ছবি: সংগৃহীত।
ইনস্টাগ্রাম খুললে একের পর এক ‘রিল’ চোখের সামনে দিয়ে বয়ে যায়। কোনওটি রূপচর্চার, কোনওটি পোশাকের ট্রেন্ড নিয়ে, কোনওটি আবার ঘরকন্না সংক্রান্ত। এর মধ্যে রান্নাবান্না, চিকিৎসা, কী নেই সেখানে? নেটপ্রভাবীদের দেওয়া ঘরোয়া টোটকা অনেক সময়েই কাজে লেগে যায়। তাই সময় পেলেই সমাজমাধ্যমে ঢুঁ মেরে আসেন। অভ্যাসবশত তা করতে গিয়েই একদিন চোখে পড়ে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের তৈরি তেলের বিজ্ঞাপন। চুলের নানা রকম সমস্যায় অব্যর্থ সেই তেল।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যের বনাঞ্চল থেকে ভেষজ সংগ্রহ করে জনজাতি সম্প্রদায়ের মানুষ সেই তেল তৈরি করছেন। সেই তেল মাথায় মাখার পর তাঁদের চুল হাঁটু ছুঁয়ে গিয়েছে। তাঁরা দাবি করছেন, সেই তেল মাখলে নাকি সকলেরই উপকার হবে। নানা জায়গা থেকে সংগ্রহ করা প্রায় দেড়শো প্রকারের জড়িবুটি নাকি রয়েছে সেই তেলে! বিভিন্ন ক্ষেত্রের পরিচিত মুখেরা সেই তেলের বিজ্ঞাপনও করছেন। কিন্তু, আপনি সেই তেল কিনতে ভয় পাচ্ছেন। সেই তেল মেখে চুল গজানোর বদলে যদি হুড়মুড়িয়ে উঠতে শুরু করে, তা হলে বিপদের শেষ থাকবে না। তার চেয়ে বরং তেমন তেল বাড়িতেই তৈরি করে নিতে পারেন।
এই তেল তৈরি করবেন কী ভাবে?
পরিমাণ মতো জবাফুল, জবাফুলের পাতা, আমলকি, কেশুত, অ্যালো ভেরা, তুলসি, নিম, কারিপাতা, কচি দূর্বা ঘাস রোদে ভাল করে শুকিয়ে নিন। তার পর কড়াইতে নারকেল তেল, কাঠবাদামের তেল এবং অলিভ অয়েল এক সঙ্গে মিশিয়ে গরম করতে দিন। তেল হালকা গরম হতে শুরু করলে রোদে শুকোনো ভেষজগুলি কড়াইয়ের মধ্যে দিয়ে দিন। সঙ্গে মেথি, কালোজিরেও দিতে পারেন। খেয়াল রাখবেন, গ্যাসের আঁচ যেন একেবারে ঢিমে থাকে।
তেল ধীরে ধীরে ফুটতে শুরু করবে। তেলের রংও বদলে যাবে। তেলের মধ্যে যেন জলীয় উপাদান একটুও না থাকে। সেই বুঝে আঁচ বন্ধ করতে হবে। তার পর ওই অবস্থায় রেখে দিতে হবে অন্তত ৮ থেকে ৯ ঘণ্টা। ফুটন্ত তেল স্বাভাবিক তাপমাত্রায় আসবে। পাশাপাশি, তেলের মধ্যে ভেষজের নির্যাসও ভাল ভাবে মিশে যাবে। এ বার তেল থেকে ছেঁকে ভেষজগুলি বার করে ফেলতে হবে। বায়ুরোধী, পরিষ্কার কাচের পাত্রে তেল ঢেলে রেখে দিতে হবে।
শ্যাম্পু করার অন্তত ঘণ্টাখানেক আগে এই তেল মেখে রাখতে পারেন। অনেকেই রাতে তেল মেখে ঘুমোতে যান। সব ধরনের ত্বকের জন্য এই অভ্যাস ভাল নয়। ঠান্ডা লাগার ধাত থাকলে এই তেল বেশি ক্ষণ মাথায় মেখে না রাখাই ভাল।