শ্রদ্ধা ওয়ালকর খুনে অভিযুক্ত তাঁর প্রেমিক আফতাব আমিন পুনাওয়ালার ফ্ল্যাট থেকে একটি ধারালো করাত উদ্ধার করল দিল্লি পুলিশের তদন্তকারীরা।
ছবি: সংগৃহীত।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক পুলিশের এক আধিকারিক বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন, দিল্লির ছতরপুরে যে দোতলা ফ্ল্যাটে আফতাব-শ্রদ্ধা ভাড়া থাকতেন, ৪-৫ দিন আগে সেখান থেকে করাতটি পাওয়া গিয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
পরীক্ষার জন্য ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞদের কাছে পাঠানো হয়েছে সেটি। প্রশ্ন উঠছে, যে সব অস্ত্র দিয়ে শ্রদ্ধার দেহ টুকরো করেছিলেন আফতাব, তার মধ্যে কি এটিও ছিল?
১৮ মে সন্ধ্যায় শ্বাসরোধ করে শ্রদ্ধাকে খুনের পর দু’দিনের বেশি সময় ধরে তাঁর দেহ ৩৫ টুকরো করেছিলেন। পুলিশ সূত্রে খবর, সে কাজে একটি নয়, ব্যবহার করেছিলেন একাধিক অস্ত্র।
ছবি: সংগৃহীত।
শ্রদ্ধার লিভ-ইন সঙ্গী তথা প্রেমিক আফতাব তদন্তকারীদের কাছে যে স্বীকারোক্তি করেছেন, তাতে একাধিক অস্ত্র ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে।
ছবি: সংগৃহীত।
এই খুনের তদন্তে নেমে এত দিন কোনও অস্ত্র উদ্ধার করতে পারেননি তদন্তকারীরা। তদন্তকারীদের সন্দেহ, এই হত্যাকাণ্ডে করাতটি ব্যবহার করতে পারেন আফতাব। ফলে শ্রদ্ধা-খুনে একে এখনও পর্যন্ত বড়সড় সাফল্য হিসাবেই দেখছেন তদন্তকারীরা।
ছবি: সংগৃহীত।
নাম গোপন রাখার শর্তে পুলিশের এক আধিকারিক সংবাদমাধ্যমে বলেন, ‘‘আফতাবকে জেরার পর তাঁর ফ্ল্যাটে পুলিশি তল্লাশিতে ওই করাতটি পাওয়া গিয়েছে। যদিও ওই করাতটিই যে এই অপরাধে ব্যবহার করা হয়েছিল, তা ফরেন্সিক পরীক্ষার আগে নিশ্চিত করে বলা যাবে না।’’
ছবি: সংগৃহীত।
তদন্তকারীদের দাবি, সোমবার শ্রদ্ধার খুনের কথা প্রকাশ্যে আসার পর আফতাব জানিয়েছিলেন, প্রেমিকার দেহ টুকরো টুকরো করার পর সেগুলি ৩ মাস ফ্রিজে ভরে রেখেছিলেন।
ছবি: সংগৃহীত।
এর পরের ১৮ রাত ধরে দক্ষিণ দিল্লির ছতরপুরের জঙ্গলে টুকরোগুলি এক-এক করে ফেলতে যেতেন তিনি। এখনও পর্যন্ত ওই জঙ্গল থেকে ১৩টি হাড়গোড় উদ্ধার করেছে পুলিশ।
ছবি: সংগৃহীত।
যদিও সেগুলি শ্রদ্ধার কি না, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে। এ কারণেও করাতটি উদ্ধারে সাফল্য দেখছেন তদন্তকারীরা। কারণ, হত্যাকাণ্ডে আফতাবের স্বীকারোক্তি সত্ত্বেও তা প্রমাণ হিসাবে আদালতে গ্রাহ্য হবে না। যদি না, সেই স্বীকারোক্তির পক্ষে প্রমাণ জোগাড়ে ব্যর্থ হয় পুলিশ।
ছবি: সংগৃহীত।
পুলিশের ওই আধিকারিক বলেন, ‘‘করাতটির ফরেন্সিক পরীক্ষার পর সেটির সঙ্গে অপরাধের জায়গা থেকে উদ্ধার রক্তের নমুনা মিলিয়ে দেখা হবে। রক্তের নমুনার সঙ্গে শ্রদ্ধার রক্ত মিলে গেলে তবেই এই করাতটিকে খুনের পর ব্যবহৃত অস্ত্র হিসাবে প্রমাণ করা যাবে।’’ প্রসঙ্গত, আফতাবের ফ্ল্যাটের রান্নাঘর থেকে রক্তের দাগ মিলেছিল।
ছবি: সংগৃহীত।
আফতাবের কথা অনুযায়ী, আরও অস্ত্রের খোঁজ করছে পুলিশ। পাশাপাশি, করাতটি কোন দোকান থেকে কেনা হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা।
ছবি: সংগৃহীত।
আফতাবকে সঙ্গে নিয়ে ইতিমধ্যেই ছতরপুরের একটি দোকানে গিয়েছিলেন তাঁরা। এর পর মেহরৌলী-গুরুগ্রাম রোডের আরও একটি দোকানে যাবেন বলে সূত্রের খবর।
ছবি: সংগৃহীত।
তদন্তকারীদের কথায়, ‘‘সম্প্রতি আফতাবদের ফ্ল্যাটে কোনও কাঠের বা রঙের কাজ করা হয়নি। তা ছাড়া, তাঁদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাৎ করতেও বিশেষ কেউ আসতেন না। এমনকি, আফতাব নিজের রান্না করতেন না। অনলাইনে খাবার অর্ডার দিতেন। যেগুলি তাঁর ফ্ল্যাটের দরজায় বা বিল্ডিংয়ের প্রধান দরজায় রেখে চলে যেতেন ফু়ড ডেলিভারি সংস্থার কর্মীরা। ফলে ফ্ল্যাটে ওই করাতটি কেন রয়েছে, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।’’
ছবি: সংগৃহীত।
তদন্তকারীদের আরও দাবি, ‘‘১৮ মে সন্ধ্যায় নয়, দুপুর থেকে আফতাব এবং শ্রদ্ধার মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি শুরু হয়েছিল। মুম্বই থেকে দিল্লিতে আসায় আপত্তি ছিল আফতাবের। তাতেই শ্রদ্ধার সন্দেহ হয় যে কারও সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন আফতাব। অন্য মহিলার সঙ্গে আফতাবের হোয়াটসঅ্যাপ মেসেজও দেখে ফেলেছিলেন শ্রদ্ধা। যা নিয়ে তাঁদের সম্পর্কে টানাপড়েন চলছিল।’’
গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।