গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।
বিয়ের পর প্রথম দুর্গাপুজো। এ বারের শারদোৎসব তাই অন্য বছরগুলির চেয়ে একেবারে আলাদা এবং অন্য রকম কাঞ্চন মল্লিক এবং শ্রীময়ী চট্টরাজ মল্লিকের কাছে। প্রেম-পর্বে উপহারের বিনিময় থাকলেও উৎসবে একসঙ্গে সময় কাটানোর সুযোগ বিশেষ ছিল না। বিয়ে সেই ছাড়পত্র দিয়েছে। তাই এ বারের পুজোয় জনসমক্ষে কাঞ্চনের হাত ধরে ঠাকুর দেখতে বেরোলেও লোকজনের কানাঘুঁষোর ভয় নেই বলে জানালেন শ্রীময়ী। তবে পুজোয় যেমন প্রেম আছে, তেমনই সাজগোজও তো আছে। এ বছর কাঞ্চনকেও সাজানোর দায়িত্ব শ্রীময়ীর কাঁধে। তাই পুজোর সাজের প্রস্তুতি বেশ কিছ দিন আগে থেকেই শুরু করে দিয়েছিলেন শ্রীময়ী। সিরিয়ালের শুটিংয়ের ব্যস্ততা সামলেই কেনাকাটা সেরেছেন। পুজো আসতে বাকি আর দু’সপ্তাহ। মিস্টার এবং মিসেস মল্লিকের পুজোর সাজঘরে উঁকি দিল আনন্দবাজার অনলাইন।
শ্রীময়ীর সাজগোজ
বিয়ের প্রথম বছরের পুজো। তাই পুজোর চারটি দিন শাড়ি পরার পরিকল্পনা রয়েছে শ্রীময়ীর। তা ছাড়া, আলমারি জুড়ে আছে বিয়ে উপলক্ষে পাওয়া উপহারের শাড়ির ভিড়। এত শাড়ি এক জীবনে পরে শেষ করতে পারবেন কি না, সন্দেহ রয়েছে মিসেস মল্লিকের। তবু পুজোর সময়ে একটু শপিং করতে মন চায়। তাই বাকিদের জন্য পুজোর পোশাক কেনার ফাঁকে নিজের জন্যও শাড়ি, পশ্চিমি পোশাক কিনে নিয়েছেন। তা ছাড়া, কিছু সালোয়ার কামিজও কিনেছেন। শাড়ি পরার সময় না থাকলে হঠাৎ পরে বেরিয়ে পড়া যাবে। শ্রীময়ী বলেন, ‘‘এ বার তো অষ্টমীর অঞ্জলি অনেক ভোরে। তাই সকালের দিকে সালোয়ার পরে নেব ভেবেছি। রাতে শাড়ি পরব।’’
শ্রীময়ীর উপহারে কাঞ্চনের পুজোর লুক
কাঞ্চন স্পষ্ট শ্রীময়ীকে জানিয়েছিলেন, যতই বিয়ের পর প্রথম পুজো হোক, তাঁর জন্য যেন কোনও নতুন জামাকাপড় না কেনা হয়। সাম্প্রতিক পরিস্থিতির কথা ভেবেই এ কথা বলেছিলেন কাঞ্চন। তবে শ্রীময়ী কাঞ্চনের কথায় একেবারে পাত্তা দেননি। পুজোর সময়ে মনের মানুষটিকে নিজের মনের মতো করে না সাজালে উৎসবের রং যেন ফিকে হয়ে যায়। তাই শ্রীময়ী কোনও বারণ না শুনে, কাঞ্চনের জন্য একরাশ নতুন পোশাক কিনে এনেছেন। শ্রীময়ী কি কাঞ্চনকে পুজোয় ধুতি-পাঞ্জাবিতে দেখতে চান? শ্রীময়ীর জবাব, ‘‘ধুতি আর পাঞ্জাবি কাঞ্চনের প্রচুর আছে। বিয়ের সময় থেকে জমছে। আমার মা ওকে ধুতি পাঞ্জাবি কিনে দিয়েছেন। তাই আমি আর একই জিনিস কিনিনি।’’ শ্রীময়ী পুজোয় কাঞ্চনকে অন্য সাজে দেখতে চান। তাই মিস্টার মল্লিকের জন্য শ্রীময়ী কিনেছেন জিন্স, শার্ট, টি-শার্ট আর হুডি।
কাঞ্চনের উপহারে শ্রীময়ীর পুজোর লুক
‘‘কাঞ্চন কখনও নিজে থেকে আমার জন্য কিছু কিনে আনে না’’! শ্রীময়ীর গলায় স্পষ্ট অভিমান। এ বছরও তার অন্যথা হয়নি। কাঞ্চন শ্রীময়ীকে নিজের পছন্দ মতো শাড়ি কিনে নিতে বলেছিলেন। শাড়ির বিষয়টিতে একেবারেই অজ্ঞ, সেটা নিজেই স্বীকার করে নিয়েছেন অভিনেতা। তাই শাড়ি কিনতে গিয়ে অপ্রস্তুতে পরতে তিনি চান না। অগত্যা রাগ-অভিমান দূরে সরিয়ে নিজেই শাড়ি কিনে নিয়ে এসছেন শ্রীময়ী। একটি নয়, একেবারে তিন-চারটি কিনে নিয়েছেন। সাদা, কালো আর লাল এই তিন রঙের প্রতি শ্রীময়ীর অসম্ভব টান। তাই এ বছর পুজোর পোশাকে এই রংগুলির ছোঁয়া থাকছে। সিল্ক আর শিফন পরতে বেজায় ভালবাসেন শ্রীময়ী। তার অন্যতম কারণ সামলানোর ঝক্কি কম। তাই এ বছর ডিজিট্যাল প্রিন্টের পিওর সিল্ক কিনেছেন। তা বাদ দিয়েও কাতান, ঘিচা, মটকা সংগ্রহে রেখেছেন শ্রীময়ী।
সিঁদুরখেলার সাজে শ্রীময়ী-কাঞ্চন
দশমীর দিন বন্ধুদের সঙ্গে বাগবাজারের পুজোয় যেতেন বিবাহিত মহিলাদের সিঁদুরখেলা দেখতে। নিজের সিঁদুর খেলা বলতে কপালে একটা ছোট্ট ফোঁটা। ব্যস, ওইটুকুই! তবে এ বার শ্রীময়ীর নিজেরই মাথা ভর্তি সিঁদুর। মাকে বরণ করে সিঁদুর খেলতে পারবেন। তাই দশমীতে সিঁদুর খেলার সাজ প্রথমেই ভেবে রেখেছেন শ্রীময়ী। মায়ের দেওয়া লাল পেড়ে গরদের শাড়ি আর সোনার গয়নায় সেজে সিঁদুর খেলবেন তিনি। শ্রীময়ীর সিঁথি রাঙালেন যিনি, তিনিও কি থাকবেন সঙ্গে? শ্রীময়ী বলেন, ‘‘এ বার একসঙ্গে সিঁদুর খেলব। এর আগে কোনও দিন দশমীতে কাঞ্চনের সঙ্গে দেখা হতো না। একসঙ্গে বেরোলেই চর্চা হবে, এই ভেবে আর যাওয়া হত না। এ বছর সেই আশঙ্কা নেই।’’ শ্রীময়ী সাদা-লালে সাজলে, দশমীতে কাঞ্চনের পরনে সাদা পাঞ্জাবি-পায়জামা থাকবে। আপাতত তেমনটাই ইচ্ছা যুগলের। বাকিটা ক্রমশ প্রকাশ্য।