পাকা চুল তুললে কী ক্ষতি হয়? ছবি: সংগৃহীত।
বয়স যে বাড়ছে, তা প্রথম ধরা পড়ে চুলের ফিকে হওয়া রং দেখে। তবে অনেক সময় নির্দিষ্ট বয়সের আগেই ‘বার্ধক্য’ কড়া নাড়ে। বাস, ট্রেন, মেট্রোয় উঠলে দেখা যায়, বয়স ১৮ হোক কিংবা ৩০, অনেকের মাথায়ই ধূসর চুল উঁকি দিচ্ছে। নানা শারীরিক কারণে সমস্যার সূত্রপাত হলেও ক্রমেই তা দুশ্চিন্তার বিষয় হতে শুরু করে। জীবনযাত্রায় নানা অনিয়ম ছাড়াও এ সমস্যার কারণ কিন্তু অনেকটাই জিনগত।
বাড়ির দিদিমা-ঠাকুরমারা যদি মাথা থেকে পাকা চুল তুলতে দেখেন, তখনই তাঁরা রে রে করে ওঠেন। পাকা চুল তুললে নাকি সে জায়গায় আরও বেশি সাদা চুল গজায়। অনেকের ধারণা, পাকা চুল তোলার ফলে তার গোড়া থেকে যে রস বেরোয়, তার সংস্পর্শে এসে আশপাশের চুলেও পাক ধরে। কতটা বাস্তবসম্মত এই ধারণা? এর আদৌ কি কোনও ভিত্তি আছে?
এ ধারণা কিন্তু একেবারেই ভ্রান্ত। পাকা চুল টেনে তুললে চুলের গোড়া থেকে কোনও রস বেরোয় না। চুল পেকে যাওয়ার পিছনে একাধিক কারণ থাকতে পারে। কিন্তু একটা পাকা চুল টেনে তুললে আরও চুল পেকে যাবে, এমন কোনও প্রমাণ এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি। তার মানে এই নয় যে, পাকা চুল তোলার অভ্যাস স্বাস্থ্যসম্মত। চুলের রং কী হবে, তা নির্ভর করে ফলিকলের মেলানোসাইট কোষ থেকে উৎপাদিত মেলানিনের উপর। বয়সের সঙ্গে সঙ্গে মেলানোসাইটের কার্যকারিতা কমে যায়। মেলানিনের উৎপাদন কমে যায়, চুল সাদা হয়ে যায়। অর্থাৎ সেই ফলিকলের কোনও চুল টানলে সেখানে নতুন কোনও চুল গজালে তার রংও সাদাই হবে। তার সঙ্গে চুল তোলার কোনও সম্পর্ক নেই।
বিষয়টি কাঁচা বা পাকা চুলের নয়। গোড়া থেকে চুল টেনে তোলা অত্যন্ত অস্বাস্থ্যকর। এতে চুলের পুষ্টির ভারসাম্য থাকে না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ, এতে চুলের ফলিকল নষ্ট হয়। শুধু কি তাই? পাকা চুল টেনে তোলার পর এ ছাড়াও নানা সমস্যা দেখা যায়। সর্বশক্তি দিয়ে পাকা চুল তোলার ফলে চাপ পড়ে মাথার তালুতেও। তা থেকে মাথাযন্ত্রণা, মাথা দপদপ করার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। এ ছাড়া পাকা চুল তুলে নেওয়ার পর ওই জায়গায় আবার চুল যে গজাবেই, তার কোনও মানে নেই। ফলে টাক পড়ে যাওয়ার আশঙ্কাও থেকে যেতে পারে। চুলের বৃদ্ধির ধাতও বদলে যেতে পারে।