ছোট থেকে কী কী শেখালে সন্তান জীবনে সফল হবেই, পরামর্শ সুধা মূর্তির। ফাইল চিত্র।
সন্তানকে সঠিক শিক্ষা দিতে হবে। কিন্তু কেমন শিক্ষা? শুধু বইয়ের পাঠ দিলেই তো হবে না! সন্তানকে বড় করার ক্ষেত্রে নানা কথাই মাথায় রাখতে হয় বাবা-মায়েদের। বিশেষ করে এখনকার বাবা-মায়েরা সন্তানকে বেশি সময় দিতে পারেন না। কর্মব্যস্ততার কারণে সারা ক্ষণ সঙ্গ দেওয়াও হয় না। সে ক্ষেত্রে কী ভাবে সন্তানের মধ্যে মূল্যবোধ তৈরি করা যায়, কী ভাবে নিজের দায়িত্ব নিতে শেখানো যায়, সে নিয়েই চিন্তাভাবনাই বেশি থাকে। শৈশব থেকে একটু একটু করে প্রস্তুত করতে হবে সন্তানকে, কৈশোরে গিয়ে বোঝাতে হবে আগামীর কথাও। কী ভাবে ধাপে ধাপে তা সম্ভব, সে বিষয়ে পরামর্শ দিলেন শিক্ষাবিদ, লেখিকা, সমাজকর্মী সুধা মূর্তি।
সুধার ৫ টোটকা
১) বাবা-মাকে দেখেই শেখে ছোটরা। তাই সন্তানের সামনেই বাবা-মা যদি অনবরত ঝগড়া করেন বা পরস্পরকে কটু কথা বলেন, তা হলে শিশুও তা শিখবে। একেবারেই বয়সোচিত নয়, এমন কোনও শব্দ যদি সন্তান বলে থাকে, তা হলে তাকে সেখানেই থামান। সে ধরনের শব্দবন্ধের বদলে নতুন কোনও শব্দ শেখান, যেগুলি শিশুর বোধগম্য হবে।
২) ভাল ব্যবহার করা, রেগে গেলেও নিজেকে কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবে সে, তা শেখানো জরুরি। যদি সন্তান আপনার কথা শুনে তেমন পথেই হাঁটে, তা হলে প্রশংসা করতেও ভুলবেন না। ছোট থেকেই শিশুর আচার-আচরণ ও ব্যবহারের প্রতি নজর দিলে পরবর্তীতে সে নিজেই নিজেকে সংযত রাখতে শিখে যাবে।
৩) সন্তানের মধ্যে দায়িত্ববোধ তৈরি করা খুব জরুরি। ছোট থেকেই ঘরের নানা কাজের দায়িত্ব দিন খুদেকে। এতে সে বুঝবে, সে-ও এই পরিবারেরই একজন। খুদেকে তার মত প্রকাশের স্বাধীনতাও দিতে হবে। তার পছন্দ-অপছন্দের ব্যাপারে নিজে থেকেই সিদ্ধান্ত নিতে দিন। ভুল হলে তা শুধরে দিয়ে সঠিকটা বোঝান। এ ভাবেই দায়িত্ববোধ তৈরি হবে।
৪) বেশির ভাগ পরিবারেই টাকাপয়সার হিসাব রাখতে সাধারণত শেখানো হয় না সন্তানকে। তবে ছোট থেকে যদি তাদের হাতে অল্প করে টাকাপয়সা দিয়ে তা কী ভাবে খরচ করতে হবে এবং কী ভাবে জমিয়ে রাখতে হবে তা শেখানো যায়, তা হলে সঞ্চয়ের ধারণা তৈরি হবে। বেহিসেবি খরচেও রাশ টানার অভ্যাস তৈরি হবে। শিশুকে শেখান, যে টাকা তাকে দেওয়া হচ্ছে তা দিয়ে কেবল নিজের জিনিস কেনা নয়, অন্যকে সাহায্যও করা যায়।
৫) ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি সন্তানকে বড় করায় খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ভবিষ্যৎ নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে সন্তানের মনেও তার ছাপ পড়বে। তাই আত্মবিশ্বাস, সাহস এবং ইতিবাচক মনোভাব প্রদর্শন করা একান্ত প্রয়োজন।