Anuttama Banerjee

মেয়েকে লুকিয়ে নয়, তাকে জানিয়েই বন্ধুদের সঙ্গে সময় কাটান স্বরলিপি, শুনলেন মনোবিদ অনুত্তমা

মাতৃদিবস উপলক্ষে লোকে কী বলবে’ অনুষ্ঠানের দ্বিতীয় পর্ব ‘একা মায়ের পথচলা’। এই পর্বেও মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী এবং উদ্যোগপতি স্বরলিপি।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ১৫ মে ২০২৩ ২০:৪১
Image of Anuttama Banerjee.

মাতৃত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে মনোবিদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন স্বরলিপি। ছবি: সংগৃহীত।

মা হওয়া মুখের কথা নয়। আবার ‘একা মা’ হওয়া তো যুদ্ধের চেয়ে কোনও অংশে কম নয়। একা হাতে সন্তানকে বড় করতে গিয়ে প্রতি দিন নামতে হয় যুদ্ধের ময়দানে। সে যুদ্ধ কখনও নিজের বিরুদ্ধে, আবার কখনও সমাজের বিরুদ্ধে। সদ্য গিয়েছে মাতৃদিবস। মায়েদের এই লড়াই উদ্‌যাপনও করতে ‘লোকে কী বলবে’ অনুষ্ঠানের বিশেষ পর্ব ‘একা মায়ের পথচলা’। আনন্দবাজার অনলাইনের বিশেষ পর্বের দ্বিতীয় ভাগেও মাতৃত্বের বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলতে মনোবিদ অনুত্তমা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী এবং উদ্যোগপতি স্বরলিপি।

এর আগের পর্বে ‘একা মা’ স্বরলিপির জীবনযুদ্ধের খানিকটা আঁচ পেয়েছেন সকলে। কী ভাবে দুধের শিশুকে একা হাতে বড় করে, এতটা দূর নিয়ে এসেছেন সে ঘটনাও জেনেছেন। মেয়েকে বড় করে তোলার পথে প্রতিকূলতাও এসেছে। কিন্তু সেই সব ঝড়ঝাপ্টা পেরিয়ে মেয়ে সহচরী মাত্র ৬ বছর বয়সেই মায়ের পাশে দাঁড়াতে শিখে গিয়েছে। মায়ের যুদ্ধে কখন যেন সে-ও শামিল হয়ে গিয়েছে নিঃশব্দে। একেবারে ১১ দিন বয়স থেকে মেয়েকে বড় করে তোলার এক রকম সমস্যা ছিল। কিন্তু সন্তান জাগতিক বিষয় বুঝতে শুরু করলে তার বিড়ম্বনা অন্য রকম। মা তার একমাত্র সহায়। তাই মায়ের সব ব্যাপারে জানার অধিকার তার থাকে। মা কোথায় যাচ্ছে, কার সঙ্গে যাচ্ছে, কখন ফিরবে বা ফিরল না কেন— এ সব বিষয়ে কৌতূহল থাকে তার। স্বরলিপিকেও কি এমন প্রশ্নবাণে জর্জরিত হতে হয়? কী ভাবে সেই সব প্রশ্নের সম্মুখীন হন স্বরলিপি? মনোবিদ জানতে চান স্বরলিপির কাছে। স্বরলিপি বলেন, “এই বয়সেই সহচরী আমার অভিভাবক হয়ে উঠেছে। আমি কখন কোথায় যাচ্ছি শুধু এই কৌতূহল মিটিয়েই ক্ষান্ত হয় না সে। যেখানে আমি গিয়েছি, সেখানে কেন তাকে নিয়ে যাওয়া হয়নি, সে প্রশ্নও সহচরীর মনে জাগে। কারণ, মাকে সে আগলে রাখতে চায়। আবার আমাকে কেউ কিছু বললে আমার হয়ে বাকযুদ্ধও করে আসে। কারণ সে যে প্রকৃত পক্ষেই আমার সহচরী। আমার রাগের মুহূর্তগুলোতেও প্রবল ঝড়ের মুখোমুখি হয় সে। পরে শান্ত হলে জিজ্ঞেস করে রাগ করেছিলে? সরি বলো। এবং আমি ভুল করলে সরি বলি। এই বোঝাপড়াটা আমাদের মধ্যে রয়েছে। মা হয়ে সন্তানের কাছে ক্ষমা চাওয়ার মধ্যে কোনও লজ্জা থাকার কথা নয়।”

Advertisement

মা হওয়া মানেই কি শুধু সন্তানকে বড় করা। তার জন্য গোটা জীবন উৎসর্গ করা? সহচরীকে বড় করতে গিয়ে নতুন করে মাতৃত্বকে কতটা উদ‌্‌যাপন করেন স্বরলিপি? স্বরলিপি জানান, “মাতৃত্ব মানে নিজেকে ভুলে যাওয়া নয়। সোম থেকে শুক্রবার পর্যন্ত আমি মেয়ের স্কুল, পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকি। কিন্তু শুক্রবার রাতে আমি মেয়েকে মায়ের কাছে রেখে দিয়ে আসি। কারণ, মেয়ের দায়িত্ব পালন করা এবং ব্যবসা সামলানোর পর ওই সময়টুকু আমি নিজের সঙ্গে কাটাই। এবং ও সেটা জানে। কারণ, আমি মেয়েকে লুকিয়ে কিছু করি না। ওই সময়ে ও আমাকে ফোনও করে না। তার জন্য আমাদের সম্পর্কের সমীকরণ বদলে যায় না। ও অসুস্থ হলে যেমন আমি রাত জেগে ওর পাশে থাকি। আমার কিছু হলে সহচরীও আমার মাথায় জলপটি দিতে চায়। আবার এমনও হয়েছে যখন আমার এই সংসারের যাঁতাকল ভাল লাগেনি, সব কিছু ছেড়ে আমি একা বেড়াতে চলে গিয়েছি। আমার মা-ও কখনও ভুল বুঝেছেন। কিন্তু মেয়ে সব সময় আমার পাশে থেকেছে।”

আরও পড়ুন
Advertisement