Breaking Phone Addiction

৬ মিনিটে ফোনের নেশা কাটবে, মনঃসংযোগও বাড়বে! শুধু ‘পুরনো’ একটি অভ্যাস ফেরাতে হবে

সামাজিকতাকে বিসর্জন দিয়ে ডিজিটাল দুনিয়া থেকে সরে আসার কথা বলা হচ্ছে না। তবে এ-ও ঠিক যে, ফোনে আসক্তি বা ডিজিটাল আসক্তি থেকে শরীর এবং মেধার ক্ষতি হচ্ছে।

Advertisement
আনন্দবাজার অনলাইন ডেস্ক
শেষ আপডেট: ০৬ জানুয়ারি ২০২৫ ১৬:৩৭

ছবি : শাটারস্টক।

ফোনে উপর মাথা ঝুঁকিয়ে এবং প্রতীকী অর্থে মাথা ঢুকিয়ে বসে থাকাটা আজকাল আর অভ্যাস নয়, চিকিৎসকদের কথা মতো ‘বদ অভ্যাসে’র পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছে। কিন্তু উপায়ান্তরই বা কোথায়! অচেনা এলাকা চিনতে হোক বা বেড়াতে যাওয়ার টিকিট কাটা, অফিসের প্রজেক্ট সময়ে পাঠানোর দরকারে হোক বা সিনেমা দেখা— সবই তো হয় ফোনেই। এমনকি, অ্যালার্ম দেওয়ার প্রয়োজন হলেও হাত এগিয়ে যায় ফোনের দিকেই। তা হলে ফোন থেকে নজর ঘুরবে কী করে?

Advertisement

সামাজিকতাকে বিসর্জন দিয়ে ডিজিটাল দুনিয়া থেকে সরে আসার কথা বলা হচ্ছে না। তবে এ-ও ঠিক যে, ফোনে আসক্তি বা ডিজিটাল আসক্তি থেকে শরীর এবং মেধার ক্ষতি হচ্ছে। বিভিন্ন গবেষণায় তো বটেই, চিকিৎসকেরাও মোবাইল আসক্তি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। অথচ ডিজিটাল সমাজের রাশ হাতে রেখেও কী ভাবে আসক্তির মুশকিল আসান হবে, তা জানা যায়নি। ব্রুকলিনের এক ‘বেস্টসেলিং’ লেখিকা লিজ় মুডি অবশ্য বলছেন, সমাধান মিলেছে। একটি গবেষণাতেই উঠে এসেছে সেই ‘কার্যকরী’ উপায়। যার সাহায্যে মাত্র ছ’মিনিটেই মুক্তি পাওয়া যাবে মোবাইলের আসক্তি থেকে।

ছবি: শাটারস্টক।

স্বাস্থ্য সংক্রান্ত দু’টি বেস্টসেলিং বইয়ের লেখিকা লিজ়। আবার তাঁর নিজস্ব পডকাস্টের চ্যানেলও আছে। সেই চ্যানেলেই লিজ় বিস্তারিত জানিয়েছেন ওই গবেষণার ব্যাপারে। লিজ় বলেছেন, ‘‘একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে, কেবল ছ’মিনিট বই পড়লেই আমাদের মানসিক চাপ ৬৮ শতাংশ কমে যায়। শুধু তা-ই নয়, গবেষণায় বলা হয়েছে যে, পড়ার অভ্যাস মনকে হালকা করার পাশাপাশি মনঃসংযোগ বৃদ্ধিতেও সাহায্য করে।’’ লিজ়ের মতে, স্মার্ট ফোন আসার আগে বই পড়ার অভ্য়াস ছিল। কিন্তু ইদানীং সেই অভ্যাস অধিকাংশই ভুলতে বসেছেন। গবেষণার কথা মেনে দিনের একটা সময় ফোন থেকে ছ’মিনিটের জন্য চোখ সরালে চাপমুক্তির পাশাপাশি আরও একটা ভাল কাজ হবে। লিজ় বলছেন, ‘‘বই পড়ার অভ্যাস করলে আমাদের ফোনে মগ্ন হয়ে থাকার বদ অভ্যাসেও ছেদ পড়বে। মন একমুখী, বা বলা ভাল ফোনমুখী না হয়ে অন্য পথে চালিত হবে। আর কে বলতে পারে, মানসিক চাপ কমানোর পাশাপাশি পড়ার অভ্যাস হয়তো আমাদের মোবাইল আসক্তিকেও দূর করবে!’’

—ফাইল চিত্র।

লিজ় যে গবেষণার কথা বলছেন, সেই গবেষণা করা হয়েছিল সাসেক্স বিশ্ববিদ্যালয়ে। মাইন্ডল্যাব ইন্টারন্যাশনালের গবেষকেরা কগনিটিভ নিউরোসাইকোলজিস্ট চিকিৎসক ডেভিড লুইয়ের নেতৃত্বে পরীক্ষানিরীক্ষা চালান। পরে সেই গবেষণা বিজ্ঞান বিষয়ক পত্র-পত্রিকার পাশাপাশি বহু আন্তর্জাতিক সংবাদপত্রেও প্রকাশিত হয়। গবেষণাটি প্রসঙ্গে ডেভিড অবশ্য বলেছিলেন, ‘‘বই পড়লে যে আমাদের মন অন্য পথে চালিত হয়, সে ব্যাপারে কোনও সন্দেহই নেই। তবে তার চেয়েও বড় বিষয় হল, সাদা পাতায় ছাপার অক্ষরগুলি আমাদের কল্পনাশক্তির সঙ্গে জুড়ে আমাদের মধ্যে থাকা সৃষ্টিশীলতাকেও জাগিয়ে তুলতে পারে।’’

— ফাইল চিত্র।

লিজ় এবং লুই দু’জনের সঙ্গেই সহমত স্নায়ু চিকিৎসক রবি কুমারও। ছাপার অক্ষরের উপর তাঁরও অগাধ আস্থা। তিনি আবার বলছেন, ‘‘বই পড়ার অভ্যাস মস্তিষ্কের কাজ করার ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। চিন্তাশক্তিও উন্নত করে।’’ কুমারের মতে, রোজ বই পড়ার অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্য এবং মানসিক বিকাশের জন্যও ভাল। সে ক্ষেত্রে কেউ যদি রোজের রুটিনে সামান্য সময়ের জন্যও বই পড়ার অভ্যাস রাখেন, তবে তা তাঁদের মনোরঞ্জনের জন্য মোবাইল নির্ভরতাও কমাবে। চিকিৎসক কুমার জানাচ্ছেন, প্রতি দিন আধ ঘণ্টা থেকে ১ ঘণ্টা পর্যন্ত বই পড়ার অভ্যাস থাকলে তা মেধাশক্তিকে উন্নত করতে সাহায্য করে।

Advertisement
আরও পড়ুন