দু’জনের বন্ধুত্ব হবে কী ভাবে? ছবি: সংগৃহীত।
বেশ অনেকটা সময় বাড়ির পোষ্য সারমেয় ভোম্বলকে গৃহসহায়িকার তত্ত্বাবধানে থাকতে হয়। সেই একাকিত্ব থেকে মনখারাপ হতে পারে ভেবে সম্প্রতি এক খুদে সদস্য পটলকে বাড়িতে এনেছেন। পটলও চারপেয়ে, তবে সে কুকুর নয়, বিড়াল। বাড়ির সবচেয়ে ছোট। স্বভাবতই সকলের খুব আদরের। কিন্তু সমস্যা তো অন্য জায়গায়। এত দিন যে বাড়িতে ভোম্বলের রাজত্ব ছিল, এখন সে জায়গা দখল করে বসেছেন নতুন সদস্যটি।
মুখোমুখি সাক্ষাতের সুযোগ এখনও হয়নি। কিন্তু তাতে কি? পটলের গন্ধ পেয়ে ভোম্বল এমন হুঙ্কার দিতে শুরু করেছে যে ঘুমের মধ্যে পটল বেচারা কেঁপে উঠছে। কিন্তু এক দিন তো দু’জনের পরিচয় করাতেই হবে। দুম করে দু’জনকে সামনে আনলে যে কোনও মুহূর্তে কিন্তু বিপদ ঘটতে পারে। নতুন দু’টি প্রাণীর সাক্ষাৎ যেন সুন্দর, স্বাভাবিক হয় তার জন্য কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখা প্রয়োজন।
দু’জনের আলাপ-পর্বের আগে প্রস্তুতি নেবেন কী ভাবে?
১) অন্তত প্রথম দিনটায় দু’টিকে আলাদা করে রাখার চেষ্টা করুন। যাতে দু’জনে দু’জনকে দেখতে পায়। কিন্তু আক্রমণ করতে না পারে। নতুন পরিবেশে আসার পর খুদে সদস্যটিকে সেখানকার পরিবেশের সঙ্গে মানিয়ে নেওয়ার সময় দিতে হয়। বাড়ির দুই পোষ্য কে কেমন স্বভাবের তা বুঝে নেওয়ার জন্য দু’পক্ষেরই কিছুটা সময় আলাদা থাকা প্রয়োজন।
২) পশুদের ঘ্রাণশক্তি প্রখর। বাড়ির পুরনো সারমেয়র সঙ্গে নতুন বিড়ালটির আলাপচারিতা শুরু হয় গন্ধ দিয়ে। প্রথম দেখাতেই দক্ষযজ্ঞ বাধাতে না চাইলে আগে থেকে পুরনো পোষ্যের খেলনা নতুনটির কাছে দিন। পোষ্য সারমেয়টির বিছানায় কিছু ক্ষণ কাটালে ওই গন্ধের সঙ্গে অভ্যস্ত হতে পারবে। মুখোমুখি হলে ওই চেনা গন্ধই নতুন আর পুরনোটির বন্ধুত্ব মজবুত করবে।
৩) নতুন সদস্যটি যদি পুরনোটির চেয়ে আকারে এবং বয়সে ছোট হয়, তা হলে তাকে বেশি বিরক্ত না করাই ভাল। বরং বাড়ির পুরনো সদস্যটিকে ধাতস্থ করতে হবে। তা হলেই দু’পক্ষের মধ্যে সমঝোতা বজায় থাকবে। বড়টির আওয়াজে ছোটটির যেন কষ্ট না হয়, কিংবা ছোটটিকে আদর করতে দেখলে বড় জনের মনেও যেন আঘাত না লাগে, সে দিকে নজর দিতে হবে।
৪) যে দিন প্রথম দু’পক্ষকে মুখোমুখি দাঁড় করাবেন, সে দিন অভিভাবকদের অত্যন্ত সতর্ক থাকা প্রয়োজন। দু’জনের প্রথম সাক্ষাৎ নিরাপদ দূরত্ব থেকে হওয়াই ভাল। পুরনো এবং নতুনটির মধ্যে আচরণগত কোনও সমস্যা দেখলেই সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
৫) দাদা-দিদি যেমন ভাই-বোনের খেয়াল রাখে, এ ক্ষেত্রেও তেমনটাই হওয়ার কথা। তবে এ ক্ষেত্রে অভিভাবকদের কাঁধে অনেকটা দায়িত্ব থেকে যায়। তাঁরা কেমন শিক্ষা দিচ্ছেন তার উপরেও অনেক কিছু নির্ভর করে। সম্পর্কের রসায়ন তত দূর পৌঁছতে কারও একটু বেশি সময় লাগতে পারে। সে নিয়ে চিন্তার কোনও কারণ নেই। প্রয়োজনে অভিজ্ঞ প্রশিক্ষকের সাহায্য নেওয়া যেতেই পারে।