প্রতীকী ছবি।
করোনা আসার পর প্রথম যখন স্কুল বন্ধ হল, তখন যেমন সেটা চূড়ান্ত অসুবিধেজনক ছিল, পরবর্তীকালে আর সেটা রইল না। বিকল্প মাধ্যমে অভ্যস্ত হতে হতে এখন অনলাইন ক্লাসটাই আবার অভ্যেসে দাঁড়িয়ে গিয়েছে। এদিকে দীর্ঘ দিন স্কুল বন্ধ থাকায় বাচ্চারা ঘরে বন্দি। সহপাঠীদের সঙ্গে দেখাসাক্ষাতের ফলে যে মানসিক বিকাশ হত, সেটাও বন্ধ। এই কারণে অনেক বাচ্চার মধ্যেই অবসাদের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে। এসব কথা ভেবেই অতিমারির ঢেউ খানিকটা কমে যাওয়ায় স্কুল খোলার সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে সরকার। কিন্তু এতেও বিপত্তি। অনেক বাচ্চাই স্কুল খোলার সম্ভাবনার কথা শুনে ভুগতে শুরু করেছে উদ্বেগে। দীর্ঘ দিনের অনভ্যাস, পারিপার্শ্বিকতা বদল, করোনা সম্পর্কিত অজ্ঞতা, একা থাকতে থাকতে খানিকটা মুখচোরা হয়ে যাওয়া, এই সব থেকেই উদ্বেগ জন্মাতে পারে। এই সব সমস্যা দেখা দিলে বাবা-মাকেই বিষয়টি সামলাতে হবে।
কী করবেন?
১) বাচ্চার কাছেই সরাসরি জানতে চান, আবার স্কুলে যেতে পারবে শুনে তার কেমন লাগছে। এ ছাড়া মাথা ব্যথা, পেটে ব্যথা, ভাল ঘুম না হওয়া, সারাক্ষণ কী হবে ভেবে চলা, মেজাজ হারিয়ে ফেলা, অনেক দূরবর্তী ঘটনা নিয়ে বেশি ভেবে ফেলা, স্কুলের দেওয়া কাজ ঠিক মতো না করা, এগুলিও উদ্বেগের লক্ষণ হতে পারে। অতিমারির পরিসরে বাইরে যাওয়া নিয়েও তার উদ্বেগ হতে পারে।
২) এই সব থেকে বাচ্চাকে দূরে রাখতে বাড়ির বাইরে বাচ্চাকে একটু খেলতে পাঠান বা বন্ধুদের সঙ্গে মেশার সুযোগ করে দিন। বাইরে বেরোলে বাচ্চাদের উদ্বেগের সমস্যা কমবে।
৩) বাচ্চাকে করোনা অতিমারি সম্পর্কে সার্বিক ভাবে ওয়াকিবহাল করুন। বন্ধুদের মুখ থেকে বা টুকরো টুকরো খবর জেনে ওর মধ্যে যেন বিভ্রান্তি না তৈরি হয়। করোনার পরিস্থিতি এই মুহূর্তে কেমন, টিকাকরণ প্রক্রিয়া কী ভাবে আমাদের এই করোনা যুদ্ধে সহায়তা করতে পারে— এই সব কিছু ওকে জানান। তাহলে ওর অতিমারিজনিত ভিতি কাটবে।
৪) বাচ্চার সঙ্গে বেশি করে সময় কাটান। মন ভাল করতে ওকে নিয়ে কোনও রেস্তরাঁয় খেতে যেতে পারেন, কিংবা বাড়িতেই সবাই মিলে বসে ওর সঙ্গে লুডো বা চাইনিজ চেকার খেললেন। এতে ওর মানসিক স্বাস্থ্য ভাল থাকবে।
৫) বাচ্চা যদি তার উদ্বেগের কথা বলে, তা হলে তাকে বলুন মজার কোনও সিনেমা দেখতে বা কোনও মন ভাল করা বই পড়তে। তাকে বোঝান এগুলি করলে মন ভাল হবে। তবে বেশিদিন ধরে এই রকম উদ্বেগ চলতে থাকলে শিশুমনস্তত্ত্ব বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন।