ইন্টারভিউ দিতে যাবেন, জেনে নিন খুঁটিনাটি। ছবি: সংগৃহীত।
চাকরির অভিজ্ঞতা যতই বাড়ুক না কেন, ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগে বুক দুরুদুরু করেই। আর যাঁরা জীবনের প্রথম চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছেন, তাঁদের হৃৎকম্প তো আরও বেশি হয়। কী পরবেন তা নিয়ে যেমন চিন্তা থাকেই, তেমনই কেমন আচরণ করলে আপনার ব্যক্তিত্বের প্রকাশ ঠিকমতো হবে, সে নিয়েও ভাবনা থাকে। আরও যা দেখার তা হল, আপনি কেমন ভাবে কথা বলছেন। সব প্রশ্নের উত্তর জানা না-ই থাকতে পারে, কিন্তু বাচনবঙ্গি ও অভিব্যক্তি অনেক জটিলতার সমাধান করে দিতে পারে।
পোশাক নির্বাচন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি কী পরছেন, সে দিকেই কিন্তু আপনার নিয়োগকর্তার নজরটা প্রাথমিক ভাবে থাকে। বিভিন্ন কোম্পানির পোশাকের ধরন কিন্তু বিভিন্ন রকম। ইন্টারভিউ দিতে যাওয়ার আগেই একটু হোমওয়ার্ক করে নিন, কোন কোম্পানিতে আপনি কাজ করতে চলেছেন। সেই অনুযায়ী পোশাক বেছে নেবেন। মহিলা হলে সালোয়ার-কামিজ বা সুন্দর করে শাড়ি পরে যাওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজ। আর যে ব্লাউজটা সঙ্গে পরবেন, সেটা যেন বেশ ছিমছাম আর শালীন হয়। ভারী সাজ ও মেকআপ ইন্টারভিউতে একদমই চলবে না।
সালোয়ার স্যুট বা ইন্দো-ওয়েস্টার্ন পোশাকে যদি স্বচ্ছন্দ হন, তা হলে পরতেই পারেন। তবে খুব উজ্জ্বল রঙের পোশাক পরে ইন্টারভিউ দিতে চলে যাবেন না। দেখে যেন মনে না হয়, আপনি পার্টিতে যাচ্ছেন। ছেলেরা ‘ক্লিন শেভ’ করে ইন্টারভিউ দিতে গেলেই ভাল। না হলে দাড়ি-গোঁফ ভাল করে ট্রিম করে নেবেন। চুলে জেল লাগিয়ে নিতে পারেন। চেহারায় যেন উস্কোখুস্কো ভাব না থাকে। হালকা সুগন্ধি লাগিয়ে নেবেন, তবে গন্ধ যেন খুব উগ্র না হয়। প্রথম দিনেই খুব বেশি আদবকায়দা না দেখানোই ভাল। একটা পরিষ্কার সাদা শার্ট আর ট্রাউজার গলিয়ে চলে যান। স্যুট পরার প্রয়োজন আছে কি না দেখে নিন আগে।
কী ধরনের গ্যাজেট নিয়ে যাচ্ছেন, সেটাও কিন্তু খেয়াল করার মতো। আপনার কেনা দামি স্মার্টফোন বা আইপ্যাড না হয় না-ই বার করলেন। আর খেয়াল রাখবেন মোবাইলটা যেন সব সময় সাইলেন্ট থাকে। সঙ্গে সব সময়ই একটা বায়োডেটা রাখবেন।
আপনার জুতোজোড়াও কিন্তু নজর টানবে। হিল পরে শব্দ করতে করতে যাবেন না। স্নিকার বা ক্যাজুয়াল শু পরেও নয়। চকচকে পালিশ করা চামড়ার জুতো পরে যাওয়াটা এই সব ক্ষেত্রে খুব গুরুত্বপূর্ণ।
ইন্টারভিউয়ের সময় প্যানেলে হাজির থাকা সবার চোখের দিকে সরাসরি তাকিয়ে কথা বলা উচিত। উত্তর ভেবেচিন্তে দিন। খুব বেশি লাজুক বা বিনম্র হবেন না। আবার অতিরিক্ত আত্মবিশ্বাসীও না হওয়াই ভাল। নিয়োগকর্তাদের থেকে জেনে নিন আপনার কাছ থেকে কী ধরনের কাজ তাঁরা প্রত্যাশা করছেন, আর আপনিও কোন কোন কাজে পারদর্শী, তা-ও জানিয়ে দিন। আপনার কথাবার্তায় যেন সদর্থক ভাব থাকে। সাম্প্রতিক রাজনীতির জগতে, খেলার ময়দানে বা বিশ্ব জুড়ে কী ঘটছে, সে সম্পর্কে খবরাখবর নিয়ে রাখা ভাল। আপনার পছন্দের বিষয়গুলি নিয়েও যেন জোরালো মতামত থাকে আপনার।
মুখভার করে বসে থাকবেন না। আপনাকে দেখে যেন মনে না হয় যে, আপনি খুব বিষণ্ণ বা মানসিক চাপে আছেন। আবার বেশি উৎসাহ দেখানোরও প্রয়োজন নেই। আপনার ভাব এমন থাকবে যা দেখে মনে হবে, আপনি সেই প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে আগ্রহী। আরও একটা বিষয় মাথায় রাখা জরুরি, তা হল সঠিক সময়ে পৌঁছনো। হাতে অনেকটা সময় নিয়ে বেরোন। আপনার চেহারা, পোশাক, ব্যবহার ও অভিব্যক্তিই যেন মন জয় করে নিয়োগকর্তাদের।