পুজোয় আড্ডা দিতে পারেন শহরের সেরা ৫ ক্যাফেতে। ছবি: সংগৃহীত।
এক কাপ ক্যাপাচিনোতে চুমুক সঙ্গে কিছু টুকিটাকি স্ন্যাক্স আর ঘণ্টার পর ঘণ্টা জমজমাটি আড্ডা। নতুন প্রজন্মের কাছে শহরে নয়া ক্যাফেগুলির ঠান্ডা ঘরের মেজাজ সঙ্গে ফ্রি ওয়াইফাই আর যত ক্ষণ খুশি আড্ডা দেওয়ার দেদার স্বাধীনতা, পুরোনো কফিখানাগুলির তুলনায় অনেক বেশি শ্রেয়। পকেট থেকে একটু বেশি খসলেই বা ক্ষতি কী? কফির স্বাদ আর পরিবেশটাও তো দেখতে হবে বইকি! শুধু কি তাই? নয়া ক্যাফেগুলিতে রয়েছে হরেক রকম থিমের ছোঁয়া। পুজোয় খুব বেশি ভিড়ভাড় পছন্দ না হলে প্রিয়জন কিংবা বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে ক্যাফেতে বসে সময় কাটাতে পারেন। ক্যাফে নিয়ে তরুণ-তরুণীদের মধ্যে চাহিদা অনেক রকম। কারও চাই ইনস্টাগ্রামের জন্য সুন্দর ছবি তোলার জায়গা, কেউ কেউ আবার সস্তায় কোথায় বসে আড্ডা দেওয়া যায়, এমন জায়গার খোঁজ করেন। প্রয়োজন অনুযায়ী বেছে নিতে পারেন শহরের ৫ ক্যাফে। কী কী থাকতে পারে তালিকায়, রইল হদিস।
ভাল ছবির সন্ধানে
শহর কলকাতায় বসে গ্রিসের আমেজ পেতে হলে এক বার ঘুরে আসতেই পারেন এলগিন রোডের রোমানিয়া ক্যাফে থেকে। এই ক্যাফের প্রতিটি কোণ ছবি তোলার জন্য বেশ আকর্ষণীয়। সান্তরিনির নীল গম্বুজে হেলান দিয়ে সূর্যাস্তের আলোয় ছবি তুলতে চাইলে ঢুঁ মারতে হবে এই ক্যাফেতে। পুরনো দিনের মোজ়ায়েক করা মেঝে, বাগানবিলাসের সমাহার, খোলা সুন্দর সাজানো ছাদ, নকশা করা জানলা— ক্যাফের অন্দরসজ্জাকে আরও মনমুগ্ধকর করে তুলেছে। চা, কফি থেকে ককটেল, পাস্তা-পিৎজ়া সব ধরনের খাবারই চেখে দেখতে পারেন এখানে। স্বাস্থ্য সচেতনদের জন্যও রয়েছে ওট্স বোল, স্যালাড বোল। এই ক্যাফের মেনুতে পাবেন প্রাতরাশের একাধিক বিকল্প।
খোলা আকাশের তলায় তুমি আর আমি
প্রিয় মানুষটিকে নিয়ে একান্তে সময় কাটাতে চান? সঙ্গে কলকাতা শহরের দিগন্তরেখা, ভাল কফি এবং রকমারি ফিউশন পদ? আপনার ঠিকানা হতেই পারে বাইপাসের ধারে ‘ক্যাফে অফবিট আপ দেয়ার’। ব্রেকফাস্ট মেনু ও বিভিন্ন ধরনের মকটেলের জন্য তরুণ-তরুণীদের মধ্যে বেশ জনপ্রিয় হয়েছে রুফটপটি। এ ছাড়াও এশিয়ার খাবার থেকে শুরু করে কন্টিনেন্টাল— সব ধরনের পদ রয়েছে এই ক্যাফের মেনুতে। বিরিয়ানি চাইলে তা-ও পাবেন এদের মেনুতে। কেবল খাবারই নয়, এই ক্যাফেতে মিলবে লাইভ মিউজ়িকের ব্যবস্থাও। দু’জনের জন্য খরচ পড়বে ৬০০ টাকা মতো। তাই বিশেষ দিন উদ্যাপনই হোক কিংবা নিছক একটি ‘ডেট নাইট’, ‘ক্যাফে অফবিট আপ দেয়ার’-কে রাখতেই পারেন পছন্দের তালিকায়।
