ঘুম কম হলে শরীরের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। প্রতীকী ছবি।
সাম্প্রতিক কালে ‘অল ইন্ডিয়া অফ মেডিক্যাল সায়েন্স’(এমস)-এর গবেষকরা একটি তথ্য প্রকাশ্যে এনেছেন। ভারতে প্রতি চার মিনিটে অন্তত এক জনের স্ট্রোকে মৃত্যু হয়। আর এই হৃদ্রোগের নেপথ্যে রয়েছে অপর্যাপ্ত ঘুম। তেমনটাই জানাচ্ছেন চিকিৎসকরা। বিশেষ করে যাঁদের ‘স্লিপ অ্যাপনিয়া’ আছে, তাঁদের স্ট্রোকের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। শুধু স্ট্রোক নয়, কম ঘুম ডেকে আনে অ্যালঝাইমার্সের মতো জটিল রোগও।
শরীর সুস্থ রাখতে ঘুম এবং খাওয়াদাওয়া পর্যাপ্ত হওয়া জরুরি। বিশেষ করে ঘুম কম হলে শরীরের নানা সমস্যা দেখা দিতে পারে। হৃদ্রোগ তার মধ্যে অন্যতম। ভুলে গেলে চলবে না, সেই তালিকায় রয়েছে অ্যালঝাইমার্সের মতো স্মৃতিভ্রংশের সমস্যাও। পর্যাপ্ত ঘুম না হলে মস্তিষ্কের কার্যকলাপ সচল থাকে না।
এক-দু’দিন ঠিক করে ঘুম না হলে এমন সমস্যা হবে, তা কিন্তু নয়। দীর্ঘ দিন ধরে কম ঘুম হওয়ার ফলেই মস্তিষ্কে তার প্রভাব পড়ে। তা থেকেই ঝুঁকি বাড়ে অ্যালঝাইমার্স, হৃদ্রোগের।
স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত ১৪০ জনকে নিয়ে একটি গবেষণা করা হয়েছিল। গবেষণায় অংশ নেওয়া প্রত্যেকেরই গড় বয়স ছিল ৭০। তাঁদের শারীরিক পরীক্ষা করার পর দেখা গিয়েছে, প্রত্যেকেই হৃদ্রোগের নানা সমস্যায় ভুগছেন। সেই সঙ্গে অনেকেই আবার অ্যালঝাইমাইর্সের প্রাথমিক পর্যায়ে পৌঁছেছেন। তাই স্লিপ অ্যাপনিয়ার সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি।
অতিরিক্ত নাকডাকা এই সমস্যার প্রধান উপসর্গ। এ ছাড়া সারা ক্ষণ ক্লান্ত লাগা, ঘুম ঘুম ভাব, ঝিমুনি, খিটখিটে মেজাজও স্লিপ অ্যাপনিয়ার লক্ষণ। সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়লে ঘাড় ও গলার পেশি শিথিল থাকে। কিন্তু যাঁরা ‘স্লিপিং ডিজ়অর্ডার’-এ ভোগেন তাঁদের ক্ষেত্রে ঘুমিয়ে পড়লে শ্বাসক্রিয়া বাধা পায়। এর ফলে শরীরের কোষগুলিতে অক্সিজেন সরবরাহ হ্রাস পায়। স্লিপ অ্যাপনিয়ার কারণে শ্বাস-প্রশ্বাস প্রক্রিয়ার ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের মাঝে মৃত্যুর আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
কী ভাবে নিয়ন্ত্রণ করবেন এই সমস্যা?
স্লিপ অ্যাপনিয়ায় ভুগলে শরীরের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাটা জরুরি। খাওয়ার পর খানিক ক্ষণ হাঁটাহাঁটি করুন। নিয়মিত যোগাসন করাটাও প্রয়োজন। চিত হয়ে শোওয়ার অভ্যাস থাকলে তা ত্যাগ করে পাশ ফিরে শোয়ার অভ্যাস করুন। সেই সঙ্গে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।