নিয়ম মেনে শিশুকে স্নান করালে জ্বর হবে না, বাবা-মায়েরা জেনে রাখুন। ছবি: ফ্রিপিক।
বাতাসে হিমের পরশ লেগেছে ইতিমধ্যেই। ঠান্ডার আমেজ জানান দিচ্ছে শীত এসেই গেল প্রায়। আবহাওয়া পরিবর্তনের এই সময়ে ঠান্ডা লেগে সর্দিকাশি, জ্বর প্রায় প্রতি ঘরেই হয়। বিশেষ করে শিশুদের খুব তাড়াতাড়ি ঠান্ডা লেগে যায়। তাই অনেকেই শীত পড়ার এই সময়ে শিশুকে রোজ স্নান করাতে চান না। এই অভ্যাস কিন্তু একেবারেই ভাল নয়। সঠিক নিয়ম মানলে শীতের সময়েও শিশুকে রোজ স্নান করালে সর্দিকাশি হবে না।
এই বিষয়ে শিশুরোগ চিকিৎসক প্রিয়ঙ্কর পাল জানাচ্ছেন, শীতের শুরু থেকেই শিশুদের স্নান করানোর ব্যাপারে অনেক অভিভাবক আশঙ্কায় থাকেন। কিন্তু নিয়ম মানলে ভয় নেই। চিকিৎসকের মতে, শীতকাল মানেই স্নান বাদ দেওয়া যেতে পারে এই ধারণা থেকে আগে বেরোতে হবে। শিশুর জন্মের তিন দিন পর থেকেই তাকে স্নান করানো উচিত। তার পর দেড় মাস পর্যন্ত এক দিন অন্তর স্নান করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। কিন্তু যে সব শিশুর বয়স দেড় মাসের বেশি, তাদের রোজই স্নান করাতে হবে। তবে শিশুর যদি নিউমোনিয়া বা অ্যালার্জির ধাত থাকে, অথবা শ্বাসজনিত কোনও রোগ নিয়ে জন্মায়, তা হলে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে।
ঠান্ডার সময়ে কী ভাবে স্নান করাবেন শিশুকে?
শীতের সময়ে ত্বক বেশি শুষ্ক হয়ে যায়। আর শিশুদের ত্বক যে হেতু খুবই সংবেদনশীল থাকে, তাই রোজ স্নান না করালে ত্বক আরও শুষ্ক হয়ে র্যাশের সমস্যা দেখা দিতে পারে। পাশাপাশি শিশুকে পরিচ্ছন্ন না করলে ত্বকের রোগও হতে পারে। ঘাম জমে আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়বে শিশু। তাই সব সময়ে উষ্ণ জলে স্নান করান শিশুকে।
স্নানের জন্য নির্দিষ্ট সময় রাখতে হবে। চিকিৎসকের পরামর্শ, খুব বেশি বেলা করে স্নান করাবেন না। সকালের দিকে ভাল করে তেল মালিশ করে গরম জলে স্নান করাতে হবে শিশুকে। স্নান করিয়েই গরম জামাকাপড় পরিয়ে দিতে হবে। যে দিন কুয়াশা বেশি পড়বে সে দিনও স্নান বন্ধ নয়, বরং স্নানের সময়টা কমিয়ে ফেলুন। গায়ে জ্বর থাকলে বা আগে থেকেই ঠান্ডা লেগে থাকলে মাথা না ভেজালেও গরম জলে গা ভাল করে মুছিয়ে দিন।
খোলা জায়গায় শিশুকে স্নান করাবেন না। স্নানের পরে ভাল করে গা, হাত-পা মুছিয়ে শুকনো ও নরম তোয়ালে দিয়ে মুড়ে দিন খুদেকে। ভিজে তোয়ালে কখনওই শিশুর গায়ে চাপাবেন না। স্নানের পরে ভাল করে ময়েশ্চারাইজ়ার মাখাতে হবে। শিশুর ত্বক বুঝে কী ধরনের ক্রিম মাখাবেন তা চিকিৎসকের থেকে জেনে নিতে হবে। স্নানের পরে রোদে কিছু ক্ষণ শিশুকে রাখলে খুব ভাল হয়। এতে চট করে ঠান্ডা লেগে যাবে না।