সস্তায় পু্ষ্টিকর
স্কুল, কলেজের পড়ুয়ারা অনেক সময়েই সস্তার ক্যাফের খোঁজ করেন। খাবার ভাল আবার পকেটেও খুব বেশি টান পড়বে না, এমন ক্যাফের সন্ধানে থাকলে ঢুঁ মারতে পারেন সল্টলেকের ডব্লিউটিএফ (ওয়্যার ইজ় দ্য ফুড) ক্যাফেতে। খুব বেশি চাকচিক্য নেই বটে, তবে খাবারের মান দাম অনুযায়ী কিন্তু বেশ ভাল। কালীঘাটের কাছেও এই ক্যাফের একটি শাখা রয়েছে। চিনা খাবার পছন্দ হলে এই ক্যাফেতে পেয়ে যাবেন একাধিক বিকল্প। এ ছাড়া, বিভিন্ন রকমের কবাবও পেয়ে যাবেন এই ঠিকানায়। এদের মেনুতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের কম্বো। মোটামুটি সব খাবারই পেয়ে যাবেন ২০০ টাকার মধ্যেই।
স্বাদের সঙ্গে আপোস নয়
আড্ডার আমেজ নিতে ঘুরে আসতে পারেন যোধপুর পার্কের ‘আবার বৈঠক’ ক্যাফে থেকে। এই ক্যাফের বৈশিষ্টই হল ফেলুদা আর মগনলালের ছোঁয়া। সঙ্গে ঘরোয়া আড্ডার আসর। রেস্তরাঁর অন্দরসজ্জা থেকে নানা খাবারের নামকরণ— সবেতেই ফেলুদার প্রসঙ্গ। মজাদার নামের অসম্ভব সুস্বাদু রেসিপি। মেনুতে রয়েছে নানা ধরনের চা, কফি আর মকটেল। তবে খাবারের ভাগেও কম যায় না এই ক্যাফে। চিকেন প্ল্যাটার, গ্রিলড ফিশ লেমন বাটার সস্, ফিশ অ্যান্ড চিপ্স, চকোলেট মেঘরাজ, অরেঞ্জ মোহিতোর মতো নানা ফিউশন পদ ও পানীয়তে ঠাসা মেনুকার্ড জিভে জল আনবে। ক্যাফেতে বসে কেবল কফি নয়, ভাল খাবারের স্বাদ নিতে এই ঠিকানা থেকে ঘুরে আসতেই পারেন।
বড় পরিসরের খোঁজে
বন্ধুদের সঙ্গে জন্মদিন উদ্যাপন হোক কিংবা বিবাহবার্ষিকী— বড় পরিসরের কোনও ক্যাফের সন্ধান করলে ঘুরে আসতে পারেন গড়িয়াহাটের ক্লাউড সোশ্যাল থেকে। রুফটপ এই ক্যাফেটি যেমন সুন্দর সাজানো, তেমনই খাবারের স্বাদ। বড় পরিসরে পার্টি করার সেরা ঠিকানা এই ক্যাফে। হরেক রকম কবাব, পিৎজ়া, মকটেল, ডেজার্ট— চেখে দেখার মতো রয়েছে একাধিক পদ। সুন্দর পরিবেশ, ভাল খাবার একসঙ্গেই পেতে হলে এই ঠিকানায় ঢুঁ মারতে পারেন।