জ্বর হলেই দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার। ছবি: সংগৃহীত
বর্ষাকালে অনেকেরই জ্বর হয়। জ্বর হলে এখন অনেকেই কোভিড সংক্রমণের ভয় পাচ্ছেন। তবে শুধু করোনা নয়, ডেঙ্গি-ম্যালেরিয়ার কারণে জ্বর বাড়ছে, সেটাও মনে রাখা দরকার।
পাঁচটা জ্বরের সঙ্গে ম্যালেরিয়া জ্বরের বিশেষ পার্থক্য নেই। কিন্তু হালে নানা কারণে সব অসুখের চরিত্রেই কিছুটা বদল এসেছে। তাই সাবধান হওয়া দরকার। এখন অনেকের ক্ষেত্রে এমনও শোনা যাচ্ছে, জ্বর নেই, শুধু শরীর দুর্বল। তার পরেও পরীক্ষা করিয়ে ম্যালেরিয়া ধরা পড়েছে। তবে এমন ঘটনা বেশ কম।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ম্যালেরিয়ার অন্যতম উপসর্গ জ্বর। তেমনই বলছেন বেলেঘাটা আইডি হাসপাতালের সংক্রামক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক যোগীরাজ রায়। তাঁর কথায়, ‘‘জ্বর হলে এবং দু’-তিন দিন জ্বর চলতে থাকলে, কোনও ঝুঁকি না নিয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’’
ম্যালেরিয়া হলে নির্দিষ্ট সময় অন্তর জ্বর আসে। জ্বর কমে যায়। আবার আসে। সব থেকে বড় কথা, ম্যালেরিয়া জ্বর অগ্রাহ্য করলে রোগীর স্বাস্থ্যের অবনতি হতে পারে। যোগীরাজের কথায়, ঠিক সময়ে ওষুধ দিয়ে ম্যালেরিয়াকে জব্দ করা কঠিন নয়।
‘ইনস্টিটিউট অফ চাইল্ড হেলথ’-এর শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ প্রভাসপ্রসূন গিরি বলছেন, ‘‘শিশুদের মধ্যে কোভিডের চেয়ে ম্যালেরিয়ার জ্বর অনেক বেশি। জ্বর হলেই ভয় পেয়ে তড়িঘড়ি হাসপাতালে ভর্তি করার দরকার নেই। তবে নিজেরা চিকিৎসা না করে, অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।’’
চিকিৎসকদের কথায়, ম্যালেরিয়ার জ্বরের সঙ্গে সাধারণ ভাইরাল জ্বর, ডেঙ্গি জ্বরের বিশেষ কোনও তফাত বোঝা মুশকিল। তবে জ্বর হলে এবং তা থেকে গেলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে। ম্যালেরিয়া থেকে জ্বর হলে মাথাব্যথা থাকবে, সঙ্গে গা-হাত-পা ব্যথা, শরীর ম্যাজম্যাজে, গা বমি ভাবও থাকতে পারে। বমিও হতে পারে, খিদে কমে যায়— এমনই উপসর্গ দেখা যায় ম্যালেরিয়ায়।
শিশু ও বয়স্কদের ক্ষেত্রে সঠিক সময়ে চিকিৎসা না হলে ম্যালেরিয়া মারাত্মক আকার নিতে পারে। বিশেষ করে বয়স্কদের উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবিটিস বা হৃদ্রোগের সমস্যা থাকলে ম্যালেরিয়া মারাত্মক হয়ে উঠতে পারে। ম্যালেরিয়া, ডেঙ্গি-সহ যে কোনও মশাবাহিত অসুখ আটকে দেওয়ার একমাত্র উপায়— মশা তাড়ানো আর মশারি ব্যবহার করা। বাড়ি বা পাড়ায় কোথাও জল জমতে দেওয়া চলবে না। পাড়ার নর্দমা ও জলা জায়গার পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে।