সম্পর্কের গভীরতা বাড়ানোর প্রাচীন ‘ফর্মুলা’ কী কী? ছবি: ফ্রিপিক।
কথায় বলে, পুরনো চাল ভাতে বাড়ে। সে প্রেম নতুন হোক বা পুরনো, সম্পর্কের চাকা গড়গড়িয়ে গড়াতে হলে কাজে আসতে পারে প্রাচীন ফর্মুলাই।
অনেকেই বলেন, আগেকার দিনে সম্পর্ক এক বার জুড়লে সহজে ভাঙত না। সঙ্গীর হাত ধরেই বার্ধক্যে পৌঁছনো যেত। নিত্য দিনের ঝগড়া-অশান্তি যে হত না, তা নয়। তবে সব কিছুর পরেও মনের বাঁধন অটুটই থাকত। আর এখন নিত্য নতুন প্রেমের জোয়ারে ভাসে মন। সামান্য কথা কাটাকাটি, মনোমালিন্যতেই ইতি পড়ে যায় সম্পর্কে। বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নিতে দেরি হয় না। কাউন্সিলের বাতলে দেওয়া হাজার রকম নিদান মেনেও ভাঙা মন আর জোড়া লাগে না।
তা হলে মনে হতেই পারে প্রেমের সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সেই প্রাচীন ‘ফর্মুলা’ কী? এই বিষয়ে নানা মুনির নানা মত। তবে এমন কিছু অভ্যাস আছে, যা মেনে চললে সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হতে পারে।
১) সম্পর্ককে সময় দেওয়া জরুরি। সে নতুন হোক বা পুরনো। সঙ্গীর সঙ্গে সময় কাটানোই সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার সবচেয়ে ভাল টোটকা। সেই সময় নিজের সমস্যা, পেশাগত জটিলতার কথা নয়, শুধুই ভালবাসার কথা বলুন।
২) অনেকের মাঝে থেকেও সঙ্গীকে আলাদা করেই গুরুত্ব দিন। বোঝান, আপনি পাশেই আছেন। যদি দূরে যেতে হয়, তা হলেও প্রতি দিন বোঝাতে হবে আপনি তাঁর কথা ভাবেন, তাঁর প্রতিটি সমস্যায় পাশেই থাকবেন।
৩) সম্পর্কে কোনও জড়তা রাখবেন না। সম্পর্ক সহজ করে তুলতে কোনও কিছু চেপে না রেখে মন খুলে বলে দিন। এমনকি, সঙ্গীর কোনও আচরণও খারাপ লাগলে, তা সোজাসুজিই বলুন।
৪) ভালবাসার মানুষটিকে বার বার বলুন ভালবাসার কথা। ভাল সম্পর্কের জন্য শুধু ভালবাসাই যথেষ্ট নয়, প্রয়োজন তার প্রকাশেরও।
৫) প্রতিশ্রুতি দিলে তা রাখার চেষ্টা করুন। কথা দিয়ে কথা না রাখার অভ্যাসে বিদ্বেষ বাড়তে থাকে। সম্পর্কেও তার প্রভাব পড়ে। দেখা করবেন বলে দেখা দিলেন না, কিংবা ফোন করার কথা বেমালুম ভুলে গেলেন, দীর্ঘ দিন এমন চলতে থাকলে সমস্যা বাড়বে বই কমবে না।
৬) সব সময়ে একে অপরের সঙ্গে মতের মিল হবে না। মতান্তর থাকবেই। তবে তাই বলে সব সময়ে অপর জনের বিরুদ্ধে যাওয়া ঠিক নয়। এমন অনেক বিষয় থাকবে, যা হয়তো আপনার পছন্দ নয়। পারস্পরিক বোঝাপড়ায় তার সমাধান করতে হবে।
৭) একে-অপরের খারাপ সময়ে মানসিক জোর দিন। সম্পর্ক ভাল রাখতে মানবিক স্পর্শ জরুরি।
৮) ছোট ছোট বিষয়েও সঙ্গীকে সাহায্য করুন। কাজ বা দায়িত্ব চাপিয়ে দেওয়া নয়, বরং ভাগ করে নিন। তা হলে একে অপরের প্রতি সম্মান থাকবে। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই দায়দায়িত্ব নিয়ে মনোমালিন্য হবে না।
৯) সঙ্গীর মন বোঝার চেষ্টা করুন। বাইরের চাকচিক্য সাময়িক। অন্যের সঙ্গে তুলনা না টেনে, তাঁর ভাল দিকগুলিকেই বুঝতে হবে। নিজের মতো করে সঙ্গীকে বদলানোর চেষ্টা সম্পর্কে তিক্ততা আনতে পারে। বরং তাঁকে তাঁর মতো করেই বোঝার চেষ্টা করুন। এতে পরস্পরের প্রতি বিশ্বাস ও ভরসার জায়গা তৈরি হবে।
১০) সম্পর্কে আছেন মানেই ব্যক্তিগত বিষয় বলে কিছু থাকবে না, তা নয়। সম্পর্কেও একটি লক্ষণরেখা থাকা জরুরি। চেষ্টা করুন সেই রেখা না ডিঙোনোর। তাতে সম্পর্ক ঠিক থাকবে।
১১) একে অপরের স্বপ্নপূরণে উৎসাহিত করুন। এতে সম্পর্কের শিকড় ধীরে ধীরে আরও গভীরে ছড়াতে শুরু করবে। সঙ্গীর ভরসার মানুষ হয়ে ওঠাই সম্পর্কের গভীরতা বাড়ানোর অন্যতম সেরা উপায়।