বয়স্ক বাবা-মায়ের ঘর সাজাবেন কী করে। ছবি: সংগৃহীত।
বাড়িতে বয়স্ক মা-বাবা বা আত্মীয় থাকলে নজর রাখতে হয় সবদিকেই। বিশেষ করে তাঁরা যে ঘরটিতে থাকছেন তার সাজসজ্জা কেমন হবে তা-ও ভাবনারই বিষয়। কারণ এমন ভাবে ঘর সাজাতে হবে যাতে চলতে ফিরতে গিয়ে তাঁরা ধাক্কা না খান অথবা পরে না যান। আবার অন্দরসজ্জা এমন হতে হবে, যাতে তাঁদের মন ভাল থাকে। কাজেই বাড়ির প্রবীণদের ঘর সাজানো অত সহজ নয়। কয়েকটি বিষয় মাথায় রাখতেই হবে।
কী ভাবে সাজাবেন বয়স্কদের ঘর?
১) খাট রাখুন দেওয়াল ঘেঁষে। এমন জায়গায় থাকবে যেখান থেকে শৌচাগারের দূরত্ব বেশি নয়। সম্ভব হলে ঘরের সঙ্গে লাগোয়া বাথরুমই রাখতে হবে। যাতে রাতে উঠে বাথরুমে যাওয়ার সময়ে বেশি কষ্ট করতে না হয়।
২) নিজেদর ঘরের কোণ যতই দামি আসবাব বা গাছ দিয়ে সাজান না কেন, বয়স্কদের ঘরের কোণায় এমন কিছু রাখবেন না যাতে চলতে ফিরতে ধাক্কা খেতে হয়। আসবাব রাখলেও তার ধারগুলি যাতে গোল হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। রাতের বেলা তাঁরা উঠলে যাতে দিকভ্রষ্ট হয়ে কোণায় গিয়ে আসবাবে ধাক্কা না খান সে দিকে খেয়াল রাখবেন।
৩) ফ্ল্যাটবাড়িতে অনেক সময়েই বয়স্কদের ঘরের ভিতরেই পুজোর জায়গা করা হয়। তেমন হলে, ঘরের সবটুকু জুড়ে পুজোর জায়গা করবেন না। ঘরের একধারে কাঠের বা মার্বেলের সিংহাসন রাখতে পারেন। কাজে লাগান দেওয়ালকে। সেখানে কাঠ বা প্লাই দিয়ে সিংহাসন বানিয়ে দেওয়া যেতে পারে, যাতে ঘরেও অনেকটা জায়গা থাকে।
৪) বয়স্কদের খাট বেশি উঁচু করবেন না। ঘরে একাগাদা আসবাব রাখার চেয়ে দেওয়ালেই আলমারি, ওয়াড্রোব বানিয়ে দিতে পারেন। বিছানার ধারে টেবিল থাকলে তাতে বেশি ড্রয়ার রাখুন, যাতে ছোটখাটো দরকারি জিনিস তাঁরা গুছিয়ে হাতের কাছেই রাখতে পারেন।
৫) বয়স্কদের বিছানার পাশে অবশ্যই একটা কলিং বেল লাগাবেন। যাতে কখনও শরীর খারাপ হলে বেল বাজিয়ে বাড়ির বাকি মানুষদের ডেকে নিতে পারেন তাঁরা।
৬) ঘরের সঙ্গে লাগোয়া যদি বারান্দা থাকে, তা হলে সেখানে আরামকেদারা পেতে দিন। বারান্দা সাজিয়ে দিন সবুজ গাছে। দেখবেন তাঁদের মন ভাল থাকবে। যদি বারান্দা না থাকে, তা হলে ঘরে জানলার কাছে রেখে দিন আরামকেদারা বা গদি দেওয়া চেয়ার। কাছেই ছোট টেবিলে রাখুন ডায়রি-পেন। চা খাওয়ার জায়গা করে দিন। টেবিলের উপর আপনাদের সকলের ছবি বাঁধিয়ে রেখে দিন। পাশে রাখুন ফুলদানি। সম্ভব হলে টাটকা ফুলে সাজিয়ে দিন। দেখবেন তাঁদের ভাল লাগবে।
৭) বয়স হলে অনেকেরই স্মৃতি ধূসর হতে থাকে। ছোটখাটো বিষয়ও ভুলতে শুরু করেন তাঁরা। তাই বয়স্কদের ঘরের দেওয়ালে ছোট্ট ‘সফট্ বোর্ড’ লাগিয়ে দিন। সেখানে জরুরি বিষয়গুলি ছোট ছোট কাগজে লিখে সাঁটিয়ে রাখুন। তাঁদের ওষুধ খাওয়ার সময় লিখে রাখুন।
৮) ঘরে বাতানুকূল যন্ত্র থাকলে খাট থেকে এমন দূরত্বে রাখুন, যাতে সরাসরি তাঁদের গায়ে ঠান্ডা না লাগে।
৯) বয়স্কদের ঘরে অবশ্যই বইয়ের তাক বানিয়ে দিন। তাঁদের পছন্দমতো বই রাখুন তাতে। বই পড়ে অনেকটা সময় কেটে যাবে তাঁদের। বয়স হলে অনেক সময়েই নিজের অনেক পছন্দের কাজ বা শখ পূরণের ইচ্ছা হয়। সেইসব জিনিস তাঁদের হাতের কাছেই রেখে দিন।