প্রতীকী ছবি। ছবি: সংগৃহীত
দমদমের বাসিন্দা অনির্বাণ চক্রবর্তী। রাজারহাট এলাকায় অফিস। গত বছর করোনা সংক্রমণ শুরু হওয়ার পর থেকেই বাস বা গাড়িতে ওঠা বন্ধ করে দিয়েছেন। বদলে বেছে নিয়েছেন সাইকেল। মাঝে দীর্ঘ লকডাউনে বাড়ি থেকে কাজ। তার পরে আবারও অফিস যাতায়াত সেই সাইকেলেই। কমবেশি ১ বছর হয়ে গিয়েছে। কেমন আছেন অনির্বাণ?
তাঁর কথায়, ‘‘ছোটবেলায় নিয়মিত সাইকেল চালাতাম। তার পরে আবার এখন। এই ১ বছরে মেদ অনেক কমেছে। শরীর অনেক চাঙ্গা।’’ তবে তিনি একা নন, কোভিডের সঙ্গে পাল্লা দিয়েই সারা পৃথিবীতে বেড়েছে সাইকেলের জনপ্রিয়তা এবং তার ব্যবহার। ৩ জুন, বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস দিনটি তাই আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। অনির্বাণের শুধু একটাই কথা, রাস্তায় অন্য গাড়ির ভিড়ের মধ্যে সাইকেল চালানোটা কষ্টকর।
২০১৮ সাল থেকে বছরের এই দিনটি ‘বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস’-এর স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আলাদা করে এই দিনটি কতটা গুরুত্বপূর্ণ? একাদশ শ্রেণির ছাত্রী শ্রীরূপা বসু। বাড়ি যাদবপুরে। ‘‘অনলাইনেই ক্লাস চলছে। তবু কখনও কখনও বন্ধুদের সঙ্গে দেখা করে পড়ার বিষয়ে আলোচনা করতে হয়। শিক্ষক-শিক্ষিকাদের সঙ্গেও দেখা করতে হয়। সামাজিক দূরত্ব রেখে, স্বাস্থ্যবিধি মেনেই পড়াশোনা চলে। কিন্তু বাসে বা অটোয় গেলে তো সেই সুযোগ থাকে না। তাই সাইকেলই ভরসা। সমস্যা একটাই— রাস্তায় অন্য গাড়ির ভিড়। সাইকেলের জন্য আলাদা ‘লেন’ থাকলে সুবিধা হত,’’ বলছেন তিনি।
তিনি একা নন, সাইকেলের জন্য আলাদা রাস্তার দাবি অনেকেরই। এতে কমে দূষণ। সার্বিক উন্নতি হয় স্বাস্থ্যের। বৃহস্পতিবার ‘বিশ্ব বাইসাইকেল দিবস’-এ দিয়া মির্জাও তাই এমন আর্জি জানিয়েছেন নেটমাধ্যমে।।
Love cycling! More cycling tracks please @mybmc 😊💚🙏🏻 #WorldBicycleDay pic.twitter.com/ZES2lIuZM9
— Dia Mirza (@deespeak) June 3, 2021
নিয়মিত সাইকেল চালালে বহু রোগবালাই দূরে থাকে। হৃদযন্ত্রের ক্ষমতা বাড়ে। এমনকি একাগ্রতা, মানসিক জোর বাড়ে বলেও মত চিকিৎসকদের। তা হাতেনাতে টের পেয়েছেন ফুলবাগানের অভ্রদীপ রায়। বিধাননগরে একটি কোম্পানিতে কর্মরত অভ্রদীপকে অল্পবিস্তর অফিস যেতেই হয়। পুরো কাজটি বাড়ি থেকে করা অসম্ভব। ‘‘গত বছর সাইকেল চালানো শিখে, সাইকেল কিনে তাতে অফিস যাতায়াত করছি। হালে চিকিৎসক জানালেন আমার রক্তচাপ আগের চেয়ে অনেক স্বাভাবিক হয়েছে। ঘুম ভাল হচ্ছে। নিজে পরিষ্কার বুঝতে পারছি,’’ বলছেন তিনি। কেমন লাগে সাইকেল চালাতে? ‘‘খুবই ভাল,’’ অভ্রদীপের উত্তর। তার পরেই একটু খুঁতখুঁতানি, ‘‘শুধু…’’। বাকিদের মতো একটাই কথা, ‘‘… যদি সাইকেলের জন্য আলাদা রাস্তা করা থাকত।’’