’, ‘হ্যালো’, ‘গোলমাল রিটার্নস’, ‘কমবখ্ত ইশক’-এর মতো ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
একাধিক হিন্দি ছবিতে পার্শ্বচরিত্রেও অভিনয় করেন অমৃতা। ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘গডফাদার: দ্য লেজেন্ড কন্টিনিউস’ পাকিস্তানি ছবিতে অতিথি শিল্পী হিসাবে অভিনয় করেন অমৃতা।
পঞ্জাবি ভাষা থেকে শুরু করে হিন্দি এবং বাংলা ভাষার ছবিতে অভিনয় করে প্রশংসা কুড়োন কিরণ খের। আশির দশকে অভিনয় শুরু করেন তিনি।
২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খামোশ পানি’ নামের একটি উর্দু ছবিতে অভিনয় করেন কিরণ। সুইজ়ারল্যান্ডের একটি চলচ্চিত্র উৎসবে ‘খামোশ পানি’র জন্য সেরা অভিনেত্রীর পুরস্কারও পান তিনি।
বলিপাড়ার প্রথম সারির অভিনেতা হিসাবে নাম লিখিয়েছেন নাসিরুদ্দিন শাহ। হিন্দি ছবিতে অভিনয় করে তিনি যেমন দর্শকের হাততালি কুড়িয়েছেন, ঠিক তেমনই মুগ্ধ করেছেন পাকিস্তানের দর্শকদেরও।
একটি নয়, পর পর দু’টি পাকিস্তানি ছবিতে অভিনয় করেন নাসিরুদ্দিন। ২০০৭ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খুদা কে লিয়ে’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি। এই ছবিতে পাকিস্তানি অভিনেতা ফাওয়াদও অভিনয় করেন।
‘খুদা কে লিয়ে’ মুক্তির ছ’বছর পর ২০১৩ সালে বড় পর্দায় মুক্তি পায় ‘জ়িন্দা ভাগ’। পাকিস্তানি এই ছবিতে অভিনয় করেন নাসিরুদ্দিন। মুক্তির পর ব্লকবাস্টার হিট হয় ‘জ়িন্দা ভাগ’।
হিন্দি ছবির পাশাপাশি বাংলা, ইংরেজি, কন্নড়, পঞ্জাবি, গুজরাতি, তেলুগু, মরাঠি ভাষার ছবিতে অভিনয় করেন ওম পুরী। একাধিক পাকিস্তানি ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
২০১৬ সালে ‘অ্যাক্টর ইন ল’ নামের উর্দু ছবিটি প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায়। পাকিস্তানি এই ছবিতে অভিনয় করে বহুল প্রশংসা পান ওম।
সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় জেতার পর ২০০৩ সালে বলিপাড়ায় পা রাখেন নেহা ধুপিয়া। হিন্দি ছবির পাশাপাশি পাকিস্তানি ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
২০০৮ সালে প্রেক্ষাগৃহে মুক্তি পায় পাকিস্তানি ছবি ‘কভি প্যার না করনা’। এই ছবিতে জ়ারা শেখ, বীণা মালিকের পাশাপাশি অভিনয় করতে দেখা যায় নেহাকে।
বলিপাড়ায় পা রাখার পর ১০০টিরও বেশি ছবিতে অভিনয় করেন গুলশন গ্রোভার। অধিকাংশ সময় নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। ‘বিজয়পথ’, ‘রাজা বাবু’, ‘দিলওয়ালে’, ‘মোহরা’, ‘আগ’, ‘ক্রিমিনাল’, ‘দ্য গ্যাম্বলার’, ‘হেরা ফেরি’র মতো ছবিতে অভিনয় করেন গুলশন।
পাকিস্তানি ছবিতেও নেতিবাচক চরিত্রে অভিনয়ের সুযোগ পান গুলশন। ২০১০ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘ভিরসা’ ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
২০০৭ সালে ‘চক দে! ইন্ডিয়া’ ছবিতে অভিনয় করে দর্শকের নজর কাড়েন শিল্পা শুক্ল। ‘হাজারো খোওয়াইশে অ্যায়সি’, ‘ভিন্ডি বাজার’, ‘বি.এ পাস’ ছবিতেও অভিনয় করতে দেখা গিয়েছে তাঁকে।
তবে বলিপাড়ায় আত্মপ্রকাশের আগে পাকিস্তানি ছবিতে অভিনয় করে নিজের কেরিয়ার শুরু করেন শিল্পা। ২০০৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘খামোশ পানি’ ছবিতে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে।
বলিপাড়ার কৌতুকাভিনেতা হিসাবে প্রথম সারিতে জায়গা করে নিয়েছেন জনি লিভার। ২০১১ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘লভ মে ঘুম’ নামক পাকিস্তানি ছবিতে অভিনয় করেন জনি।
শুধু বলিপাড়ার তারকারাই নন, ছোট পর্দার তারকারাও কোনও অংশে পিছিয়ে নেই। পাকিস্তানের ধারাবাহিকে অভিনয় করেছেন সারা খান এবং শ্বেতা তিওয়ারির মতো তারকারা।
‘বিদাই’, ‘সসুরাল সিমর কা’ নামের হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন সারা। ‘বিগ বস্’ রিয়্যালিটি শোতেও প্রতিযোগী হিসাবে অংশগ্রহণ করেন তিনি।
২০১৬ সালে সম্প্রচারিত ‘বেখুদি’ এবং ২০১৭ সালে সম্প্রচারিত ‘লাইকিন’ নামের দু’টি পাকিস্তানি ধারাবাহিকে অভিনয় করতে দেখা যায় ছোট পর্দার অভিনেত্রী সারাকে।
‘কসৌটি জ়িন্দেগি কে’ হিন্দি ধারাবাহিকে অভিনয় করে রাতারাতি জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন শ্বেতা। ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত ‘সুলতানত’ নামের একটি পাকিস্তানি ছবিতে অভিনয় করেন তিনি।
পাকিস্তানি ছবি ‘সুলতানত’-এ খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করতে দেখা যায় ছোট পর্দার অভিনেতা আকাশদীপ সহগলকে।
‘কিউ কি সাস ভি কভি বহু থি’ হিন্দি ধারাবাহিকে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করে নিজের পরিচিতি গড়ে তোলেন আকাশদীপ। তা ছা়ড়া ‘কুসুম’,‘কুছ ইস তারা’ হিন্দি ধারাবাহিকের পাশাপাশি ‘ঝলক দিখ লা যা’ এবং ‘বিগ বস্’-এর মতো রিয়্যালিটি শোয়েও দেখা গিয়েছে তাঁকে।
সকল ছবি সংগৃহীত।