Miss Jojo

সমাজ কী বলল, তা নিয়ে কখনওই ভাবিনি, দত্তক পুত্রকে নিয়ে দিব্যি দিন কাটাচ্ছি: জোজো

করোনাকালে আদিকে দত্তক নেন জোজো। বাড়িতে নিয়ে আসেন তাকে। তার পর থেকে গায়িকার জীবন অনেকটা বদলে গিয়েছে।

Advertisement
সুচন্দ্রা ঘটক
শেষ আপডেট: ১২ মে ২০২৪ ১৭:৪৭
Singer Jojo talks about her decision of adopting a male child and the social stigma attached to such decisions

ছেলে আদির সঙ্গে জোজো। —নিজস্ব চিত্র।

বছর চারেকের পুত্র তাঁর। আদি বলে ডাকেন। মেয়ের বয়স ২৮। নাম বাজো। মিস জোজোর মা সত্ত্বা প্রকাশ পায় এই দু’টি নাম ঘিরেই। তবে দুই সন্তানের পরিচয়ে খানিকটা ফারাক আছে। বাজোকে জন্ম দিয়েছেন জোজো। আদিকে দত্তক নিয়েছেন। কিন্তু জোজো বলেন, ‘‘আমার কাছে দু’জনের মধ্যে কোনও তফাত নেই। আমার মনে হয় না, দত্তক সন্তানের প্রতি ভালবাসায় কোনও রকম ফারাক হয়।’’ যদিও সমাজ যে এমন নানা কথা বলে, সে সব উঠে আসে গায়িকা জোজোর সঙ্গে আলোচনায়।

Advertisement

করোনাকালে আদিকে দত্তক নেন জোজো। তার পর থেকে জীবন অনেকটা বদলে গিয়েছে। আক্ষরিক অর্থেই। নতুন করে মা হওয়ার অভিজ্ঞতা একেবারেই আলাদা। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, ‘‘প্রথম যে দিন রাতে আদি আমার কাছে থাকল, আমার তো এসির মধ্যে বসেও ঘাম হচ্ছিল। আসলে বাজো তো অনেক দিন হল বড় হয়ে গিয়েছে। আর ওকে আমার সে ভাবে বড় করতে হয়নি। আমার ২০ বছর বয়সে বাজো হয়েছে। বলা যায়, আমরা মা-মেয়ে একসঙ্গেই বড় হয়েছি। আদির ক্ষেত্রে ব্যাপারটা আলাদা। ওকে বড় করা এখন আমার মূল দায়িত্ব।’’ এবং এক অর্থে সে দায়িত্ব একা হাতেই সামলাচ্ছেন। স্বামী ও মেয়ে তো এখন যাঁর যাঁর কাজের সূত্রে বাইরে। বাইপাসের ধারে নতুন ফ্ল্যাট কিনেছেন। সেখানে আদিকে নিয়েই থাকেন জোজো।

Singer Jojo talks about her decision of adopting a male child and the social stigma attached to such decisions

মিস জোজো। —নিজস্ব চিত্র।

মেয়ে বড় হয়ে যাওয়ার পরে হঠাৎ সন্তান দত্তক নেওয়ার সিদ্ধান্ত শুনে নানা জনে নানা কথা বলেছিলেন জোজোকে। তবে তিনি তাতে কান দেননি। জোজো বলেন, ‘‘আমি বরাবরই সন্তান দত্তক নিতে চেয়েছি। কিন্তু পদ্ধতিটি এতই জটিল যে আগে হয়ে ওঠেনি। আর কে আমাকে কী বলল, তা নিয়ে মাথা ঘামাই না। সমাজকে পাত্তা দিই না কখনওই!’’ কথায় কথায় ফিরে যান নিজের আগের জীবনের গল্পে। তাঁর কাজের ধরন, জীবনযাপন, কোনও কিছু নিয়েই সমাজ কখনও পাশে থাকেনি, মনে করান জোজো। তিনি বলেন, ‘‘হঠাৎ ভাবব কেন! সমাজ কি আমার পাশে থাকবে?’’ অনেকেই তাঁকে বলেছেন, বাজোর মতো করে ভালবাসতে পারবেন না আদিকে। কারণ, এই ছেলেকে তিনি জন্ম দেননি। জোজো সে সব কথার তোয়াক্কা করেন না। বরং গায়িকা বলেন, ‘‘আরও চারটি শিশুর দায়িত্ব নিতে পারলে খুশি হব। কত অনাথ শিশু আছে। একটু যত্ন পেলে অনেক ভাল হতে পারে তাদের জীবন। লোকের যত উল্টোপাল্টা কথা। এখনও দত্তক নেওয়ার কথা শুনলে এ সব বলেন কেউ কেউ। সে সবে পাত্তা দিলে তো কিছুই করতে পারব না।’’

আদি তাঁর জীবনে আসার পর থেকে স্বজনবিচ্ছেদও ঘটেছে জোজোর। সকলে এক ভাবে এখনও মেনে নেন না দত্তক নেওয়ার বিষয়টি। কিন্তু জোজোর অন্দরের মা বলেন, ‘‘আমার ছেলে সবের আগে। ও আছে বলে যদি কারও আমার বাড়িতে আসতে ভাল না লাগে, তো আর কী করা যাবে!’’ সময়ও এখন হাতে কম। ছেলের খাওয়াদাওয়া, লেখাপড়া নিয়ে অনেক বেশি ভাবেন। তার মধ্যেই চলছে জোরকদমে কাজ। আজ মঞ্চে গান, তো কাল টেলিভিশনের শোয়ের শুটিং। অনেক সময় সঙ্গে সঙ্গেই যায় আদি। মঞ্চেও ওঠে মায়ের সঙ্গে। মা গর্বের সঙ্গে জানান, আদির গলায় সুর আছে, ঠিক তার দিদি বাজোর মতো!

আরও পড়ুন
Advertisement