উল্লাসনগরের শ্রীমতী সিএইচএম কলেজের ছাত্ররা ক্লাসে আসেন ছকভাঙা পোশাক পরে। ছবি: ইনস্টাগ্রাম।
নারী-পুরুষের খাপে বসানো চিন্তাধারার তোয়াক্কা না করে বিশেষ ধরনের পোশাক পরার স্টাইলকে অ্যান্ড্রোজিনাস ফ্যাশন বলে। এই ঘরানায় সাজকে কোনও লিঙ্গের মধ্যে সীমিত রাখতে নারাজ শৌখিন-শৌখিনীরা। এ দেশে অনেকেই এ ধরনের পোশাক পরা নিয়ে তামাশা করেন। কিন্তু কেউ কেউ আবার ছকভাঙা ফ্যাশনধারাকে আপন করে নিয়েছেন। সম্প্রতি মহারাষ্ট্রের একটি কলেজের ছাত্ররা পোশাক বাছাইয়ের ক্ষেত্রে লিঙ্গভেদের ধ্যানধারণা ভাঙার জন্য উদ্যোগী হলেন।
উল্লাসনগরের শ্রীমতী সিএইচএম কলেজের ছাত্ররা ক্লাসে আসেন ছকভাঙা পোশাক পরে। কারও পরনে লেহঙ্গা আর টিশার্ট, কেউ পরেছেন জিনসের উপর শাড়ি। কোনও ছাত্র পরেছেন হাফ প্যান্ট, টিশার্ট আর টাই, কেউ আবার ধুতির সঙ্গে সোয়েট শার্ট। ছাত্রদের এই উদ্যোগ মুহূর্তের মধ্যে ভাইরাল হল সমাজমাধ্যমে। ভিডিয়োতে দেখা গেল, তথাকথিত নারীদের পোশাকে স্বচ্ছন্দে কলেজের গেট দিয়ে ঢুকছেন শয়ে শয়ে ছাত্র। সকলের মুখ-চোখেই আত্মবিশ্বাসের ছাপ স্পষ্ট। অনেকেই দেখা গেল, অবাক দৃষ্টিতে তাঁদের দিকে তাকিয়ে আছেন। কেউ কেউ আবার থাকতে না পেরে হেসেই ফেললেন— সবটা ধরা পড়েছে ক্যামেরায়। সমাজের কাছে এক দৃষ্টান্ত হয়ে রইল ছাত্রদের এই উদ্যোগ। এই ভিডিয়ো ভাইরাল হওয়া মাত্রই নেটাগরিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা যায়। এক জন লিখেছেন, ‘‘দেশবাসীর চিন্তাধারা বদলাচ্ছে দেখে বেশ ভাল লাগছে।’’ কেউ আবার লিখেছেন, ‘‘পাগলামির একটা সীমা থাকে।’’
বলিউডে অমিতাভ বচ্চন থেকে রণবীর সিংহ, সকলেই এই পোশাকধারাকে আপন করে নিয়েছেন। তবে এই তারকাদেরও ছকভাঙা পোশাকের জন্য ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের মুখোমুখি হতে হয়। প্রশ্নটা এখনও একটাই, সমাজের নজরে কবে স্বীকৃতি পাবে এমন পোশাকের ধারা? কবে লোকে কোনও ছেলেকে শাড়ি পরতে দেখে পিছনে ফিরে তাকাবে না? কবে ছেলেমেয়ের মধ্যে পোশাক নিয়ে ভেদাভেদ মুছে যাবে? প্রশ্ন অনেক, উত্তর এখনও অজানা।