সালোঁয় মালিশ করানো কেন বিপজ্জনক? ছবি: ফ্রীপিক।
পাড়ার মোড়ের সেলুন হোক বা ঝাঁ চকচকে আধুনিক সালোঁ, চুল কাটানোর পর বা দাড়ি-গোঁফ ছাঁটা শেষ হলে ঘাড়-মাথায় মালিশ না করিয়ে আসন ছাড়তে চান না অনেকেই। কোথাও মালিশের জন্য আলাদা টাকা নেওয়া হয়, কোথাও আবার মালিশ করা হয় বিনামূল্যেই। অনেকে আবার পয়সা খরচ করে সালোঁয় গিয়ে মাথা ও ঘাড় মালিশ করান। কেউ আবার শ্যাম্পুও করেন সালোঁয় গিয়ে। ওই মিনিট দশেকের আরাম যেন রোজের জীবনে লাখ টাকায় কেনা বিলাসিতার সমান। তবে জানেন কি, ক্ষণিকের এই আরাম বাড়়িয়ে দেয় স্ট্রোকের ঝুঁকি? থেকে যায় প্রাণনাশের আশঙ্কাও। ভাবছেন তো কী করে?
স্নায়ুরোগ চিকিৎসকদের মতে, সেলুন বা সালোঁয় এই ধরনের মালিশ যাঁরা করে থাকেন, তাঁরা অনেকেই খুব একটা অভিজ্ঞ নন। মানুষের শরীর, সেখানকার শিরা-ধমনী সম্পর্কে তাঁদের ধারণাও কম। তাই এই ধরনের মালিশের ক্ষেত্রে ঝুঁকি অনেক বেশি। অনেক সময়ে অনভিজ্ঞ হাতে মস্তিষ্কের ভুল জায়গায় হঠাৎ চাপ পড়ায় মাথা এ দিক-ও দিক করতে গিয়ে মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহকারী প্রধান ধমনীটি ছিঁড়ে বিচ্ছিন্ন হয়ে যেতে পারে। কখনও বা কিছু ক্ষণের জন্য বন্ধ হয়ে যেতে পারে রক্তসংবহন। স্নায়ুর রোগ তো হতেই পারে, আকছার হয়ও, এমনকি, সমস্যা গড়াতে পারে স্ট্রোক পর্যন্ত।
সাধারণত যে সব কারণে স্ট্রোক হয়, তার মধ্যে এই কারণটি অন্যতম। চিকিৎসকদের মতে, মধ্য বয়সেই স্নায়ুর রোগ ডেকে এনেছেন বা স্ট্রোকের শিকার হয়েছেন, এমন অনেকের জীবনযাপন খতিয়ে দেখা গিয়েছে, এঁদের বেশির ভাগেরই এমন নেওয়ার অভ্যাস ছিল।
তা হলে কি সারা দিনের ধকলের পর শরীরের ওইটুকু আরামও বাদ?
এই অভ্যাসে এখনই দাঁড়ি টানতে হবে। মালিশ করাতে চাইলে বাড়িতে প্রশিক্ষিত কোনও ফিজিয়োথেরাপিস্ট বা ম্যাসিউসের কাছ থেকেই করান মাসাজ। আরাম পেতে অসুবিধা নেই, তবে নিতে হবে সতর্কতা। সেলুনে করা ঘাড়ের কাছে মট মট করা শব্দ যতই আরামদায়ক হোক না কেন, তা মৃত্যুর কারণ হতে পারে। তাই সাবধান!
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। যে কোনও সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে চিকিৎসকের সঙ্গে পরামর্শ নিন।