Demonetisation

‘বেআইনি’ বললেন নোটবন্দিকে, বেসুরো নাগরত্নাই হতে পারেন দেশের প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতি

২০০৯ সালে আইনজীবীরা এক বার ঘেরাও করেছিলেন বিচারপতি নাগরত্নাকে। পরে ঘেরাওমুক্ত হয়ে তিনি বলেছিলেন, “আমি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করি না। কারণ আমি সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছি।”

Advertisement
সংবাদ সংস্থা
নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ১৪:৩৭
০১ ১৪
মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে রাতারাতি সংবাদ শিরোনামে চলে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্না। সাংবিধানিক বেঞ্চের চার সদস্য ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে নির্ভুল বলে রায় দিলেও, বিরুদ্ধ মত দেন বেঞ্চেরই সদস্য বিচারপতি নাগরত্না।

মোদী সরকারের নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে ‘বেআইনি’ আখ্যা দিয়ে রাতারাতি সংবাদ শিরোনামে চলে এসেছেন সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি বিভি নাগরত্না। সাংবিধানিক বেঞ্চের চার সদস্য ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্তকে নির্ভুল বলে রায় দিলেও, বিরুদ্ধ মত দেন বেঞ্চেরই সদস্য বিচারপতি নাগরত্না।

ফাইল চিত্র।

০২ ১৪
যে যে লক্ষ্য সামনে রেখে ২০১৬ সালে নোটবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেগুলির অধিকাংশই পূরণ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন নাগরত্না। তবে একই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন, এত দিন পরে এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করার নির্দেশ দিতে পারে না আদালত। তাতে কোনও সুরাহা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

যে যে লক্ষ্য সামনে রেখে ২০১৬ সালে নোটবন্দি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকার, সেগুলির অধিকাংশই পূরণ করা যায়নি বলে জানিয়েছেন নাগরত্না। তবে একই সঙ্গে বিচারপতি জানিয়েছেন, এত দিন পরে এই সিদ্ধান্ত স্থগিত করার নির্দেশ দিতে পারে না আদালত। তাতে কোনও সুরাহা হবে না বলেও জানিয়েছেন তিনি।

০৩ ১৪
এ প্রসঙ্গে নাগরত্না বলেন, “কালো টাকা উদ্ধার, সন্ত্রাসবাদে কালো টাকার ব্যবহার ইত্যাদি বন্ধের জন্যই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনগত দিক থেকে দেখতে গেলে এই সিদ্ধান্ত অবৈধ। আদালত কোনও সিদ্ধান্তের লক্ষ্যের দিকটি মাথায় রেখে নয়, আইনগত দিকটি পর্যালোচনা করেই রায় দিয়ে থাকে।”

এ প্রসঙ্গে নাগরত্না বলেন, “কালো টাকা উদ্ধার, সন্ত্রাসবাদে কালো টাকার ব্যবহার ইত্যাদি বন্ধের জন্যই নোটবন্দির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু আইনগত দিক থেকে দেখতে গেলে এই সিদ্ধান্ত অবৈধ। আদালত কোনও সিদ্ধান্তের লক্ষ্যের দিকটি মাথায় রেখে নয়, আইনগত দিকটি পর্যালোচনা করেই রায় দিয়ে থাকে।”

Advertisement
০৪ ১৪
নাগরত্নাকে স্পষ্টবক্তা হিসাবেই চেনে আইনজীবী মহল। আগেও নানা মামলার রায়ে নিজের কঠোর এবং দৃঢ়চেতা মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

নাগরত্নাকে স্পষ্টবক্তা হিসাবেই চেনে আইনজীবী মহল। আগেও নানা মামলার রায়ে নিজের কঠোর এবং দৃঢ়চেতা মানসিকতার পরিচয় দিয়েছেন তিনি।

০৫ ১৪
১৯৬২ সালের ৩০ অক্টোবর জন্ম নাগরত্নার। তাঁর বাবা বেঙ্কটরামাইয়া নাগরত্না ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি। ১৯৮৯ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি। কর্নাটক থেকে সেই প্রথম কেউ দেশের প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন।

