Mini Brazil of India

এক সময় ডুবে থাকত মদে, সেখান থেকে জাতীয় স্তরে খেলেন ৮০ জন! ভারতের কোথায় আছে ‘মিনি ব্রাজ়িল’?

প্রধানমন্ত্রী বর্ণনা করেছেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে দেখা করতে শাহদোল জেলায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি ৮০ থেকে ১০০ জন শিশু, তরুণ এবং যুবকের সঙ্গে দেখা করেন। তারা সকলেই ফুটবলের পোশাক পরে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছিল।

Advertisement
আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক
শেষ আপডেট: ২২ মার্চ ২০২৫ ১২:৩৬
০১ ২২
narendra modi

সম্প্রতি আমেরিকার বিখ্যাত কম্পিউটার বিজ্ঞানী তথা পডকাস্টার লেক্স ফ্রিডম্যানের সঙ্গে একটি পডকাস্ট করেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। সেই সাক্ষাৎকারের সময় মোদীর কথায় উঠে এসেছিল ভারতের ‘মিনি ব্রাজ়িল’-এর প্রসঙ্গ।

০২ ২২
narendra modi

কী ভাবে ভারতের এক ছোট অঞ্চল বিগত কয়েক দশক ধরে ভারতীয় ফুটবলের অন্যতম প্রাণকেন্দ্র তৈরি হল সে কথাও বলতে শোনা গিয়েছে প্রধানমন্ত্রীকে।

০৩ ২২
narendra modi

মোদী জানিয়েছেন, ‘মিনি ব্রাজ়িল’ থেকে এখনও পর্যন্ত প্রায় ৮০ জন জাতীয় স্তরে খেলেছেন।

Advertisement
০৪ ২২
kids playing football

তার পর থেকেই নেটাগরিকদের মনে কৌতূহল তৈরি হয়েছে ভারতের ‘মিনি ব্রাজ়িল’কে নিয়ে। কোথায় সেই জায়গা তা জানতে খোঁজখবর শুরু করেছেন অনেকে। সমাজমাধ্যমে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে ‘মিনি ব্রাজ়িল’।

০৫ ২২
kids playing football

ভারতের ‘মিনি ব্রাজ়িল’ রয়েছে মধ্যপ্রদেশে। সে রাজ্যের শাহদোল জেলার একটি গ্রাম পরিচিতি পেয়েছে ওই নামে।

Advertisement
০৬ ২২
narendra modi

ওই গ্রামে বসবাসকারী এমন অনন্য আদিবাসী সম্প্রদায়ের কথাও মোদী বলেছেন। চার প্রজন্ম ধরে এঁদের ধ্যানজ্ঞান শুধুই ফুটবল।

০৭ ২২
narendra modi

মোদী পডকাস্টে বলেন, ‘‘ভারতের ঠিক মাঝখানে মধ্যপ্রদেশ নামে একটি রাজ্য আছে। সেখানে শাহদোল নামে একটি জেলা আছে। সেই জেলায় একটি সম্পূর্ণ আদিবাসী অঞ্চল রয়েছে। একটি বৃহৎ আদিবাসী সম্প্রদায় বাস করে সেখানে।’’

Advertisement
০৮ ২২
narendra modi

পডকাস্টে শাহদোলের সেই ছোট আদিবাসী গ্রামের গল্প এবং ভারতীয় ফুটবলের উপর এর প্রভাবই বর্ণনা করেছেন মোদী। তখনই উঠে এসেছে ‘মিনি ব্রাজ়িল’ প্রসঙ্গ।

০৯ ২২
kids playing football

ফ্রিডম্যানের সঙ্গে পডকাস্টে মোদী যে আদিবাসী গ্রামের কথা উল্লেখ করেছেন সেটি শাহদোলের বিচারপুর। রাজধানী ভোপাল থেকে প্রায় ৫০০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এই গ্রাম।

১০ ২২
narendra modi

প্রধানমন্ত্রী বর্ণনা করেছেন, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মহিলাদের সঙ্গে দেখা করতে শাহদোল জেলায় গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই তিনি ৮০ থেকে ১০০ জন শিশু, তরুণ এবং যুবকের সঙ্গে দেখা করেন। তারা সকলেই ফুটবলের পোশাক পরে একসঙ্গে দাঁড়িয়েছিল।

১১ ২২
narendra modi

প্রধানমন্ত্রীর কথায়, ‘‘স্বাভাবিক ভাবেই, আমি তাদের কাছে গিয়েছিলাম। আমি ওদের জিজ্ঞাসা করি, তোমরা সবাই কোথা থেকে এসেছ? উত্তর তারা বলে, আমরা মিনি ব্রাজ়িল থেকে এসেছি।’’

১২ ২২
kids playing football

শাহদোলের বিচারপুর গ্রামের ওই অনন্য নামের নেপথ্যে থাকা কারণ ব্যাখ্যা করে মোদী বলেন, ‘মিনি ব্রাজ়িলে চার প্রজন্ম ধরে ফুটবল খেলা হয়ে আসছে। প্রায় ৮০ জন জাতীয় স্তরের খেলোয়াড় ওই জায়গা থেকে উঠে এসেছেন।’’

১৩ ২২
narendra modi

এ ছাড়াও সেখানকার ২০ থেকে ২৫ হাজার মানুষ প্রতি বছর ওই গ্রামে আয়োজিত বার্ষিক ফুটবল প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।

১৪ ২২
narendra modi

বিচারপুরের মানুষদের ধ্যানজ্ঞান সব কিছুই ফুটবল। জাতীয় স্তরে খেলা ছাড়াও সে গ্রামের ফুটবল মেধাদের কেউ কেউ বিভিন্ন পর্যায়ে ভারতীয় জাতীয় দলের ক্যাম্পে ডাক পেয়েছিলেন বলেও প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।

