মরেলস এবং থম্পসন দম্পতি। ছবি- সংগৃহীত
ক্যালিফোর্নিয়ার ক্রিস্টিন মরেলস এবং ডেবি থম্পসনের বন্ধুত্বের বয়স প্রায় এক যুগেরও বেশি। একেবারে স্কুল থেকে কলেজ পেরিয়ে বিয়ে পর্যন্ত একে অন্যের পাশে ছিলেন তাঁরা।
সংবাদমাধ্যমকে মরেলস জানান, “আমরা প্রায় সব কিছুই একসঙ্গে করেছি। শুধু আমাদের বাগ্দান এবং বিয়ের বছর দুটি আলাদা ছিল।”
২০১৫ সালে মরেলস ‘পলিসিস্টিক কিডনি ডিজ়িজ়’-এ আক্রান্ত হন। এটি জিনবাহিত একটি রোগ, ধীরে ধীরে যা কিডনির কার্যক্ষমতা নষ্ট করে, একেবারে বিকল করে দেয়। তখন প্রতিস্থাপন ছাড়া আর কোনও উপায় থাকে না।
মরেলসও তেমনই এক জন মানুষের সন্ধানে ছিলেন, যিনি কিডনি দান করে তাঁকে পুনর্জীবন পেতে সহায়তা করবেন। মরেলসের অন্তরঙ্গ বন্ধু থম্পসন এই সুযোগ হাতছাড়া করতে চাননি।
সংবাদমাধ্যমকে থম্পসন জানান, “এই বিষয়ে কিছু না জেনেই আমি এগিয়ে যাই। ক্রিসকে ছাড়া আমি কিছু ভাবতে পারি না। ওর জন্য আমি সব করতে পারি।”
এর পর চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী সব পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর এক বন্ধু, অন্য বন্ধুকে কিডনি দিতে সক্ষম হন।
কিন্তু গল্প এখানেই শেষ নয়, ২০২০ সালে মরেলসের স্বামী রন-এরও একই ভাবে কিডনি প্রতিস্থাপনের প্রয়োজন পড়ে। দীর্ঘ দিন ধরে ‘টাইপ ২’ ডায়াবিটিস রোগের সঙ্গে লড়াই করতে করতে তাঁর একটি কিডনি বিকল হয়ে পড়ে।
মরেলস এবং থম্পসনের বন্ধুত্বের কথা ভেবেই রন প্রথমে কাউকে কিছু জানাতে চাননি। কিন্তু রোগ তো চাপা থাকে না। ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই ডেভির স্বামী ব্র্যাড কিডনি দান করার ইচ্ছাপ্রকাশ করেন। অদ্ভুত ভাবে, রন এবং ব্র্যাডের রক্তের গ্রুপ এবং কিডনি দিতে গেলে যে যে ‘প্যারামিটার’ গুলিতে মিল থাকা প্রয়োজন, তা মিলেও যায়। কিডনি দেওয়ার পর ব্র্যাড এবং কিডনি গ্রহণ করার পর রন একেবারেই সুস্থ আছেন বলে জানান চিকিৎসকরা।
এখন তাঁরা চার বন্ধু একসঙ্গেই ঘুরতে যান, খেতে যান। ক্রিস্টিন এবং ডেবি তো বন্ধু ছিলেনই। এখন তাঁদের স্বামীরাও বন্ধুত্বের এক অনন্য নজির গড়লেন।