চোট পেলেই শুধু আর্নিকা? ছবি: সংগৃহীত
বাড়িতে আর কোনও হোমিওপ্যাথির ওষুধ থাকুক বা না থাকুক আর্নিকা রাখার একটা অভ্যাস আমাদের রয়েই গিয়েছে। কোথাও পড়ে গিয়ে চোট পেলেই ব্যথা কমানোর জন্য সচরাচর অন্য পেনকিলার নয়, বরং আমাদের আর্নিকার কথাই মনে আসে। সাম্প্রতিক একটি সমীক্ষা বলছে ভারতের বেশিরভাগ শিশুই পাঁচ বছর বয়স পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি যে হোমিওপ্যাথির ওষুধটি খায়, তার নাম আর্নিকা।
আর্নিকা আসলে কী?
চলতি কথায় আমরা যাকে আর্নিকা বলি, তার পুরো নাম আর্নিকা মন্টানা। এটি মূলত ডেইজি ফুলের একটি গাছ। ইউরোপে এই গাছ প্রচুর পরিমাণে জন্মায়। গাছটি সাধারণত লোকে উলফস বেন বা লেপার্ডস বেন নামেই চেনে। তবে আপাত নিরীহ এই গাছটি প্রাথমিক ভাবে কিন্তু বেশ বিষাক্ত। তাই এর পরিমিত ব্যবহার প্রয়োজন। তবে হোমিওপ্যাথি ওষুধ তৈরির প্রক্রিয়াতে এর বিষাক্ত বা ক্ষতিকর ক্ষমতা নষ্ট করে এর উপকারী দিকগুলিই কাজে লাগানো হয়।
কোন কোন অসুখে কাজ করে আর্নিকা?
আর্নিকাকে বলা যেতে পারে মহৌষধি। সাধারণত ব্যথা বা যন্ত্রণা উপশমে বা কালশিটে কমাতেই যে শুধু এটা কাজে লাগে তা নয়। হয়তো এই দিকটিই বেশি পরিচিত, তবে এর আরও অনেক রোগ সারানোর ক্ষমতা রয়েছে। অনেক দিনের পুরনো কোনও চোটও সারাতে পারে আর্নিকা। মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ বন্ধ করতে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাবিজ্ঞানের মতে সবচেয়ে ভাল ওষুধ এটিই। ব্রঙ্কাইটিস, মেনিনজাইটিস, প্রস্রাব থেকে রক্তপাত ও রক্তবমির সমস্যাতেও খুব ভাল কাজ করে আর্নিকা। হোমিওপ্যাথি বিশেষজ্ঞদের মতে বাত, হৃদরোগ ও সন্তান প্রসবের সময় কোনও জটিলতা থাকলে তা সহজেই দূর করা সম্ভব আর্নিকার মাধ্যমে। তবে এই ধরনের ব্যবহারগুলি চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া করা সম্ভব নয়। এখন বাজারে আর্নিকা মলমও কিনতে পাওয়া যায়, ব্যথা উপশমে লাগাতে পারেন। কিন্তু কোনও কেটে যাওয়া ক্ষতস্থানে ভুলেও আর্নিকা লাগাবেন না।