এনার্জি ড্রিঙ্কের সঙ্গে হৃদ্রোগের কী সম্পর্ক? ছবি: ফ্রিপিক।
এনার্জি ড্রিঙ্ক, স্পোর্টস ড্রিঙ্কের মতো পানীয়গুলির নাম এক সময়ে সাধারণ মানুষজনের চর্চায় ছিল না। মাঠে-ময়দানে নেমে যাঁরা খেলাধুলা করেন, তাঁরা এমন পানীয় খেয়ে অভ্যস্ত ছিলেন। কিন্তু এখন শরীরচর্চা ও ফিটনেস নিয়ে মানুষজন অনেক সচেতন। এনার্জি ড্রিঙ্ক এখন খুবই পরিচিত একটি নাম। কেতাদুরস্ত জিম-পোশাক পরে হাতে এনার্জি ড্রিঙ্কের বোতল নিয়ে শরীরচর্চা করতে যান অনেকেই। বিশেষ করে কমবয়সিরা তো কথায় কথায় এনার্জি ড্রিঙ্ক কিনে খেয়ে ফেলেন। জিমে গিয়ে ঘাম ঝরানোর আগে শক্তি বাড়াতে এনার্জি ড্রিঙ্কের মতো শক্তিবর্ধক পানীয়ের উপরেই বেশি ভরসা করেন। কিন্তু কথা হল, এনার্জি ড্রিঙ্ক কি সত্যিই উপকারী? এর সঙ্গে আবার হৃদ্রোগের যোগসূত্র খুঁজে পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা।
দেশের ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ’ থেকে প্রকাশিত একটি গবেষণাপত্রে উল্লেখ করা হয়েছে, এনার্জি ড্রিঙ্ক বেশি খেলে হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ে। বিশেষ করে এই পানীয় খেয়ে যদি কেউ ভারী ব্যায়াম করতে যান বা জিমে গিয়ে কার্ডিয়ো করেন, তা হলে কিন্তু হৃদ্রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়বে।
কেন বলছেন গবেষকেরা?
এর কারণ অনেক। এনার্জি ড্রিঙ্কের প্রতি ক্যানে কম করেও ১৫০-৩০০ মিলিগ্রাম ক্যাফিন থাকে। এই ক্যাফিন যদি প্রতি দিন শরীরে যেতে থাকে, তা হলে কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের উপরে প্রভাব পড়ে। পাশাপাশি রক্ত সঞ্চালনেও সমস্যা হয়। এর জেরে হৃৎস্পন্দনের হার বেড়ে যেতে পারে। অনিয়মিত হৃৎস্পন্দন হার্ট অ্যাটাকের কারণ হয়ে উঠতে পারে।
এনার্জি ড্রিঙ্ক বেশি খেলে হজমশক্তি দুর্বল তো হবেই, গ্যাস-অম্বল ও অ্যসিড রিফ্লাক্সের সমস্যা বহু গুণে বেড়ে যাবে। স্থূলতা, দন্তক্ষয়, মাইগ্রেন, ডায়াবিটিসের সমস্যা বাড়বে।
ঘুমের সমস্যা হয় এনার্জি ড্রিঙ্ক খেলে। এমনও দেখা গিয়েছে, দিনের পর দিন এনার্জি ড্রিঙ্ক খেয়ে রক্তে শর্করার মাত্রা বহু গুণে বেড়ে গিয়েছে। সেই সঙ্গেই অনিদ্রা বা ইনসমনিয়ার সমস্যাও দেখা দিয়েছে। এনার্জি ড্রিঙ্কে ক্ষতি হয় কিডনিরও।
এনার্জি ড্রিঙ্কে চুমুক দিলে নিমেষে সমস্ত ক্লান্তি কেটে যায়। শরীরে বেশ একটা ফুরফুরে ভাব আসে। নতুন করে পরিশ্রম করার শক্তি পাওয়া যায়। আর চটজলদি চনমনে হওয়ার ফাঁদে পা দিয়েই বিপদ ঘটাচ্ছেন অনেকে। শক্তিবর্ধক এই পানীয় নিঃশব্দে হার্টের ক্ষতি করে চলেছে। তাই সাবধানে থাকারই পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।