প্রতীকী ছবি।
লকডাউনের নিয়ম বৃহস্পতিবার থেকেই শিথিল হল রাজ্যে। অনেক কিছুই খুলে যাচ্ছে। অনেকের জন্য সেটা সুখবর। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার দিকে একটু একটু করে এগিয়ে যাচ্ছেন তাঁরা। কিন্তু অনেকের জন্যই বাড়তি উদ্বেগ তৈরি করছে এই পরিস্থিতি। স্বাভাবিক জীবনে ফেরার ভয় গ্রাস করছে তাঁদের। কেন এমন হচ্ছে, সে কথা চিন্তা করে আরও মানসিক চাপ বাড়ছে। আপনিও কি সেই দলে পড়েন? চিন্তা করবেন না, আপনি একা নন। অনেকেরই এই সমস্যা হচ্ছে। জেনে নিন কেন।
করোনা যায়নি
সকলের টিকাকরণ এখনও হয়নি। অনেকেরই হয়তো একটা টিকা পড়েছে। এর মাঝে লকডাউন পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে গেলে ফের যদি রোজ কাজে বেরোতে হয়, তা হলে বাড়ির বাকি সদস্যদের সুরক্ষিত রাখব কী করে— এই চিন্তা অনেকরই মনে জায়গা করে নিয়েছে। এর মাঝে ভাইরাসের নিত্য নতুন প্রজাতি এবং আসন্ন তৃতীয় ঢেউ নিয়ে আশঙ্কা করছেন চিকিৎসকেরাও। বারবার সতর্ক করা হচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে লক়ডাউন খুলে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়াই স্বাভাবিক।
সামাজিক দুশ্চিন্তা
বহুদিন ধরে আমরা বেশি মানুষের মুখ দেখিনি। টিকাকরণ মিটে গেলে ফের বন্ধুবান্ধব-আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে দেখা সাক্ষাৎ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে। অনেক মানুষ সেই সম্ভাবনায় আপ্লুত হলেও অন্তরমুখীদের জন্য বিষয়টা খুব একটা সুখকর নয়। এমনকি, যাঁরা অন্তরমুখী নন, তাঁদেরও হঠাৎ করে ৫০০ লোকের ভিড়ে যাওয়া নিয়ে অস্বস্তি হতেই পারে।
জনসমাগমে ভয়
বাসে-ট্রামে যাতায়াত করা বা মেট্রো স্টেশনে লাইনে দাঁড়ানোর অভ্যাস অনেকদিন চলে গিয়েছে। কিন্তু সেই সময়টা যে কোনও দিন ফিরেও আসতে পারে। বহু মানুষের ভিড়ে না গিয়ে গিয়ে হঠাৎ করে অনেকর মাঝে যেতে না-ই চাইতে পারেন কিছু মানুষ। সামাজিক দূরত্ব মেনে চলা যেখানে স্বাস্থ্যবিধি হয়ে গিয়েছে, সেখানে আগের পরিস্থিতি ফিরে এলে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হতেই পারে। ফের কোনও রোগ-ব্যধি হবে না তো— এই ভয় চট করে মন থেকে না-ও যেতে পারে।
কী ভাবে সামলাবেন
চিনে একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে ১৪-৩৫ বয়সিদের মধ্যে অন্তত ১৩ শতাংশ অতিমারি নিয়ে পিটিএসডি বা পোস্ট ট্রমাটিক ডিসর্ডারে ভুগছেন। করোনাভাইরাস নিয়ে আশঙ্কা, দুশ্চিন্তা, উদ্বেগ— সবই স্বাভাবিক। এই ভাইরাস আমাদের সকলের কাছ থেকে কিছু না কিছু কেড়ে নিয়েছে। তাই এই রোগ নিয়ে মানসিক সমস্যা তৈরি হতেই পারে।
কিন্তু কী ভাবে সামাল দেওয়া যাবে এই দুশ্চিন্তাগুলো। মনোবিজ্ঞান অনুযায়ী যে কোনও বড় দুর্ঘটনার পর অন্তত এক মাস পিটিএস়়ডি থাকতে পারে। সেটা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেই। কিন্তু অতিমারির বিষয়টা অন্য। দেড় বছর ধরে পরিস্থিতি ঘুরে ফিরে একই রকম থাকছে। তাই কোনও বিষয়ে খুব বেশি মানসিক চাপ অনুভব করলে আপনি বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ নিতে পারেন।
কোন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন হয়ে পড়ছেন, সেটা একটু খেয়াল করার চেষ্টা করুন। এখনই ভারতের কোনও অংশেই টিকাকরণ সম্পূর্ণ হয়নি। তাই বাইরে ঘোরাফেরা করা নিয়ে দুশ্চিন্তা হওয়া অস্বাভাবিক নয়। তবে সব বিষয়ে এই ভয়ের কোনও ভিত্তি রয়েছে কিনা, সেটা বুঝতে হবে। ধরুন আপনার টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। আপনার প্রতিবেশীরও টিকাকরণ হয়ে গিয়েছে। দু’জনের কেউ-ই বাড়ি থেকে তেমন বেরোন না। কোনও অতিথির আনাগোনাও নেই। তা-ও বারান্দা থেকে তাঁর সঙ্গে গল্প করতে ভয় করছে? সে ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়াই ভাল।