অভিনব উপহার। ছবি: সংগৃহীত।
রঙিন চকচকে কাগজে মোড়া জন্মদিনের উপহারের বাক্সে কী আছে তা নিয়ে কৌতূহল কম-বেশি সকলেরই থাকে। সেই উপহার যদি আবার খুব কাছের মানুষের দেওয়া হয়, তা হলে তো কথাই নেই। কিন্তু বাবার কাছ থেকে জন্মদিনে কালো, নোংরা জলভর্তি একটি বোতল উপহার পেয়ে স্তম্ভিত মেয়ে। হঠাৎ কেন এমন উপহার পেলেন, তিনি সেই কারণই জানালেন সমাজমাধ্যমে।
প্যাট্রিশিয়া মৌ নামের ওই তরুণী জানিয়েছেন, প্রতি বছর জন্মদিনে তাঁর বাবা মাথা খাটিয়ে নানা রকম জিনিস উপহার দেন। খেলার পুতুল, পোশাক, প্রসাধনী কিংবা কেক-চকোলেটের মতো আকর্ষণীয় উপহার নয়। প্রাথমিক চিকিৎসার বাক্স, পেপার স্প্রে, এনসাইক্লোপিডিয়া, চাবির রিং এবং নিজের লেখা বইয়ের মতো এমন অনেক কিছুই সেই তালিকায় রয়েছে। বাহ্যিক ভাবে যা খুব আকর্ষণীয় না হলেও জীবনে কখনও না কখনও কাজে লাগবেই। কিন্তু এই বছর যে উপহার তিনি পেয়েছেন, তা কোন কাজে লাগতে পারে?
প্যাট্রিশিয়ার বাবা জানিয়েছেন, তিনি আসলে তাঁর মেয়েকে জীবন উপহার দিয়েছেন। আর নোংরা জল ভর্তি বোতলটিকে রূপকের মোড়কে ব্যবহার করেছেন তিনি। ওই নোংরা জলভর্তি বোতলটি বার কয়েক ঝাঁকিয়ে নিয়ে তিনি বলেন, এই হল আমাদের জীবন। জীবনের যাত্রাপথ সব সময় খুব মসৃণ নয়। এমন অনেক মুহূর্ত আসে, যে সময়ে মনে হয় দেওয়ালে পিঠ ঠেকে গিয়েছে। ঘুরে দাঁড়ানোর পথ নেই। চোখের সামনে সব কিছু ঝাপসা মনে হয়। ঠিক এই নোংরা জলের বোতলের মতো। কিন্তু সেই সময় অস্থির না হয়ে মনকে যদি বোতলের জলের মতো থিতু হতে দেওয়া যায়, সেই পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে আসার পথ সহজ হবে।
বাবার দেওয়া এই উপহার এবং উপদেশ, প্যাট্রিশিয়াকে নতুন একটি জন্ম দিয়েছে বলে সমাজমাধ্যমে উল্লেখ করেছেন তিনি। তাঁর এই পোস্ট দেখে অনুপ্রাণিত হয়েছেন বহু মানুষ। প্যাট্রিশিয়ার বাবার অভিভাবকত্বের প্রশংসা করেছেন অনেকেই। এক সমাজমাধ্যম ব্যবহারকারী লিখেছেন, “এমন উপহার সারা জীবনের। চাইলেই বোতলের জল ফেলে দেওয়া যায়। কিন্তু অন্তরের শিক্ষা নষ্ট হওয়ার নয়।”