১৯৬২ সালের ৩০ অক্টোবর জন্ম নাগরত্নার। তাঁর বাবা বেঙ্কটরামাইয়া নাগরত্না ছিলেন দেশের প্রধান বিচারপতি। ১৯৮৯ সালের জুন থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি ছিলেন তিনি। কর্নাটক থেকে সেই প্রথম কেউ দেশের প্রধান বিচারপতি হয়েছিলেন।

Advertisement
০৬ ১৪
দিল্লিতে পড়াশোনা করলেও বিভি নাগরত্নার কর্মজীবনের সূচনা কর্নাটক হাই কোর্টেই। আইনজীবী হিসাবে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বাণিজ্যিক আইন, সাংবিধানিক আইনবিশারদ হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন তিনি।

দিল্লিতে পড়াশোনা করলেও বিভি নাগরত্নার কর্মজীবনের সূচনা কর্নাটক হাই কোর্টেই। আইনজীবী হিসাবে অল্প কয়েক দিনের মধ্যেই বাণিজ্যিক আইন, সাংবিধানিক আইনবিশারদ হিসাবে খ্যাতি লাভ করেন তিনি।

০৭ ১৪
১৯৮৭ সালে কর্নাটক বার কাউন্সিলের সদস্য হন বিচারপতি নাগরত্না। ২০০৮ সালে কর্নাটক হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হন তিনি। ২০১০ সালে স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে পদোন্নতি হয় তাঁর। তবে তার আগেই আইনজীবী হিসাবে বেঙ্গালুরুতে তাঁর যথেষ্ট নামডাক ছিল।

১৯৮৭ সালে কর্নাটক বার কাউন্সিলের সদস্য হন বিচারপতি নাগরত্না। ২০০৮ সালে কর্নাটক হাই কোর্টের অতিরিক্ত বিচারপতি হন তিনি। ২০১০ সালে স্থায়ী বিচারপতি হিসাবে পদোন্নতি হয় তাঁর। তবে তার আগেই আইনজীবী হিসাবে বেঙ্গালুরুতে তাঁর যথেষ্ট নামডাক ছিল।

Advertisement
০৮ ১৪
২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হন নাগরত্না। সব কিছু ঠিক ভাবে এগোলে ২০২৭ সালে তিনিই হবেন দেশের প্রধান বিচারপতি। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপালের পর দেশ পাবে প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতিকে।

২০২০ সালে সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হন নাগরত্না। সব কিছু ঠিক ভাবে এগোলে ২০২৭ সালে তিনিই হবেন দেশের প্রধান বিচারপতি। সে ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতি, মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপালের পর দেশ পাবে প্রথম মহিলা প্রধান বিচারপতিকে।

০৯ ১৪
২০১২ সালে কর্নাটক হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে তিনি ভুয়ো খবর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। টেলিভিশন চ্যানেলগুলি যাতে ‘ব্রেকিং নিউজ’-এর নাম করে ভুয়ো খবর ছড়াতে না পারে, তার জন্য সরকারকে একটি স্বশাসিত পদ্ধতি তৈরি করার নির্দেশ দেন তিনি। তবে কেন্দ্র এবং রাজ্য যাতে কোনও ভাবেই গণমাধ্যকে নিজেদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, সে বিষয়েও সতর্কতা নিতে বলেন তিনি।

২০১২ সালে কর্নাটক হাই কোর্টের বিচারপতি হিসাবে একটি মামলার রায় দিতে গিয়ে তিনি ভুয়ো খবর নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। টেলিভিশন চ্যানেলগুলি যাতে ‘ব্রেকিং নিউজ’-এর নাম করে ভুয়ো খবর ছড়াতে না পারে, তার জন্য সরকারকে একটি স্বশাসিত পদ্ধতি তৈরি করার নির্দেশ দেন তিনি। তবে কেন্দ্র এবং রাজ্য যাতে কোনও ভাবেই গণমাধ্যকে নিজেদের স্বার্থে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে, সে বিষয়েও সতর্কতা নিতে বলেন তিনি।

