Self-care tips

বাড়ি থেকে দূরে একা? সব কাজেই হয়ে উঠবেন পটু, মনও ভাল থাকবে, মেনে চলুন কিছু নিয়ম

একা থাকলে দায়িত্ব বাড়ে। তার জন্য ভয় পাবেন না। কিছু নিয়ম মেনে চললে সব কাজেই পারদর্শী হয়ে উঠবেন।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০২৪ ১৯:০১
Self-Care tips when you are far away from home

একা বাড়ি থেকে দূরে? জরুরি কিছু বিষয় জেনে রাখুন । ছবি: ফ্রিপিক।

পেশাগত কারণে বাড়ি থেকে অনেক দূরে থাকতে হয় অনেককেই। কলেজ পাশ করে ভাল চাকরি পেলে তখন বাড়ির মায়া ছেড়ে দূরে যেতেই হয়। আবার ধরুন, হঠাৎই মনের মতো পেশা বেছে নেওয়ার সুযোগ পেলেন। কিন্তু আপনজনেদের ছেড়ে দূরে যেতেই হবে। তখন একা থাকার অভ্যাস রপ্ত করতেই হবে। যাঁরা স্কুল বা কলেজ জীবন থেকে বোর্ডিং বা হস্টেলে থেকেছেন, তাঁদের সমস্যা কম হবে। কিন্তু যাঁদের পরবর্তী সময়ে গিয়ে এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হচ্ছে, তাঁদের হিমশিম খাওয়ার পালা। যে কাজে কোনওদিন হাত দেননি, সে কাজও নিজেকেই গুছিয়ে করতে হবে। অর্থাৎ নিজের খেয়াল নিজেকেই রাখতে হবে। তার জন্য মেনে চলতে হবে কিছু নিয়ম।

Advertisement

১) গোড়াতেই রুটিন বানিয়ে নিন। অযথা উদ্বেগে না ভুগে ঠান্ডা মাথায় পরিকল্পনা করুন। যেহেতু সব কাজ নিজেকেই করতে হবে, তাই সকাল থেকে রাত অবধি কোন কোন কাজ আপনি করবেন, তার তালিকা তৈরি করে নিন। যেমন কখন ঘুম থেকে উঠবেন, প্রাতরাশও আপনাকেই বানাতে হবে, অফিসে বা কাজের জায়গায় কখন যাবেন, ফিরে এসে কী খাবেন, সব ব্যবস্থা গুছিয়ে রাখতে হবে।

২) আপনি যেহেতু এতদিন একা থাকেননি, তাই বাড়ির দায়িত্ব অন্যের উপরেই ছিল। কিন্তু এ বার আপনি একা। তাই যেখানে থাকছেন সেই ঘর বা ফ্ল্যাটের নিরাপত্তার দায়িত্ব আপনারই। যখনই বাড়ি থেকে বেরোবেন মনে করে দরজা লক করবেন এবং অতিরিক্ত চাবি সঙ্গে রাখবেন। যদি ভুলো মন হয়, তা হলে বিশ্বাসযোগ্য বন্ধু বা প্রতিবেশীকে অতিরিক্ত চাবি দিয়ে যাবেন।

৩) খাওয়াদাওয়ার ঝক্কি নিজেকেই নিতে হবে। রাঁধতে জানলে ভাল, না হলে হোম ডেলিভারির ব্যবস্থা করে ফেলুন। তবে ঘরে সব্জি, চাল-ডাল আপৎকালীন অবস্থার জন্য মজুত রাখতেই হবে। প্রাতরাশে কী খাবেন তা আগের দিন রাতেই ভেবে নিন। বাড়ি ঢোকার আগে সব গুছিয়ে কিনে আনুন। প্রস্তুতি পর্বটা আগের দিনই সেরে রাখুন, যাতে সকালে হুড়োহুড়ি না শুরু হয়।

