সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য কেমন? ছবি- সংগৃহীত
কথায় বলে ছোট্ট শিশু আসলে নরম মাটির মতো। তাকে যেমন আকার দেওয়া হবে, সে তেমন রূপ নেবে। শারীরিক ভাবে শিশুরা কেমন হবে, তা অনেকটাই নির্ভর করে তার বড় হয়ে ওঠা এবং খাদ্যাভাসের উপর। কিন্তু শিশুদের মানসিক স্বাস্থ্যের চাবিকাঠি থাকে তার পরিবারের হাতে। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে সে তার নিজের ভাল লাগা, মন্দ লাগা, আবেগ, কষ্ট— এই সব অনুভূতির সঙ্গে কী ভাবে যুঝতে পারে বা মানিয়ে চলতে পারবে, তার অনেকটাই নির্ধারিত হয়ে যায় ছোটবেলায়।
মনোবিদদের মতে, ছোটদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখতে প্রাথমিক পর্যায়ে হাল ধরতে হবে অভিভাবককেই। বাড়িতেই তৈরি করতে হবে এমন পরিবেশ, যেখানে মন খুলে কথা বলতে পারবে খুদেরা। সঙ্গে দিতে হবে জীবনপাঠও।
এ ছাড়াও আর কোন কোন বিষয় মাথায় রাখা জরুরি?
১) ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করা
সন্তান ছোট বলে তার সব বিষয়ে অযাচিত ভাবে ঢুকে পড়ার অভ্যাস পরবর্তী কালে বড় সমস্যার মুখে ফেলতে পারে। বড় বয়সে সে-ও কিন্তু এমন ভাবে অভ্যস্ত হবে। অন্যদের কথার মধ্যে জোর করে ঢুকে পড়ার প্রবণতা তৈরি হবে। উল্টো দিক থেকে অভিভাবকদেরও সংযত হতে হবে। শিশুরা ছোট, বুঝতে পারবে না ভেবে তাদের সামনে এমন কোনও কথা বলবেন না, যা বলার কথা নয়।
২) নিজের মত প্রকাশ করার স্বাধীনতা
শিশুদের মনে সারা ক্ষণই নানা প্রশ্নের ভিড়। কোথায় কোন প্রশ্ন করা উচিত বা কোথায় কোন কথা বলা উচিত নয়, সে বিষয়ে জ্ঞান থাকে না। তাই অনেক অভিভাবক সন্তানকে ভয় দেখিয়ে রাখেন। যাতে তারা লোকসমাজে বেয়াড়া কোনও প্রশ্ন করে মা-বাবাকে বিপদে না ফেলে। কিন্তু এই ভয় থেকেই জন্ম নেয় কুণ্ঠাবোধ। যা পরবর্তী কালে শিশুর মত প্রকাশের ক্ষমতাকে খর্ব করে।
৩) স্বতন্ত্রতা বজায় রাখা
অনেক কিছু পরিবেশ থেকে গ্রহণ করলেও, নিজের পরিবারের কাঠামো বুঝে নিজস্বতা বজায় রাখার পরামর্শ দিন। কারণ, প্রতিটি পরিবারের ঐতিহ্য, রুচিবোধ, ভাল লাগা, মন্দ লাগা আলাদা। তাই অন্য কাউকে দেখে প্রভাবিত হওয়ার অভ্যাস ছোট থেকেই শুধরে দিন। ছোটরা কিন্তু বড়দের দেখেই সব কিছু শেখে। সে ক্ষেত্রে অভিভাবক হয়ে নিজে যদি সে সব অভ্যাসে অভ্যস্ত হন, সন্তানকে ঠিক জিনিস শেখানো মুশকিল হয়ে যাবে।