১০ ১৪
২০১৯ সালে আরও একটি মামলার রায়ে নিজের পর্যবেক্ষণে নাগরত্না জানান, দেবালয় কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। তাই গ্র্যাচুয়িটি আইন অনুযায়ী মন্দিরের কর্মচারীরা গ্র্যাচুয়িটি কিংবা অন্য কোনও অবসরকালীন সুযোগসুবিধা পেতে পারেন না।

২০১৯ সালে আরও একটি মামলার রায়ে নিজের পর্যবেক্ষণে নাগরত্না জানান, দেবালয় কোনও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। তাই গ্র্যাচুয়িটি আইন অনুযায়ী মন্দিরের কর্মচারীরা গ্র্যাচুয়িটি কিংবা অন্য কোনও অবসরকালীন সুযোগসুবিধা পেতে পারেন না।

১১ ১৪
কোভিডের সময় কর্নাটক সরকার রাজ্যের কিছু জায়গায় মিড ডে মিল বন্ধ করার প্রস্তাব পেশ করেছিল। কিন্তু সরকারের এই প্রস্তাবকে খারিজ করে নাগরত্না এবং অন্য আর এক বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কোভিডের সময় দরিদ্র এবং প্রান্তিক পরিবার থেকে উঠে আসা শিশুরাও যাতে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত।

কোভিডের সময় কর্নাটক সরকার রাজ্যের কিছু জায়গায় মিড ডে মিল বন্ধ করার প্রস্তাব পেশ করেছিল। কিন্তু সরকারের এই প্রস্তাবকে খারিজ করে নাগরত্না এবং অন্য আর এক বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ। কোভিডের সময় দরিদ্র এবং প্রান্তিক পরিবার থেকে উঠে আসা শিশুরাও যাতে অনলাইনে পড়াশোনা করতে পারে, তা সুনিশ্চিত করার জন্য রাজ্য সরকারকে নির্দেশ দেয় আদালত।

১২ ১৪
২০০৯ সালে আইনজীবীরা এক বার ঘেরাও করেছিলেন বিচারপতি নাগরত্নাকে। তবে ঘেরাওকারীদের লক্ষ্য ছিলেন কর্নাটক হাই কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি পিডি দিনকরণ, নাগরত্না নন।

২০০৯ সালে আইনজীবীরা এক বার ঘেরাও করেছিলেন বিচারপতি নাগরত্নাকে। তবে ঘেরাওকারীদের লক্ষ্য ছিলেন কর্নাটক হাই কোর্টের তদানীন্তন প্রধান বিচারপতি পিডি দিনকরণ, নাগরত্না নন।

১৩ ১৪
দিনকরণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে ঘেরাও করা হলে আটকে পড়েন নাগরত্নাও। পরে ঘেরাওমুক্ত হয়ে নাগরত্না বলেছিলেন, “আমি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করি না। কারণ আমি সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছি।”

দিনকরণের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে তাঁকে ঘেরাও করা হলে আটকে পড়েন নাগরত্নাও। পরে ঘেরাওমুক্ত হয়ে নাগরত্না বলেছিলেন, “আমি অন্যায়ের কাছে মাথা নত করি না। কারণ আমি সংবিধানের নামে শপথ নিয়েছি।”

১৪ ১৪
দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক হওয়া নাগরত্না প্রথমে চেয়েছিলেন শিক্ষক হতে। কিন্তু পরে বাবার মতো আইনকেই পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন। একাধিক মামলায় অন্য বিচারপতিদের রায়ের প্রেক্ষিতে ‘বেসুরো’ হয়ে সকলের মনোযোগ এবং কৌতূহলের কেন্দ্রে চলে এসেছে বিচারপতি নাগরত্নার নাম।

দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ইতিহাসে স্নাতক হওয়া নাগরত্না প্রথমে চেয়েছিলেন শিক্ষক হতে। কিন্তু পরে বাবার মতো আইনকেই পেশা হিসাবে গ্রহণ করেন। একাধিক মামলায় অন্য বিচারপতিদের রায়ের প্রেক্ষিতে ‘বেসুরো’ হয়ে সকলের মনোযোগ এবং কৌতূহলের কেন্দ্রে চলে এসেছে বিচারপতি নাগরত্নার নাম।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)
আরও গ্যালারি