৪) একা থাকলে নিজে রাঁধতে জানাও খুব জরুরি। কয়েকটি সহজ পদ শিখে নিন। চটজলদি বানিয়ে নেওয়া যাবে, এমন রেসিপি শিখে রাখুন ও বানানোর উপকরণও ঘরে রেখে দিন। একা থাকলে রোজ বাজার করার সময় পাবেন না। তাই কাছাকাছি সুপারমার্কেট থাকলে বা অনলাইন ডেলিভারির সুবিধা থাকলে, সবকিছু একবারে আনিয়ে রাখুন।

৫) থালাবাসন ধোয়া, জামাকাপড় কাচাকাচিও আপনাকেই করতে হবে। সে জন্য দিনের একটি নির্দিষ্ট সময় ঠিক করে নিন। সেই সময়েই এই কাজগুলি সেরে ফেলুন। জমিয়ে রাখলে পরে আপনাকেই হিমশিম খেতে হবে।

৬) জামা কাচতে জানলেই হবে না, সঠিকভাবে ইস্ত্রি করা, জামার দাগ তোলা থেকে বোতাম সেলাই করার মতো রোজের কিছু কাজ শিখে নিন আগেই।

৭) বাড়িঘর পরিষ্কার রাখাও জরুরি। রোজ করতে পারলে ভাল, না হলে সপ্তাহে ছুটির দিনটি রাখুন পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নের জন্য। ছোট ছোট ময়লা ফেলার ব্যাগ রাখুন হাতের কাছেই। সেখানে সব জড়ো করবেন। প্লাস্টিক ফেলার আলাদা জায়গা করুন। ঘরের এ দিক, ও দিকে ছড়িয়ে রাখবেন না।

৮) শরীর খারাপ হলেও নিজের খেয়াল নিজেকেই রাখতে হবে। তাই নিজের ফার্স্ট-এইড কিট হাতের কাছেই রাখুন। সেখানে জ্বর, পেট খারাপ, মাথা ব্যথা, বমি বা ব্যথাবেদনার কিছু ওষুধ সবসময় মজুত রাখুন। ব্যান্ডেজ, তুলো, অ্যান্টিসেপ্টিক ও ব্যান্ডেড রাখতে ভুলবেন না। জ্বর মাপার থার্মোমিটার যেন অবশ্যই থাকে।

৯) জরুরি কিছু নম্বর নিজের কাছে রাখবেন যাতে দরকার হলে বা বিপদ ঘটলে আপনি সাহায্য পেতে পারেন। যেমন, স্থানীয় থানা, হাসপাতাল, অ্যাম্বুল্যান্স, দমকলের নম্বর রাখতেই হবে। যে ফ্ল্যাটে থাকছেন সেখানকার কেয়ারটেকারের নম্বর যেন থাকে। বিশ্বস্ত প্রতিবেশী কয়েকজনের নম্বর রাখবেন সঙ্গে। স্থানীয় ওষুধের দোকানের নম্বর রাখুন। আপৎকালীন সময়ে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা তাঁরা করতে পারবেন কিনা, সেইভাবে কথা বলে রাখুন।

১০) পরিবার বা আত্মীয়দের সঙ্গে যোগাযোগ রাখুন। বাড়ির লোকজনের সঙ্গে রোজ কথা বলুন। মন খারাপ লাগলে, তা কাটিয়ে ওঠার উপায়ও আপনাকেই ভাবতে হবে। তার জন্য সবচেয়ে ভাল উপায় হল কথোপকথন। রোজের জীবনযাত্রা আপনজনেদের বলুন। ছুটি পেলে ঘুরে আসুন কোথাও। একাই খেতে চলে যান রেস্তোরাঁয়, দেখবেন অন্যরকম অভিজ্ঞতা হবে। ভাল বই পড়ুন, আশপাশের লোকজনের সঙ্গেও আলাপ করে রাখুন। স্থানীয়দের সঙ্গে পরিচিতি রাখলে পরে কোনও ব্যাপারে সাহায্য পেতে আপনারই সুবিধা হবে।

আরও পড়ুন
Advertisement