যাঁরা নিয়মিত শারীরচর্চা করেন, মেদ ঝরানো বা বাইসেপস বানানো যাঁদের লক্ষ্য, তাঁদের কাছে ডাম্বেল রোজ় খুব চেনা একটি ওয়ার্কআউট। এক হাতে বা দু’হাতে দু’টি ডাম্বেল নিয়ে কসরত করা তাঁদের রোজের রুটিনের মধ্যে পড়ে। ডাম্বল রোজ়কে বলা হয় ইউনিল্যাটেরাল এক্সারসাইজ় অর্থাৎ নির্দিষ্ট সময়ে শরীরের নির্দিষ্ট একটি দিকের ব্যায়াম হয় এর মাধ্যমে। এক হাতে বা সিঙ্গল হ্যান্ড ডাম্বল রোজ়ের মাধ্যমে বেশি ক্যালরি বার্ন করা হয়।
এই ব্যায়ামে কাঁধ শক্ত হয়, পিঠের মেদ ঝরানো হয়। যে সব মহিলাদের ওজন বেশি, তাঁদের ডাম্বেল রোজ় দেওয়ার প্রধান কারণ পিঠের মেদ ঝরানো। এর সঙ্গে পেশি মজবুত করার বিষয়টিও রয়েছে। তবে পুরুষদের ক্ষেত্রে বাইসেপস বানানো, কাঁধ শক্ত করার সঙ্গে ল্যাটের শক্তি বাড়ানোর ক্ষেত্রে এই ব্যায়াম অব্যর্থ।
ডাম্বেল রোজ়ের উপকারিতা
নারী-পুরুষ নির্বিশেষে ডাম্বেল রোজ় থেকে কয়েকটি উপকারিতা পেতে পারেন। সেগুলি হল—
* শক্ত পিঠ: খেলোয়াড়, ওয়েটলিফ্টারদের জন্য তো বটেই, সাধারণ স্বাস্থ্যসচেতন ব্যক্তিদেরও পিঠের শক্তি বাড়ানোর জন্য এই ব্যায়াম খুব ভাল। যখন আরও কঠিন পর্যায়ের কসরত করা হয়, তখন বাইসেপস বানানোর জন্য, গ্রিপ ভাল করার জন্য এই ব্যায়াম দেওয়া হয়।
* দেহসৌষ্ঠব উন্নত করা: এই ব্যাক-এক্সারসাইজ়ের মাধ্যমে পশ্চার বা দেহসৌষ্ঠবকে আরও সুন্দর করে তোলা যায়। অনেক পেশির একসঙ্গে কসরত হওয়ার ফলে এই সুবিধে পাওয়া যায়। সারা দিন ঘাড় গুঁজে ডেস্কে কাজ করার ফলে পশ্চারের সমস্যা এখন প্রায় ঘরে ঘরে শোনা যায়। সে ক্ষেত্রে কাজে দিতে পারে ডাম্বেল রোজ়।
* স্ট্রেংথ লিফ্টে সাহায্য করা: এই ব্যায়ামের সাহায্যে শরীরের পশ্চাৎভাগের যত্ন নেওয়া হয়। স্কোয়াট, ডেডলিফ্ট, বেঞ্চ প্রেসিং এবং অন্যান্য লিফ্টজাতীয় ওয়ার্কআউট করতে এই ব্যায়াম সাহায্য করে।
কী ভাবে করবেন?
এই ব্যায়াম করার সময়ে পশ্চার ঠিক রাখা খুব জরুরি। ফিটনেস বিশেষজ্ঞ সৌমেন দাস এ বিষয়ে অবহিত করালেন, ‘‘সিঙ্গল হ্যান্ড ডাম্বেল রোজ় করার সময়ে একটা হাঁটু মুড়ে কোনও চেয়ার বা উঁচু জায়গায় বসতে হবে। অন্য পা মাটি ছুঁয়ে থাকবে, হাঁটু হালকা ভাঁজ হবে। যে পা চেয়ারের উপরে ভাঁজ করা হয়েছে, সেই হাত বেঞ্চের উপরে থেকে সাপোর্ট করবে। অন্য হাতে ডাম্বেল নিয়ে এক বার কাছে, এক বার দূরে টানতে হবে। তবে করার সময়ে হিপ উপরে থাকবে, কোমর নিচু থাকবে এবং বুক সমান্তরাল থাকবে। এই পশ্চার ও অ্যাঙ্গলে ঠিকমতো ব্যায়াম না করলে আখেরে লাভ হবে না।’’ যে হাতে ডাম্বেল তোলা হচ্ছে, সে দিকের পা যেন ভাঁজ না হয় বা সেই পায়ের উপরে ভর দিয়ে ডাম্বেল যেন তোলা না হয়। এই ভাবে এক থেকে দশ কাউন্ট করতে হবে। তিন সেট দিয়ে শুরু করে ছ’সেট পর্যন্ত লক্ষ্যমাত্রা স্থির করতে হবে।
ডাবল হ্যান্ড বা দু’হাতে ডাম্বল তুলতে হলেও নিয়ম এক। তবে সে ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে করতে হবে। শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে থাকবে। আলাদা করে এক দিকের সাপোর্ট থাকবে না।
ডাম্বেলের পরিবর্তে অন্য ওয়েট
প্রথম প্রথম যাঁরা করছেন, তাঁরা ডাম্বেলের পরিবর্তে এক লিটারের দু’টি জলের বোতল নিয়ে করতে পারেন। বোতলে জলের বদলে বালি ভরে নিতে পারেন। এতে ভয়ও কাটে, আবার কঠিনতর ব্যায়াম করার সাহস জোগায়। ডাম্বেল রোজ় যেমন শরীরের ক্ষমতা বাড়ায়, তেমনই নতুন কিছু করে দেখানোর উদ্দীপনাও বাড়ায়।