বিশ্ত গায়ে চাপিয়েই ফিফা সভাপতির হাত থেকে বিশ্বকাপ ট্রফি নেন মেসি। ছবি: সংগৃহীত
ফ্রান্সের সঙ্গে হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের পর আর্জেন্টিনা শিবিরে তখন জয়ের উৎসব। ৩৬ বছরের খরা কাটিয়ে মেসি-সহ সতীর্থদের মুখে তখন তৃপ্তির হাসি। এরই মাঝে শুরু হল পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান। মেসির হাতে বিশ্বকাপ দেখবেন বলে অপেক্ষা করছেন অগণিত ভক্ত। কিন্তু বিশ্বকাপ নয়, প্রথমে কাতারের রাজা লিয়োনেল মেসিকে পরিয়ে দিলেন কালো রঙের আলখাল্লা। বিশ্বকাপ হাতে তুলে দেওয়ার আগে কেন হঠাৎ আলখাল্লা পরানো হল আর্জেন্টিনার নায়ককে? বিশ্বকাপ শেষ হয়ে গেলেও এই কৌতূহল রয়েই গিয়েছে অনেকের মনে।
এই আলখাল্লা পরানোর তাৎপর্য কী?
এই আলখাল্লা আসলে আরব দেশগুলির ঐতিহ্যবাহী পোশাক। আরবি ভাষায় এই আলখাল্লাকে বলা হয় ‘বিশ্ত’। শব্দটি এসেছে ফারসি ভাষা থেকে। উৎসব-অনুষ্ঠান বা বিশেষ কোনও দিনে মূলত এই ধরনের পোশাক পরার চল রয়েছে পুরুষদের মধ্যে। আলখাল্লার সঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে দেশের ঐতিহ্য এবং আভিজাত্য। এটা অনেকটা উত্তরীয় পরিয়ে সম্মানজ্ঞাপনের মতো। কাতারে এই বিশ্ত পরিয়ে সম্মানিত করার প্রথা রয়েছে। জয়ের পর সম্মান জানাতে দেশের পক্ষ থেকে মেসিকে পরানো হয় সেটি। জার্সির উপর পরিয়ে দেওয়া হয় সেটিই। বিশ্ত গায়ে চাপিয়েই ফিফা সভাপতির হাত থেকে বিশ্বকাপ ট্রফি নেন মেসি।
কী দিয়ে তৈরি হয় এই বিশ্ত?
সম্মানিত করতে এই পোশাক তৈরির মূল উপাদান হল উল এবং উটের পশম। খুব মোটা নয়। আবহাওয়ার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেই মূলত তৈরি হয় এই বিশ্ত। ঠান্ডায় পরার জন্য মোটা বিশ্ত পাওয়া যায়। গ্রীষ্মে পরার জন্য পাতলা বিশ্ত কিনতে পাওয়া যায়। উপকরণে বৈচিত্র না থাকলেও নানা রঙের আলখাল্লা পাওয়া যায়। সাদা, কালো, বাদামি, ধূসর— রঙ হয় বিভিন্ন।
কালো উলের সোনালি পাড় দেওয়া যে বিশ্ত মেসিকে দেওয়া হয়, তা কিন্তু পেতে পারেন আপনিও। এই ধরনের আলখাল্লার দাম শুরু হচ্ছে ১০০ ডলার থেকে। ভারতীয় মুদ্রায় যার দাম পড়বে ৮,০০০ টাকা মতো। আলখাল্লাটির গুণগত মান অনুযায়ী এর দাম বেশি পড়তে পারে। এই আলখাল্লা নিজের সংগ্রহে রাখতে চাইলে অনলাইন বিপণিগুলিতে খোঁজ করে দেখতে পারেন। রং এবং পছন্দসই নকশা অনুযায়ী পেয়ে যাবেন।