১৫ ২২
narendra modi

তবে এই প্রথম নয় যে মোদী তাঁর কথায় ‘মিনি ব্রাজ়িলের’ প্রসঙ্গ টানলেন। এর আগে ২০২৩ সালে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কথায় উঠে আসে মধ্যপ্রদেশের ওই গ্রামের নাম।

১৬ ২২
narendra modi

বিচারপুর গ্রামের প্রায় প্রতিটি বাড়িতেই এক জন ফুটবলার বা ফুটবল কোচ আছেন। রেফারির বাঁশি বাজিয়ে দিন শুরু করে ওই গ্রাম। সেই বাঁশি বাজিয়েই দিন শেষ হওয়ার ঘোষণা হয়।

১৭ ২২
narendra modi

বিচারপুর গ্রামকে ফুটবল হাবে রূপান্তরিত করার প্রক্রিয়া শুরু হয় ১৯৬০-এর দশকে। সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, সেই সময়ে গ্রামটি চোলাই মদ তৈরির জন্য কুখ্যাতি অর্জন করে। গ্রামের জনগণ, বিশেষ করে গ্রামের যুবারা মদাসক্ত হয়ে পড়ছিলেন ধীরে ধীরে। সেই সময়ই ফুটবলার থেকে কোচ হওয়া সুরেশ কুন্ডে বিষয়টি নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করেন এবং গ্রামের তরুণদের জড়ো করেন ফুটবল খেলানো শুরু করেন।

১৮ ২২
সেখান থেকেই জন্ম হয় ‘বিচারপুর একাদশের’। সুরেশের সঙ্গে গ্রামের মানুষের সম্পর্ক ভাল ছিল। তিনি জানতেন, গ্রামের তরুণদের মধ্যে যদি এক বার ফুটবলের নেশা ধরানো যায়, তা হলে মদের নেশা ধীরে ধীরে কেটে যাবে। গ্রামের অনেক প্রাক্তন খেলোয়াড়ই জানিয়েছেন, এক সময় কী ভাবে তাঁরা টিভি এবং ভিসিআর ভাড়া করে শিশুদের ফুটবল ম্যাচের রেকর্ডিং দেখাতেন।

সেখান থেকেই জন্ম হয় ‘বিচারপুর একাদশের’। সুরেশের সঙ্গে গ্রামের মানুষের সম্পর্ক ভাল ছিল। তিনি জানতেন, গ্রামের তরুণদের মধ্যে যদি এক বার ফুটবলের নেশা ধরানো যায়, তা হলে মদের নেশা ধীরে ধীরে কেটে যাবে। গ্রামের অনেক প্রাক্তন খেলোয়াড়ই জানিয়েছেন, এক সময় কী ভাবে তাঁরা টিভি এবং ভিসিআর ভাড়া করে শিশুদের ফুটবল ম্যাচের রেকর্ডিং দেখাতেন।

১৯ ২২
kids playing football

তবে সুরেশ এখন আর বিচারপুর গ্রামে ফুটবলের কোচিং দেন না। পক্ষাঘাত হওয়ার কারণে বাড়িতেই থাকেন। তবে তাঁর সাজানো ফুটবল মাঠ এখনও রয়েছে। এখনও সেই মাঠ গ্রামের অনেক তরুণকে স্বপ্ন দেখতে শেখায়।

২০ ২২
kids playing football

২০০২ সালে সুরেশের পর গ্রামের তরুণ প্রজন্মকে ফুটবল শেখানোর দায়িত্ব পড়ে রইস আহমদের কাঁধে। স্থানীয় শিশুদের মধ্যে সম্ভাবনা চিহ্নিত করে তাদের প্রশিক্ষণ দেওয়া শুরু করেন তিনি। শাহদোলের তৎকালীন জেলাশাসক রাঘবেন্দ্র সিংহ ২০০৩ সালে বিচারপুরের মধ্যে ফুটবলের উন্মাদনা দেখে গ্রামটিকে ‘মিনি ব্রাজ়িল’ তকমা দিয়েছিলেন।

২১ ২২
kids playing football

বর্তমানে ‘মিনি ব্রাজ়িল’ অনেক তরুণ ফুটবলারদের ঘর। তাঁদের চোখে উজ্জ্বল স্বপ্ন। স্বপ্ন, ভারতের হয়ে খেলার। আর তার জন্য দিনরাত পরিশ্রম করে চলেন তাঁরা। বিচারপুরের ফুটবল প্রেম শুধু পুরুষদের মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই, তা ছড়িয়েছে মহিলাদের মধ্যেও। সে গ্রামের মেয়েরাও এখন কম বয়স থেকেই ফুটবল প্রশিক্ষণ শুরু করে।

২২ ২২
নেটফ্লিক্সের ‘জাদুগর’ ছবিতে মধ্যপ্রদেশের এমনই একটি ফুটবলপ্রেমী কাল্পনিক শহরের গল্প দেখানো হয়েছিল। অনেকে মনে করেন, ওই ছবির গল্প বিচারপুর থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা হয়েছিল।

নেটফ্লিক্সের ‘জাদুগর’ ছবিতে মধ্যপ্রদেশের এমনই একটি ফুটবলপ্রেমী কাল্পনিক শহরের গল্প দেখানো হয়েছিল। অনেকে মনে করেন, ওই ছবির গল্প বিচারপুর থেকেই অনুপ্রাণিত হয়ে লেখা হয়েছিল।

সব ছবি: সংগৃহীত।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি