অত্যধিক মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফল পেলেন হাতেনাতে। ছবি: সংগৃহীত
রাত জেগে নিয়মিত মোবাইল ফোন ঘাঁটতেন। দিনেও সারা ক্ষণ চোখ থাকত মোবাইলের দিকেই। প্রাণের চেয়েও প্রিয় মোবাইলই যে দৃষ্টি কেড়ে নেবে, তা বুঝতে পারেননি বছর ৩০-এর মঞ্জু। অত্যধিক মাত্রায় মোবাইল ফোন ব্যবহারের ফল ফেলেন হাতেনাতে। সম্প্রতি যাঁর অধীনে মঞ্জু চিকিৎসাধীন, সেই চিকিৎসক বর্ণনা করেছেন মোবাইল ঠিক কতটা মারাত্মক বিপদ ডেকে আনতে পারে। চিকিৎসক সুধীর কুমার টুইটারের পাতায় মঞ্জুর যাবতীয় উপসর্গ এবং অসুস্থতার কথা তুলে ধরেছেন। তিনি জানিয়েছেন, মঞ্জু যখন তাঁর কাছে আসেন, সেই সময় তিনি চোখ খুলতে পারছিলেন না। সব কিছু ঝাপসা দেখছিলেন। মাঝেমাঝেই চোখের সামনে বিদ্যুতের ঝলকানি দেখতে পাচ্ছিলেন। কোনও কাজেও ঠিক মতো মনোযোগ দিতে পারছিলেন না তিনি। এবং এই উপসর্গগুলি বেশির ভাগ সময়ে রাতেই দেখা দিত। সেই সঙ্গে শুরু হয়েছিল স্নায়বিক কিছু সমস্যাও।
ওই তরুণী পেশায় আয়া। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশুর দেখাশোনা করতেন। কাজের ফাঁকে সময় পেলেই ফোন ঘাঁটতেন। রাতে বাড়ি ফিরেও তাঁর একমাত্র সঙ্গী ছিল মোবাইল ফোন। দীর্ঘ দিন ধরে একনাগা়ড়ে অন্ধকারে মোবাইল ব্যবহারের ফলে এই সমস্যাগুলি দেখা দিতে শুরু করে। চিকিৎসা পরিভাষায় এই রোগের নাম, ‘স্মার্টফোন ভিশন সিন্ড্রোম(এসভিএস)’। কম্পিউটার, স্মার্টফোন, ট্যাবলেটের মতো যন্ত্রগুলির অত্যধিক ব্যবহার ডেকে আনে এই রোগ। একে ‘ডিজিট্যাল ভিশন সিন্ড্রোম’ ও বলা হয়। এই রোগ সারাতে চিকিৎসক কোনও পরীক্ষা করেননি, মঞ্জুকে কোনও ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেননি। শুধু মোবাইল ফোনের ব্যবহার বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। চিকিৎসকের পরামর্শ মতো মঞ্জু মোবাইল ফোন ব্যবহার করা থেকে দূরে ছিলেন। এক মাস পর যখন চিকিৎসকের কাছে যান, তিনি তখন সম্পূর্ণ সুস্থ। কোনও ওষুধ নয়, শুধুমাত্র মোবাইলের ব্যবহার বন্ধ করতেই এক রকম নতুন জীবন পান তিনি।দৈনন্দিন জীবন এবং যাপন অনেকটা সহজ হয়েছে মোবাইলের দৌলতে। একটা বোতাম টিপলেই হাতের কাছে এসে হাজির হয় হাজার সুযোগ-সুবিধা। সেই সঙ্গে সামাজিক মাধ্যমের অদম্য আকর্ষণ আর হাতছানি তো রয়েছেই। ফলে প্রয়োজনে কিংবা অপ্রয়োজনে মোবাইলে চোখ থাকছে অধিকাংশ সময়। আর অজান্তেই দু’চোখে ঘনিয়ে আসছে অন্ধকার।